ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪

জাতীয়

জৈন্তিয়ায় লাল শাপলার বিলের সৌন্দর্য টানছে পর্যটকদের মন।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- জৈন্তিয়ায় লাল শাপলার বিলের সৌন্দর্য টানছে পর্যটকদের মন। বিলের পানির ওপর সবুজের ফাঁকে ফুটে আছে লাল শাপলা। সবকিছু মিলিয়ে প্রকৃতিকে ভিন্ন এক রূপে সাজিয়ে তোলা হয়েছে যেন রং-তুলির আঁচরে। তাই যেন সৌন্দর্যমণ্ডিত সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার লাল শাপলা বিল হিসেবে খ্যাত ডিবির হাওরে পর্যটকদের ভিড় প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বিলের পানিতে ঘুরে বেড়িয়ে মুগ্ধ হচ্ছেন পর্যটকরা। তবে এখানে যে শুধু লাল শাপলা বা প্রকৃতির সবুজ রংয়ের সমারোহই ঘটেছে এমনটাও নয়, এখানে লাল শাপলার মাঝেই দেখা মিলছে বেশ কয়েক জাতের পাখি। চারপাশ তাদের কলরবে মুখর। শীতে এত এত অতিথি পাখি দেখে মুগ্ধ পর্যটকেরা। পান, পানি, নারী—এই তিনে জৈন্তাপুরী। ঐতিহ্য আর সৌন্দর্যের গভীরতা বোঝাতে এই উপকথা প্রচলিত আছে সিলেটের জৈন্তাপুরে। পান-সুপারিতে আতিথেয়তা সিলেটের সংস্কৃতিরই একটি অংশ। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, জৈন্তা রাজ্য শাসন করেছেন খাসিয়া রানি জৈন্তেশ্বরী দেবী। আর স্বচ্ছ জলের সারি নদীর মোহনীয় নীলের কথা কে না জানে। এই তিন উপকথার ফাঁকে নিজের উপস্থিতি জানান দেয় মেঘালয়ের পাহাড়ের কোলে থাকা জৈন্তার লাল শাপলার বিল। বিলে ফুটে থাকা অজস্র লাল শাপলার রূপে মজে থাকার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আর নৌকা দিয়ে বিলের মাঝখানে গেলে তো কথাই নেই। লতাপাতা-গুল্মে ভরা বিলের পানিতে ভেসে থাকা হাজার হাজার লাল শাপলার মাঝে নিজেকে স্বর্গরাজ্যের বাসিন্দা মনে হবে। প্রকৃতির আপন খেয়ালে গড়ে ওঠা সৌন্দর্য বুঝি এমনই হয়। সম্প্রতি ডিবির হাওর ঘুরে দেখা গেছে, লাল শাপলার বিলটিতে অসংখ্য অতিথি পাখি। পাখিগুলোর মধ্যে আছে বালিহাঁস, শামুকখোল, মেটে–মাথা তিতি, সাদা বক, কানি বক, মাছরাঙা, নীলকণ্ঠী, জলময়ূর ও সরালি হাঁস। স্থানীয় লোকজন বলছেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার অতিথি পাখির উপস্থিতি বেশি। সম্প্রতি বিলের বাঁধ উঁচু করা, হাওরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি থাকা, সামাজিক বনায়নের গাছ লাগানো ও উপজেলার অন্যান্য বিলের পানি সেচ দিয়ে মাছ শিকারের ফলে অতিথি পাখিগুলো ডিবির হাওরে আশ্রয় নিচ্ছে। লাল শাপলার বিল হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার আগে কিছু লোক এখানে পাখি শিকার করতেন। তবে পরবর্তী সময়ে পরিবেশকর্মীরা স্থানীয় লোকজনের কাছে বিষয়টি বেআইনি বলে প্রচার চালানোয় মানুষ সচেতন হয়েছেন। এখন আর পাখিশিকারিদের তৎপরতা নেই। বিলটি নিরাপদ হওয়ায় এবার পাখি বেশি এসেছে বলে মত তাদের। ডিবির হাওরে বেড়াতে আসা পর্যটকরা জানান, ডিবির হাওরে বেড়াতে এসে মুগ্ধ তারা। লাল শাপলার বিলে পাখিগুলো দেখে বেশি ভালো লেগেছে তাদের। পাখিগুলো যাতে কেউ শিকার না করেন কিংবা বিরক্ত না করেন, সেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন বলে জানান তারা। জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ গনমাধ্যমকে বলেন, জৈন্তাপুরের লাল শাপলা বিলের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে। পর্যটকদের জন্য ঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে, নতুন আরও একটি পার্কিংয়ের স্থান নির্মাণ হবে, পর্যটকদের যাতায়াতের জন্য এক কিলোমিটার রাস্তা পাকা করার কাজ এ মাসেই শুরু হবে। লাল শাপলার বিলের অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী মেঘালয়ের সবুজ পাহাড়ের পাদদেশ। ডিবি বিল, ইয়াম বিল, হরফকাট বিল, কেন্দ্রী বিলসহ ৯০০ একর এলাকাজুড়েই লাল শাপলার ‘রাজ্য’। পরিবেশকর্মী মো. খায়রুল ইসলাম জানান, লাল শাপলার বিল কেবল সৌন্দর্যের পরিচয়ই বহন করে না, জৈন্তিয়ার ইতিহাসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। সৌন্দর্যের সঙ্গে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সম্মিলন এই চারটি বিলের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। লাল শাপলার বিলে আসা পর্যটকেরা ঐতিহ্যের সঙ্গেও পরিচিত হতে পারছেন। সিলেটের জৈন্তাপুর হয়ে জাফলং ঘুরতে যাওয়ার সময় পর্যটকেরা লাল শাপলার বিলে ঘুরে যান। অনেকে কেবল বিলের সৌন্দর্য দেখতে আসেন। পুরো দিনটা কাটিয়ে দেন এখানেই। ভোরবেলা দূর থেকে দেখলে মনে হবে প্রকৃতি লালগালিচা বিছিয়ে পর্যটকদের বরণ করতে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। এ ডাক উপেক্ষা করা সাধ্য কার! প্রতিবছর অসংখ্য পরিযায়ী পাখি আসে এই হাওরে। তার মধ্যে বালিহাঁস, পাতি সরালি, পানকৌড়ি, নীলকণ্ঠী, সাদা বক, জল ময়ূরসহ অসংখ্য প্রজাতির পাখি দেখা যায়। তখন নতুন রুপ দেখা যায় শাপলার বিলের।

জাতীয়

সিলেট-ঢাকা করিডোর সড়কের ব্যয় ৬৬৮ কোটি টাকা।

বিলেতেৱ আয়না ডেক্স :- সিলেট-ঢাকা করিডোর সড়কের ব্যয় ৬৬৮ কোটি টাকা। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়নে ব্যয় হবে ৬৬৮ কোটি ৩৮লাখ ৪৯ হাজার ৭৭৮ টাকা। সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পের প্যাকেজ-০৬ এর লট-১২বি এর কাজ যৌথভাবে জিনজাল সিটি হাইওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন এবং ম্যাক্স ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেডকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গত বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ ব্যয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আজকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার ৮ প্রস্তাব ছিল। এরমধ্যে ক্রয়ের ছিল ৭টি। যার মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি প্রস্তাব ছিল, সেটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, জিওবি ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পের প্যাকেজ-০৬ এর লট -১২বি এর ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। যৌথভাবে কাজটি পেয়েছে জিনজাল সিটি হাইওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন এবং ম্যাক্স ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেড। এতে মোট খরচ হবে ৬৬৮ কোটি ৩৮ লাখ ৪৯ হাজার ৭৭৮ টাকা। এছাড়া নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দুইটি প্রস্তাব থাকার কথা উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, সেগুলো বহ্মপুত্র নদের ড্রেজিং এর কাজ বিষয়ক প্রকল্প। এটি রুটিন কাজ। প্রস্তাবে সব কিছু ঠিক ছিল বলে আমরা অনুমোদন দিয়েছি। তাছাড়া গ্যাস কেনা নিয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রস্তাব ছিল। সেগুলো আমরা অনুমোদন দিয়েছি। জ্বালানির আর একটি ছিল, সেটি হচ্ছে শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্রের জন্য ওয়েলহেড কম্প্রেসর সংগ্রহ ও স্থাপন (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পে ওয়েলহেড কম্প্রেসর স্থাপনের ঠিকাদার নিয়োগের প্রস্তাব। জ্বালানি কেনার ক্ষেত্রে স্পট মার্কেট বেছে নেয়ার বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা যেখানে দাম কম পাবো সেখান থেকেই নেবো। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহমুদ খান সাংবাদিকদের জানান, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৩য় বৈঠক আজকে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে মোট ৭টি প্রস্তাব উপস্থাপিত হয়। এরমধ্যে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের একটি, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দুইটি এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ৪টি প্রস্তাব ছিল। সব কয়টি প্রস্তাবেরই অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

Scroll to Top