ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৪

জাতীয়

বাঁশের ভিতরে ভরা বিন্নি ধানের চাল,বরাকের অতুলনীয় স্বাদের এই পিঠা — আশিস রঞ্জন নাথ

বিলেতের আয়না ডেক্স :- বাঁশের ভিতরে ভরা বিন্নি ধানের চাল,বরাকের অতুলনীয় স্বাদের এই পিঠা — আশিস রঞ্জন নাথ পিঠা নিয়ে ছড়া লিখেছিলেন সৈয়দ মুজতবা আলী। তুলে ধরেছিলেন সিলেট তথা বরাক উপত্যকার মানুষের অতি প্রিয় চুঙা পিঠার কথা। লেখাটি ছিল এমন— চুঙা পিঠা,আহা চাচা বলবো তোমায় কি যখন ভাবি, ইচ্ছা হয় যে রেজিগনেশন দি। ধরে সোজা পয়লা গাড়ী দেওর-আইলে দি ছুট চাকরী বাঁধন রাজার শাসন সব কিছু ঝুটমুট। শুধু মুজতবা আলীই নন, বিচিত্র এই চুঙা পিঠার অতুলনীয় স্বাদে বহুকাল ধরে মজে আছেন অসমের বরাক উপত্যকার মানুষজন। এই পিঠা শুধু তাঁদের প্রিয় খাবারই নয়, নিজস্ব সংস্কৃতির অন্যতম প্রতীক। ব্রিটিশ জমানায় সাহেবরাও বাঙালির সংস্পর্শে চুঙা পিঠায় মজেছিল। চুঙা পিঠার স্বাদ গন্ধ মুগ্ধ করেছিল তাদের। ব্রিটিশরা এই পিঠার নাম দিয়েছিল ‘Bamboo Cake’। বরাক উপত্যকার ডিমাসা,মণিপুরি, কার্বি, কুকি, মার,নাগা, খাসি টিপরা, রিয়াং-সহ অন্যান্য উপজাতিদেরও প্রিয় খাবার এই পিঠা। আবার ভিয়েতনাম থেকে উত্তর-পূর্ব ভারত পর্যন্ত বাঁশের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। বাঙালির মতোই সে সব দেশের মানুষেরও প্রধান খাদ্য ভাত। সে সুবাদে চুঙা পিঠারও প্রচলন রয়েছে। কোনও পিঠার সঙ্গে Bamboo কিংবা চুঙা শব্দটা যখন জুড়ে যায়, তাতেই স্পষ্ট, এটিকে বাঁশের ভিতরেই তৈরি করতে হয়। বাঙালির পিঠেপুলির বিচিত্র ভাণ্ডারে অন্যদের থেকে যা একেবারেই স্বতন্ত্র। প্রথমে সরু ডলু জাতীয় বাঁশের (Bamboo) এক দিক বন্ধ থাকা পর্ব (স্থানীয় ভাষা ‘পাব’ বলা হয়) কেটে টুকরো করা হয়। তার ভিতরে বিশেষ কৌশলে কলাপাতা বা কুশিয়ারের পাতা ঢুকানো হয়। যাতে পাতা চুঙার ভিতরের দেয়ালে আস্তরণের সৃষ্টি করে। এরপর বিরুণ বা বিন্নি চাল ধুয়ে চুঙায় ভরে দেওয়া হয়। তাতে জল দিয়ে ভর্তি করা হয় যাতে পোড়ানোর সময় চুঙার ভিতরের চাল সেদ্ধ হতে সুবিধা হয়। পোড়ানোর আগে চুঙার মুখ মাপ মতো খড়ের ছোট আঁটি দিয়ে ঠেসে বন্ধ করে দেওয়া হয়। চুঙা পিঠা তৈরি করা বেশ জটিল। চাল ও জল মাপ মতো না হলে ঠিক ভাবে তৈরি করা সম্ভব হয় না। এই পিঠা পোড়ার দৃশ্যও বেশ উপভোগ্য। বিন্নি বা বিরুণ চালের পিঠে বা চুঙা পিঠা বেশ আঠালো হয়৷ আর এটাই এই চালের বিশেষত্ব। ভাতের চেয়ে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র তার স্বাদ। কোনও কোনও বিন্নি চালে সুগন্ধ থাকে। এই চালের ধানকে স্থানীয় ভাষায় ‘গন্ধি বিরুণ’ বলা হয়। চুঙা পিঠার প্রধান উপকরণ বিন্নি বা বিরুণ ধান। এই ধানকে স্থানীয় ভাষায় ‘বিরইন ধান’ বলা হয়।এই ধানেরও হরেক জাত রয়েছে। যেমন পানি বিরইন,হাবি বিরইন,উবা বিরইন,গন্ধি বিরইন,আউশ বিরইন,পঙ্কজ বিরইন,আসরা বিরইন,পুটি বিরইন,খাগড়া বিরইন,লাকি বিরইন,খইয়া বিরইন,কারতিকা বিরইন ইত্যাদি। এই সব ধানের অধিকাংশই মূলত স্থানীয় জাতের। বাহারুল ইসলাম চৌধুরী নামে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (শিলচর) এক গবেষক বরাক উপত্যকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অন্তত ২২ রকমের বিন্নি ধানের নাম ও নমুনা সংগ্রহ করেছেন বেশ কয়েক বছর আগে। সবই ছিল স্থানীয় জাতের। এর মধ্যে পঙ্কজ বিরইন সম্ভবত কৃষি বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উদ্ভাবিত অধিক ফলনশীল জাত। তবে পরেশ নামে উন্নত ও অধিক ফলনশীল বিরইন ধান উদ্ভাবন করেছেন করিমগঞ্জ আকবরপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের কৃষি বিজ্ঞানীরা। সময়ের তাগিদে উৎপাদন বৃদ্ধির স্বার্থে অধিক ফলনশীল ধানের রমরমা চলছে। ক্ষেতের মাঠের দিকে তাকালে দেখা যাবে কম উৎপাদনশীল জাতের ধান আর নেই। ফলে নানা জাতের স্থানীয় ধান প্রায় দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠেছে৷ বাঙালির পিঠের জগতে যা বিরাট ভাবে ধাক্কা দিচ্ছে। তবে কম পরিমাণের জমিতে হলেও বিন্নি বা বিরইন ধান আজও দেখা যাচ্ছে৷ তা কেবল পিঠেপুলি ও চুঙা পিঠার জন্যই। এই ধানের সঙ্গে কৃষকদের মধুর সম্পর্ক জড়িত৷ পল্লীগীতিতেও বিন্নি ধান তার নিজস্ব স্থান অম্লান করে আছে। যেমন— ‘আমার বাড়ি যাইও মাঝি বইতে দিমু পিড়া, খাইতে দিমু তোমায় আমি বিন্নি ধানের চিড়া।’ এমন আন্তরিকতায় ভরপুর পল্লীগীতিতে মাঝি একান্ত আপনজন হয়ে ওঠেন। আদরযত্নে তাঁকে বিন্নি ধানের চিড়া (চিড়ে) দিয়ে আপ্যায়ন করার আমন্ত্রণ জানানো হয়। আর এই বিন্নি ধান জড়িয়ে রয়েছে বরাকের চুঙা পিঠার অতুলনীয় স্বাদে। পিঠেপুলির জগতে আজকের দিনে অধিকাংশ বাঙালির দৌড় পাটিসাপটা কিংবা চিতই পিঠা পর্যন্ত। হারিয়ে যেতে বসেছে পুলি পিঠা,কুলি পিঠা, মেড়া পিঠা, ঘিলা পিঠা তেতইপিঠা,নৌকাপিঠা, লাঙ্গলপিঠা খুদপিঠা, তালের পিঠা, তিলের পিঠা,নারকেল পিঠা, আপানি পিঠা, হান্দেশপিঠা, বকুলপিঠা, বকপিঠার মতো পিঠেপুলির কত বিচিত্র স্বাদ। তবে আজও বরাক উপত্যকায় চুঙা পিঠার বিশেষ সমাদর রয়েছে। আর শীতের মরসুমের সঙ্গেই নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে এই পিঠার। ঠিক কবে থেকে বরাক উপত্যকার সব সম্প্রদায়ের মানুষ চুঙা পিঠায় মজেছেন, তা বলা কঠিন। তবে এ খাদ্য বাঙালি যে উপজাতিদের থেকে ধার নিয়েছে— সেটা সত্যি। বাঙালির ব্রত উপাচারেও চুঙা পিঠার ব্যবহার রয়েছে। বরাক উপত্যকার প্রচলিত ‘বাঘাই বর্ত্ত (পুরুষালি ব্রত), ‘ডাইনির হাওভাত’ (মেয়েলি ব্রত) এবং পৌষ মাসে মুসলিমদের এক বিশেষ শিরণিতে চুঙা পিঠা ব্যবহারের রীতি রয়েছে।

জাতীয়

পিঠা যাবে কুটুম পাড়া, ভোরের আগে ভীষণ তাড়া”

বিলেতের আয়না ডেক্স :- ‘পিঠা যাবে কুটুম পাড়া, ভোরের আগে ভীষণ তাড়া” প্রচলিত কবিতার পঙক্তি ‘পিঠা যাবে কুটুম পাড়া, ভোরের আগে ভীষণ তাড়া’ বাঙালি জীবনের এক অপরিহার্য সংস্কৃতির সঙ্গে যথার্থভাবেই পরিচয় করিয়ে দেয়। আবহমান গ্রাম-বাংলায় আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে পিঠা-পুলি পাঠানোর রীতি দীর্ঘদিনের। এখনও শীত এলে ঘরে ঘরে পিঠা বানানোর ধুম পড়ে। তবে গতিময় জীবনে তা শহরে অনেক সময়ই হয়ে ওঠে না। সময়ের পরিবর্তনে ‘কুটুম পাড়ায়’ পাঠানোর সেই শীতকালীন নানান পিঠা এখন বিক্রি হচ্ছে অনলাইন প্লাটফর্মে। অঞ্চলভেদে বাংলাদেশে কত শত রকমের পিঠা যে বানানো হয়, তার শেষ নেই। বেশিরভাগ পিঠাই বানানো হয় শীতকালে। এর মধ্যে চিতই, পাকোয়ান, পক্কন, পাটিসাপটা, কুশলি, ভাপা, কাটা, নকশি, পুলি, দুধ পিঠা, ছিট পিঠা, লবঙ্গ পিঠা, গোকুল পিঠা, গড়গড়া, ম্যারা, মুঠা, পুতুল পিঠা, চাঁছি, ঝুড়িসীতা, তারাজোড়া, জামাই পিঠা, জামদানি পিঠা, হাদি পিঠা, পাটা পিঠা, তেলেভাজা পিঠা প্রভৃতি বেশ জনপ্রিয়। যদিও নাগরিক ব্যস্ততায় কিংবা পিঠা বানানোর সঠিক উপকরণ না জানায় বেশিরভাগ চাইলেও শীতের বাহারি রকম পিঠা খাওয়া হয়ে ওঠে না রাজধানীবাসীর। নগরবাসীকে পিঠার স্বাদ দিতে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। ‘মম’স ফুড হাউস’, ‘অনলাইন পিঠা বাড়ি বিডি’, ‘পিঠা ঘর’, ‘নওয়াবি পিঠা’, ‘আইডিয়া পিঠা পার্ক’, ‘গ্রামীণ পিঠা ঘর’, ‘গ্রাম বাংলার নকশি পিঠা’, ‘শর্মিলার পিঠা বাড়ি’ ইত্যাদি নামের বিভিন্ন ধরনের ফেসবুক পেজ থেকে বিক্রি হচ্ছে শীতকালীন পিঠা।

জাতীয়

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী । গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় তিনি টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির জনকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শ্রদ্ধা জনান ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু এমপি ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী এমপি। পরে চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী এমপি, হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, মোঃ নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি ও মাশরাফি বিন মোর্তজা এমপি পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির জনকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীসহ ডেপুটি স্পিকার, সংসদ উপনেতা, চিফ হুইপ, হুইপগন ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। পরে তারা বঙ্গবন্ধু ভবনের বিশ্রাম কক্ষে রক্ষিত পরিদর্শন বইতে প্রত্তেকে মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করেন। এসময় স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, সংসদ উপনেতা, চিফ হুইপ ও হুইপগনের সফরসঙ্গী ছাড়াও গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম, পুলিশ সুপার আল বেলী আফিফাসহ গোপাগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ ও টুুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

হজ্জের কৌটা পূর্ণ হয়নি ৪৭হাজার ৩৫০জন ফাঁকা রয়েছে।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- হজ্জের কৌটা পূর্ণ হয়নি ৪৭হাজার ৩৫০জন ফাঁকা রয়েছে। চলতি মৌসুমে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ নিবন্ধনের সময় শেষ হয়েছে। নিবন্ধনের জন্য চতুর্থবারের মতো দেয়া সময় শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার রাত ৮টায়। এ পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় প্রাক নিবন্ধন করেছে ৭৯ হাজার ৮৪৮ জন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন করেছে ৪ হাজার ১৬৫ জন। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন করেছে ৭৫ হাজার ৬৮৩ জন। চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। সৌদি আরবের দেয়া কোটা অনুযায়ী আসন ফাঁকা রয়েছে ৪৭ হাজার ৩৫০ জনের। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, হজের নিবন্ধনের সময় আর বাড়ছে না। যারা নিবন্ধন করেছে তাদের নিয়ে কার্যক্রম শুরু করা হবে। গত বছরের ১৫ই নভেম্বর থেকে এবারের হজ নিবন্ধন শুরু হয় এবং সময়সীমা ছিল গত ১০ই ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে হজ নিবন্ধনের সময় ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় ১৮ই জানুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় বাড়ায় ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। কিন্তু এতে নির্ধারিত আসন পূরণ হয়নি। পরে আবার ২৫ জানুয়ারি থেকে ১লা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ দিন বিশেষ সময় বাড়ানো হয়। এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার দুটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন প্যাকেজের মূল্য ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা। আর বিশেষ প্যাকেজের মূল্য ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। অপরদিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি প্যাকেজের মূল্য যথাক্রমে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা এবং ৮ লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আগ্রহী হজযাত্রীরা শুরুতে দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন এবং প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করে চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে পারবেন। তবে প্রাথমিক নিবন্ধন করার পর ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আবশ্যিকভাবে প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমার মাধ্যমে চূড়ান্ত নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হবে।

জাতীয়

যশোর সীমান্তে গুলিতে বিজিবি সদস্যের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেছে বিএসএফ।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- যশোর সীমান্তে গুলিতে বিজিবি সদস্যের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেছে বিএসএফ। যশোর সীমান্তে গুলিতে বিজিবি সদস্য নিহতের ঘটনায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেহেলী সাবরীন বলেন, গত ২৪ জানুয়ারি সীমান্তে বিজিবির সিপাহি রইস উদ্দিনের নিহত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারতীয় বিএসএফ। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে এক যোগে কাজ করবে বিজিবি-বিএসএফ। গত ২২ জানুয়ারি ভোরে চোরাকারবারি ধাওয়া করতে গিয়ে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আহত হন রইস উদ্দিন। পরে তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ২৪ জানুয়ারি তার মরদেহ ফেরত দেয় বিএসএফ। ব্রিফিংয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে সেহেলী সাবরীন বলেন, ঢাকায় পুলিশ হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। পলাতক আরাভ খানের প্রত্যাবাসন সম্পর্কিত অগ্রগতি কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি আছে এবং প্রত্যাবাসনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। মুখপাত্র আরও বলেন, তাকে আনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে কোনো তথ্য এলে আমরা জানাতে পারব। আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত তথ্য আছে, রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে এবং প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া চলমান আছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সেহেলী সাবরীন জানান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের আসন্ন ভারত সফরে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। যার মধ্যে থাকবে, দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ, কানেকটিভিটি, আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানো, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার উপায় ইত্যাদি। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় থাকবে। তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে বলে আমরা আশা করছি। তিস্তা নিয়ে চীনের প্রকল্পের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে কি না, তা এখন বলা যাচ্ছে না। কারণ এজেন্ডাগুলো নিয়ে এখনো কাজ হচ্ছে। যদি ভারত এ বিষয়ে আমাদের কাছে কিছু জানতে চায়, তখন আমরা বিষয়টি ভেবে দেখব। বাংলাদেশ কি বিনা ফিতে ভারতকে বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছে কি না, জানতে চাইলে সেহেলী সাবরীন বলেন, ভারত যাতে চট্টগ্রাম ও মোংলাবন্দর ব্যবহার করতে পারে, সে জন্য ২০১৮ সালে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তিতে সই করে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল একটি স্থায়ী আদেশ জারি করে, যার ফলে ভারত এখন থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলাবন্দর ব্যবহার করতে পারবে। এ ধরনের চুক্তির ক্ষেত্রে সাধারণত যেসব শর্ত প্রয়োজ্য হয়, সেসব বিষয় বিবেচনা করেই এ চুক্তি করা হয়েছে। সেহেলী সাবরীন বলেন, রাখাইনের সংঘাত মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে এ সংঘাতে বাংলাদেশ বা আমাদের নাগরিকরা যেন কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, তা বিশেষভাবে নজর রাখা হচ্ছে। নতুন কোনো অনুপ্রবেশ যেন না ঘটে সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।

জাতীয়

রাষ্ট্রপতির নিকট সাত দেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- রাষ্ট্রপতির নিকট সাত দেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ। বাংলাদেশে নিযুক্ত সাতটি দেশের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূতগণ আজ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নিকট নিজ নিজ পরিচয়পত্র পেশ করেন। নতুন অনাবাসিক রাষ্ট্রদূতরা হলেন : মঙ্গোলিয়ার গ্যানবোল্ড দাম্বাজাভ, উত্তর মেসিডোনিয়ার স্লোবোডান উজুনভ, পেরুর হ্যাভিয়ের ম্যানুয়েল পাউলিনিচ ভেলার্দ, স্লোভাক প্রজাতন্ত্রের রবার্ট ম্যাক্সিয়ান, স্লোভেনিয়ার মাতেজা ভোদেব ঘোষ, উরুগুয়ের আলবার্তো এ গুয়ানি এবং ভেনেজুয়েলার ক্যাপায়া রড্রিগুয়েজ গঞ্জালেজ। পরে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। নতুন রাষ্ট্রদূতদের স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এগিয়ে নিতে কাজ করার আহ্বান জানান। রাষ্ট্রপ্রধান তাদেরকে জানান, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশে বিনিয়োগের উজ্জ্বল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি অবকাঠামো, জ্বালানি ও তথ্য-প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কাজ করতে নতুন রাষ্ট্রদূতদের আহ্বান জানান। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক, ওষুধ, সিরামিকসহ বিশ্বমানের নানা পণ্য উৎপাদন করে থাকে। বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্যের আমদানি বাড়াতে রাষ্ট্রদূতদের কাজ করতে বলেন তিনি । সাক্ষাৎকালে নতুন রাষ্ট্রদূতগণ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা বাংলাদেশের সাথে নিজ নিজ দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে কাজ করারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রদূতগণ দায়িত্ব পালনকালে রাষ্ট্রপতির সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব সংযুক্ত মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এরআগে সকালে রাষ্ট্রদূতগণ বঙ্গভবনে পৌঁছালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর) এর অশ্বারোহী একটি চৌকস দল তাদের ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে।বাসস

জাতীয়

আবার রিজার্ভ ২০ বিলিয়নের নিচে নামলো।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- আবার রিজার্ভ ২০ বিলিয়নের নিচে নামলো। আবারও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছে। সর্বশেষ রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার (বিপিএম৬) বা এক হাজার ৯৯৪ কোটি ২৬ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার । একই সময়ে মোট রিজার্ভ বা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ৯ লাখ ১১ হাজার ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের সাপ্তাহিক নির্বাচিত অর্থনৈতিক সূচকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ডিসেম্বরের শুরুর দিকে রিজার্ভ ১৯ বিলিয়নে নামে। এরপর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি ও দক্ষিণ কোরিয়ার ঋণের ডলার যোগ হলে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। এরপর এশীয় ক্লিয়ারিং উইনিয়ন-আকুর বিল ও অন্যান্য আমদানি দায় পরিশোধ করলে রিজার্ভ কমতে থাকে। সর্বশেষ রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এলো। ২০২১ সালের আগস্টে বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়নের ঘর ছাড়িয়েছিল। এরপর রিজার্ভ থেকে ২৯ বিলিয়ন ডলারের মতো বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিক্রির ফলে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। ডলারের সংকটের কারণে বাড়তি চাপ তৈরি হয় রিজার্ভে। ২০২১ সাল নাগাদ আমদানির জন্য প্রতি ডলার ৮৫-৮৬ টাকায় পাওয়া যেত। এখন প্রতি ডলারের জন্য ১২২-১২৩ টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। এরপরও কাঙ্ক্ষিত ডলার না পেয়ে অনেকে এলসি খুলতে পারছেন না।

আন্তর্জাতিক, জাতীয়

ব্রিকসে নতন ভাবে সদস্য হলো ১০টি দেশ।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- ব্রিকসে নতন ভাবে সদস্য হলো ১০টি দেশ। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে নালেদি পান্দর বলেন, ‘ব্রিকসের সভাপতির পদ আমরা (দক্ষিণ আফ্রিকা) রাশিয়ার কাছে হস্তান্তর করেছি। তার আগে আর্জেন্টিনা, সৌদি আরব, ইরান, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইথিওপিয়া—এই ছয় দেশের পূর্ণ সদস্য হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ব্রিকসে যুক্ত হচ্ছে নতুন ছয় দেশ, নেই বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকার এই মন্ত্রী আরও জানান, ব্রিকসের পূর্ণ সদস্য হওয়ার আবেদনপ্রক্রিয়া এগিয়ে না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জ্যাভিয়ার মিলেই গত শুক্রবার জানান, তাঁর দেশ ব্রিকসের সদস্য হবে না। মূলত পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করার জন্য পররাষ্ট্রনীতিতে বাঁকবদল ঘটানোর প্রতিশ্রুতি পূরণে আর্জেন্টিনা ব্রিকসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা কমাতে চাইছে।

জাতীয়

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ৫০ বছর লাগলেও সময় দিতে হবে– আইনমন্ত্রী।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ৫০ বছর লাগলেও সময় দিতে হবে– আইনমন্ত্রী। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাংবাদিক দম্পতি মেহেরুন রুনি ও সাগর সারোয়ার সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত ১২ বছর পরও কেন শেষ হয়নি–এই প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, প্রকৃত দোষী চিহ্নিত করতে তদন্তে সময় লাগতে পারে। এজন্য যতদিন সময় লাগবে, দিতে হবে। পুলিশকে জোর করে তদন্ত শেষ করিয়ে চার্জশিট দেওয়ানো ঠিক হবে না। সময় দিতে হবে, ৫০ বছর লাগলেও দিতে হবে। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয় নিজ দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। উল্লেখ্য, গত ২৩ জানুয়ারি এই হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ ১০৫ বারের মতো পিছিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেছেন আদালত। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয়। এরপর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার এক উপ-পরিদর্শক (এসআই)। চারদিন পর চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয় ডিবি। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে একই বছরের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকে একের পর এক তারিখ বাড়ানো হলেও তদন্ত শেষ করতে পারেনি সংস্থাটি।

জাতীয়

ঐতিহ্যবাহী একুশে বইমেলার উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাহিত্যও স্মার্ট হবে।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- ঐতিহ্যবাহী একুশে বইমেলার উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাহিত্যও স্মার্ট হবে। ভাষা-সাহিত্যকে স্মার্ট করতে প্রকাশকদের ডিজিটালি বই প্রকাশের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এবার সরকারের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ। তাই ভাষা, সাহিত্যসহ সবকিছুকে স্মার্ট করতে হবে। এখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। এর পরও বই প্রকাশ হবে। তা কখনো বন্ধ করা যাবে না। বই পড়ার আলাদা আনন্দ আছে। তবে এখনকার শিক্ষার্থীরা ট্যাবে ও ল্যাপটপে বই পড়ে। আমরা  সেভাবে আনন্দ পাই না। ভাষার সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা উচিত। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এখন প্রকাশকদের শুধু কাগুজে প্রকাশক হলে চলবে না, ডিজিটাল প্রকাশক হতে হবে। তাহলে আমরা বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারব। বিদেশেও পৌঁছাতে পারব। লেখার পাশাপাশি অডিও থাকবে, এমনটাই করা উচিত। অনুবাদ করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষা ও সাহিত্য আছে- অনুবাদ না করলে আমরা কীভাবে জানব? পাশাপাশি আমাদের বইগুলোও বাংলা থেকে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করতে হবে। তাই প্রকাশকদের বলব, এখন থেকে বই ডিজিটালি প্রকাশ করতে হবে। এতে শুধু দেশ নয়, বিদেশেও আমাদের ভাষার বই পৌঁছাতে পারব। অন্য ভাষাভাষীর লোকজনও আমাদের বই পড়তে পারবে। কাজেই সেদিকেও একটু নজর দিলে মানসিকতার পরিবর্তন হয়ে আধুনিক প্রযুক্তিটাও নিজেরা রপ্ত করতে পারব। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীতে সব থেকে মধুর ভাষা বাংলা। এত চমৎকার ভাষা কোথাও আছে কিনা জানি না। হয়ত এটি আমাদের মাতৃভাষা বলে এমনটা মনে হয়। তিনি বলেন, সবারই পড়ার অভ্যাস থাকা উচিত। ছোটবেলা থেকে বাবা-মা যদি শেখান সেটি ভালো হয়। অনেকে ঘুমের জন্য ওষুধ খান, প্রয়োজন নেই। বই পড়লেই ঘুম চলে আসে। বেশি মজাদার বই পড়লে ঘুম আসবে না আবার। এ জন্য আবার বই বাছাই করতে হবে। বইমেলায় প্রাণ ফিরে পাওয়ার স্মৃতি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এখানে এলে ভালো লাগে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আসার মজা নেই। ডানে ঘুরলে নিরাপত্তা, বামে ঘুরলে নিরাপত্তা। এ নিরাপত্তার বেড়াজালে স্বাধীনতাই হারিয়ে গেছে। এখানে স্কুল জীবন থেকে আসতাম। সে মজা এখন নিরাপত্তার কারণে পাই না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রক্তের বিনিময়ে যে ভাষার অধিকার আদায় করেছি, তা এখন আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হচ্ছে। ’৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর যখন প্যারিসে বাংলা ভাষার স্বীকৃতি পেলাম তখন সেখানে মাতৃভাষার ইনস্টিটিউট করে দিতে চাইলাম। কাজও শুরু করি। কিন্তু ২০০১ সালে সরকারে এসে খালেদা জিয়া সেই কাজ বন্ধ করে দেয়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট দিয়ে কী হবে ভেবে বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। এজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই! কারণ, দ্বিতীয়বার আমরা সরকারে এসে এটির প্রতিষ্ঠা এবং উদ্বোধন করি। এখন সেখানে সারাবিশ্বের বিভিন্ন মাতৃভাষার গবেষণা ও চর্চা হচ্ছে।’ বাংলা একাডেমি অনেক আন্দোলনের সূতিকাগার মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে স্বাধীনতা এসেছে। জাতির পিতা ভাষা আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অনুসরণ করে জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাবার পথ অনুসরণ করে এ পর্যন্ত জাতিসংঘে যত ভাষণ দিয়েছি। অন্তত ১৯-২০ বার হবে। আমি কিন্তু বাংলা ভাষায় বক্তব্য দিয়েছি।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, লাইব্রেরিগুলোতেও সঙ্গে সঙ্গে অডিও ভার্সন থাকবে, অডিও ভার্সনের কিন্তু প্রয়োজন আছে। সেটা থাকলে অনেকের সুবিধা- শুনবে, জানতে পারবে, সে ব্যবস্থাটাও আমাদের নেওয়া উচিত। এটাই সব  থেকে দরকার। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে আমরা এগিয়ে যাব। শেখ হাসিনা বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস আমাদের ভাষা আন্দোলনের মাস। এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালির সত্তা জাগ্রত হয়। এই পথ বেয়েই আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। আমারা বাঙালি, বাংলা ভাষায় কথা বলি, মায়ের ভাষায় কথা বলি। এই অধিকারটাও আমাদের রক্ত দিয়ে অর্জন করতে হয়েছে! প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল ৪টা ২৭ মিনিটে বইমেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন। মেলা উদ্বোধনের আগে ১৬ বিশিষ্টজনের হাতে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার তুলে দেন। সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১১টি ক্যাটাগরিতে ১৬ বিশিষ্টজনকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এরপর বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগৃহীত রচনা: দ্বিতীয় খ-’ এবং ‘প্রাণের মেলায় শেখ হাসিনা’ (বাংলা একাডেমিতে শেখ হাসিনার গত ২০ বারের ভাষণের সংকলন) শীর্ষক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি। উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী মেলায় বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। বাংলা একাডেমি ও  সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে মাসব্যাপী চলবে দেশের বৃহত্তম এই বইমেলা। মাসব্যাপী এই বইমেলায় এবার ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০টি প্রতিষ্ঠান ১৭৩টি ইউনিট এবং  সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠান ৭৬৪টি ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। কয়েক বছর ধরে  মেলার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছিল বিভিন্ন ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান। এবার বাংলা একাডেমি নিজেই বইমেলার সার্বিক আয়োজনের দায়িত্বে থাকছে।

Scroll to Top