জানুয়ারি ২৫, ২০২৪

জাতীয়

হজ নিবন্ধনের সময় আবারও বাড়ানো হয়ছে।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- হজ নিবন্ধনের সময় আবারও বাড়ানো হয়ছে। ২৫ জানুয়ারি থেকে নতুন করে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তি, হজ এজেন্সি, হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় থেকে হজ চুক্তির পূর্বেই হজযাত্রীর চূড়ান্ত সংখ্যা জানানোর বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও হজযাত্রী এবং হজ এজেন্সির বিশেষ অনুরোধে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আগামী ২৫ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো। এ সময়ের মধ্যে দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন অথবা প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করে চূড়ান্ত নিবন্ধন করা যাবে। প্রাথমিক নিবন্ধন করা হলে প্যাকেজের অবশিষ্ট মূল্য ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখের মধ্যে আবশ্যিকভাবে একই ব্যাংকে জমা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় এ বছর হজে যাওয়া যাবে না এবং প্রদত্ত অর্থ ফেরত দেওয়া হবে না। হাজিদের জন্য সৌদি আরবের নতুন পরিকল্পনা গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে হজ নিবন্ধন শুরু হয় এবং সময়সীমা ছিল গত ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে হজ নিবন্ধনের সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়। এরপরও সাড়া না পাওয়ায় ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছিল মন্ত্রণালয়। এ বছর বাংলাদেশের জন্য নির্ধারিত কোটা রয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেতে পারবেন ১০ হাজার ১৯৮টি। আর বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে যেতে পারবেন এক লাখ ১৭ হাজার।

জাতীয়

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ ঘোষণা করা হয়েছে।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ ঘোষণা করা হয়েছে। সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর ১১টি ক্যাটাগরিতে ১৬ জন এই পুরস্কার পাচ্ছেন। আজ বুধবার  এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলা একাডেমি । অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন। বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ পাচ্ছেন— কবিতায় শামীম আজাদ, কথাসাহিত্যে নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ও সালমা বাণী, প্রবন্ধ/গবেষণায় জুলফিকার মতিন, অনুবাদে সালেহা চৌধুরী, নাটক ও নাট্যসাহিত্যে মৃত্তিকা চাকমা ও মাসুদ পথিক, শিশুসাহিত্যে তপংকর চক্রবর্তী, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় আফরোজা পারভীন ও আসাদুজ্জামান আসাদ, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গবেষণায় সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল ও মো. মজিবুর রহমান, বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞান/পরিবেশ বিজ্ঞানে ইনাম আল হক, আত্মজীবনী/স্মৃতিকথা/ভ্রমণকাহিনী/মক্তগদ্যে ইসহাক খান, ফোকলোরে তপন বাগচী ও সুমনকুমার দাশ।

জাতীয়

প্রশাসনিক কাঠামোতে বড় সংস্কারের উদ্যোগ।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- প্রশাসনিক কাঠামোতে বড় সংস্কারের উদ্যোগ। প্রশাসনে বড় সংস্কার আনা হচ্ছে। পদের অতিরিক্ত পদোন্নতি প্রদান, পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপযুক্ত স্থলে পদায়ন করতে না পারার ঘটনায় প্রশাসনের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। এই বাস্তবতায় প্রতিটি মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদসংখ্যা নির্ধারণ এবং সে অনুযায়ী পদোন্নতি প্রদান এবং পদায়ন করার সুযোগ তৈরি এই সংস্কারের মূল লক্ষ্য। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ক্রমাগতভাবে মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর অধিদপ্তর, সংস্থা ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রয়োজনীয়তা নিরিখে বাড়ানো হয়েছে। সে অনুযায়ী জনবলও বেড়েছে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানের বর্ধিত জনবলের নির্ধারিত পদসংখ্যা বাড়ানো হয়নি বা অর্গানোগ্রাম করা হয়নি। ফলে পদের অতিরিক্ত সংখ্যার পদোন্নতি এবং পদোন্নতিপ্রাপ্তদের যথাযথ পদায়ন সম্ভব হয় না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পদোন্নতি পাবার পরও দেখা যায় পদোন্নতিপূর্ব পদে (ইনসিটু) পদায়ন করা হয়। জনপ্রশাসনের বাইরেও পুলিশ প্রশাসনসহ একাধিক সংস্থায় একই পরিস্থিতি বিরাজমান। সর্বশেষ পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ১২ জন কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদে পদোন্নতি দেওয়া হলেও তারা এখনো পূর্বপদে বহাল আছেন। আর জনপ্রশাসনে উপসচিবের পদে কাজ করছেন যুগ্মসচিব আর যুগ্মসচিবের পদে কাজ করছেন অতিরিক্ত সচিব, সিনিয়র সহকারী সচিবের পদে কাজ করছেন উপসচিব। আর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গতকাল মঙ্গলবারের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ মিলিয়ে অতিরিক্ত সচিবের অনুমোদিত পদ আছে ১৪০টি। এই পদে কর্মরত আছেন ৩২২ জন কর্মকর্তা। যুগ্ম-সচিবের অনুমোদিত পদ ৩৩২টি। কর্মরত আছেন ৯১৯ জন। উপসচিব পদে অনুমোদিত পদ ১ হাজার ৪২৮টি। কর্মরত আছেন ১ হাজার ৭১১ জন। ইতিমধ্যে যোগ্যতা অর্জন করায় ১৮তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গতকাল সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের সভায় এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উপসচিব এবং যুগ্ম-সচিব পদেও পদোন্নতি দেওয়া হবে। প্রশাসনের সাংগঠনিক কাঠামোতে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারি উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর অধিদপ্তর, সংস্থা ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কাঠামোয় আমূল সংস্কার আনা হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এবার এই কাজ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কোন প্রতিষ্ঠানে কোন পদের বিপরীতে কতজন কোন মর্যাদার কর্মকর্তা প্রয়োজন তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ঠিক করে দেবে। পরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একটি পূর্ণাঙ্গ সাংগঠনিক কাঠামো নিরূপণ করবে। তার ভিত্তিতেই নিয়োগ পদোন্নতি পদায়ন হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই সাংগঠনিক কাঠামোতে কোনো সংস্কার আনা যায়নি। কিন্তু এবার এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। প্রসংগত, এ সরকারের আমলে সরকারি কর্মচারী আইন প্রণয়নসহ বেশ কিছু নীতিমালা প্রণীত হয়েছে। তবে সাংগঠনিক কাঠামোর বিষয়টি এতদিন উপেক্ষিতই ছিল। কার্যত এডহক ভিত্তিতে পদোন্নতি পদায়নের বিষয়টি চলে আসছে। মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদা বা খসড়া কাঠামো পাওয়া গেলে সমন্বিত কাঠামো পূর্ণাঙ্গ করা হবে। তিনি বলেন, সাধারণত যখন কোনো পদোন্নতি দেওয়া হয় তখন খেয়াল রাখা হয় পরবর্তী দুই মাসে আরো কতপদ শূন্য হবে, সেই সংখ্যা ধরে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ফলে তাৎক্ষণিক এই ধারণা করা হয় যে, পদের অতিরিক্ত সংখ্যায় পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। সরকারের ৫ লাখ শূন্য পদ কেন পূরণ করা যাচ্ছে না, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পদের বিপরীতে নিয়োগ বা পদায়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। নিয়োগও চলে আবার অবসরজনিত কারণে পদ শূন্যও হয়। ফলে সব সময়ই কিছু না কিছু পদ শূন্য থাকে। প্রশাসনিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে সব মন্ত্রণালয়ের অর্গানোগ্রাম হালনাগাদ করার প্রয়াস একটি জরুরি প্রয়াস। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে টানা চার দফায় ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনিক সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছেন। বহির্বিশ্বের আমলাতন্ত্রের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সক্ষম ঔপনিবেশিক মানসিকতামুক্ত, দক্ষ, মেধাসম্পন্ন ও সৃজনশীল জনপ্রশাসন গড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু বাস্তবতা হলো, পাকিস্তান আমলের ২৪ বছরে এবং বাংলাদেশ আমলেও ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ আমলে তৈরি প্রশাসনিক ব্যবস্থার মূল কাঠামো ও কার্যপ্রণালিতে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। অন্যদিকে, স্বাধীন বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো প্রশাসন ব্যবস্থার বাস্তবায়ন হয়নি। বিভিন্ন সময় প্রশাসনের সংস্কারের জন্য বিভিন্ন কমিটি বা কমিশন গঠন করা হলেও এসব কমিশন বা কমিটির সুপারিশ খুব অল্পই আমলে নেওয়া হয়েছে। ১৯৮৩ সালে সামরিক শাসনামলের বহুল আলোচিত ‘এনাম কমিটির’ সুপারিশ ও ১৯৯৬ সালের গঠিত শামসুল আলম কমিশনের সুপারিশও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। এদিকে, প্রশাসনিক সংস্কারের বিষয়ে আশাবাদী হলেও বিভিন্ন ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন যে, এই সংস্কার যেন সামগ্রিক হয় সেটি নিশ্চিত করার প্রতি জোর দিয়েছেন ক্যাডার কর্মকর্তারা। বিশেষজ্ঞদের মতে, একুশ শতকের বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং আগামীর চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের পৃথিবীর উপযোগী জনপ্রশাসন গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েই এখন প্রশাসনিক সংস্কার করতে হবে। এজন্য বিদ্যমান বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং অধীনস্থ দপ্তর ও সংস্থাগুলোর কাজ এবং ক্যাডার সার্ভিসগুলোরও পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। জাতীয় ও স্থানীয় মাঠপর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্যই একই ধরনের কাজে নিয়োজিত কিছু দপ্তর ও বিভাগের বিলুপ্তি বা একত্রীকরণ প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জন্য সরকারি চাকরি আইনেরও যুগোপযোগী সংস্কার করতে হবে। পাশাপাশি সরকারি খাত এবং বেসরকারি খাতের মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকেও প্রশাসনিক সংস্কারে আমলে নিতে হবে।

জাতীয়

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্বতন্ত্র এমপিদের গণভবনে ডাকলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্বতন্ত্র এমপিদের গণভবনে ডাকলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ৬২ স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য (এমপি) গণভবনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে। আগামী রোববার সন্ধ্যায় এসব সংসদ সদস্যকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন । বিপ্লব বড়ুয়া জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সব স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যকে আগামী ২৮ জানুয়ারি (রোববার) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

জাতীয়

চলমান প্রকল্প দ্রুত শেষ করে নতুন প্রকল্প নিন — প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- চলমান প্রকল্প দ্রুত শেষ করে নতুন প্রকল্প নিন — প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যত দ্রুত সম্ভব শেষ করতে এবং যথাযথ যাচাই-বাছাই করে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘চলমান প্রকল্পগুলোর মধ্যে যেগুলোর খরচ কম হবে সেগুলো আমাদের দ্রুত শেষ করতে জন্য হবে, কারণ, আমি মনে করি, যত তাড়াতাড়ি আমরা সেগুলো শেষ করতে পারবো তত বেশি সুবিধা পাবো।’ প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে পরিকল্পনা কমিশনের সভায় সভাপত্বিকালে একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একটা প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার পর এর ফলাফল পাই, তারপর আরেকটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করি।’ শেখ হাসিনা প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে দেরি না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান। সরকার প্রধান বলেন, আপনাদের অনুরোধ করবো, এখন সব থেকে বেশি যেটা দরকার, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেটা আমাদের বেছে নিতে হবে। এগুলো চিহ্নিত করতে হবে, কোন প্রকল্পগুলো সামান্য কিছু টাকা দিলেই আমরা শেষ করে ফেলতে পারবো। প্রকল্পগুলো যত দ্রুত শেষ করে ফেলা যায় ততই ভালো। কারণ, একটি প্রকল্প শেষ হলে তার ফলাফল আসে। আমরা লাভবান হই এবং নতুন প্রকল্প নিতে পারি। তিনি বলেন, ‘কাজেই এখানে দীর্ঘসূত্রিতা যেন না হয়, বার বার যেন প্রকল্প সম্পন্ন দেরি না হয়- সেদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’ শেখ হাসিনা বলেন, প্রকল্পের পিডি (প্রকল্প পরিচালক) নিয়োগের ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকগুলো প্রকল্পের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে, কিন্তু সেটা করার কোন সুযোগ নেই। সেটা কিন্তু হতে দেওয়া যাবে না। প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়কে সেভাবে নির্দেশ দেওয়া হবে। তিনি প্রকল্প পরিচালকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। কারণ, অনেক সময় দেখা যায় অনেককে প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হয় যারা কাজটা ঠিকমত বুঝে উঠতে পারেন না বা মনযোগী হন না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন কোন উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা হাতে নিই সে সময় খেয়াল রাখতে হবে কোনটা আমার দেশের জন্য প্রযোজ্য এবং প্রয়োজন। অনেক সময় প্রকল্প পরিচালনার জন্য আমরা এডিবি বা বিশ্ব ব্যাংক বা অন্যান্য সংস্থা বা দেশ থেকে থেকে ঋণ নিয়ে কাজ করি। অনেক সময় দেখা যায় অনেক বড় অংকের টাকার প্রকল্প নিয়ে আসা হয়। সরকার প্রধান বলেন, নতুন প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে আমি আবারো বলবো, অহেতুক একটা প্রস্তাব আসলো বড় আকারের, সেটা তাৎক্ষণিকভাবে গ্রহণ না করে প্রতিটি প্রস্তাবের ক্ষেত্রে এটাই মাথায় রাখতে হবে- সেখানে আমাদের কী পরিমান টাকা ব্যয় হবে, আমরা কী পরিমান ঋণ নিচ্ছি এবং সুদসহ কী পরিমান ঋণ পরিশোধ করতে হবে এবং সেটা করার মতো আমাদের সক্ষমতা আছে কি-না এসব যাচাই বাছাই করা একান্তভাবে দরকার। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যখন তখন যেকোন প্রকল্প গ্রহণ করি না। আগে চিন্তা করে দেখি কোনটা দেশের কাজে লাগবে আর কোনটা লাগবে না। এর থেকে মানুষ কতটুকু পাবে।’ তিনি আরও বলেন, অযথা টাকা ধার করা নয়, কারণ, যা সুদসহ আমাকেই পরিশোধ করতে হয়। তাই, এই বোঝা যাতে আমাদের কাঁধে না পড়ে সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। পাশাপাশি যে প্রকল্প আমরা নেব সেটা আমরা ওই কাজের বা ওই এলাকার জন্য কার্যকর কিনা এবং এর থেকে সাধারণ মানুষ কী পরিমান লাভবান হবে সে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এছাড়া অর্থনীতিতেও কেমন গতি সঞ্চার হবে তাও দেখতে হবে। বিশে^ চলমান যুদ্ধপরিস্থির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি যে, যেহেতু অর্থনৈতিকভাবে একটা চাপ আছে, যার জন্য যথাসময়ে অর্থ হয়তো আমরা ছাড় করতে পারিনি। আর এই নির্বাচনের ডামাডোলে সবকিছু একটু ধীর গতিতে চলেছে। নির্বাচন তো সম্পন্ন হয়ে গেছে কাজেই এটা আর ধীরগতিতে চললে হবে না। এখন আরো দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। এই নির্বাচনকালীন যে সময় আমাদের নষ্ট হল সেটা আমাদের এখন পূরণ করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সামনে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ যেটা আসবে ২০২৬ সালে আমাদের গ্র্যাজুয়েশন কার্যকর শুরু হবে। সেখানে আমরা কি কি সুবিধা পাব আর কোনটা আমাদের জন্য সবথেকে বেশি কার্যকর সেটা আমাদের বাছাই করতে হবে। আমরা সেভাবে কাজ শুরু করব। এর সাথে এলডিসি হিসেবে যে সুবিধাগুলো আমরা পেতাম সেগুলো অনেকগুলো কিন্তু আমরা পাব না, যদিও এগুলো প্রস্তাব করেছি-২০৩২ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে। এ বিষয়গুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে আমাদের যে চ্যালেঞ্জগুলো আসবে সেগুলো আমরা কীভাবে মোকাবেলা করব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকটি দেশের জন্য যুদ্ধের ফলাফল খারাপ। কারণ, মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যায়, অনেক কিছুই আমরা উৎপাদন করি, কিন্তু, যেসব পণ্য আমাদের দেশে উৎপাদন কম হয় বা আমদানী করতে হয় সেসব পণ্যের মূল্য এবং পরিবহণ ব্যয় অত্যাধিক বেড়ে গেছে। তারপর ঋণের সুদ বেড়ে যাওয়া এর একটা বিরাট চাপ আমাদের অর্থনীতির ওপর পড়েছে। এসময় কোভিড-১৯ চলাকালীন বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া থেকে সরকারের কোভিড মোকাবেলার সাফল্যের বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করেন তিনি। সরকার প্রধান বলেন, প্রবৃদ্ধি অর্জন আমাদের ধরে রাখতে হবে। এখানে মূল্যস্ফীতি একটি বিরাট সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। মূল্যস্ফীতি যদি প্রবৃদ্ধির থেকে কম থাকে তাহলে তার শুভফল মানুষের কাছে পৌঁছায়। মূল্যস্ফীতির কিছুটা আমরা লাগাম টেনে ধরেছি, আমাদের সামনে আরো কমাতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকটা পরিকল্পনার সাথে সাথে আমাদের এই চিন্তাও মাথায় রাখতে হবে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে অর্থ ছাড় বা এর ব্যবহারের ফলে মূল্যস্ফীতি যেন আর না বাড়ে। যে মূল্যস্ফীতি বর্তমানে আছে সেটা আমরা কীভাবে কমিয়ে আনব সে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাঁর সরকার কৃষি, গ্যাস, বিদ্যুৎ-প্রভৃতিতে ভর্তুকি দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ভর্তুকি ও আমাদের ধীরে ধীরে কমিয়ে আনতে হবে। কারণ, এক্ষেত্রে ভর্তুকি অনেকাংশে বাড়িয়ে ফেলায় মূল্যস্ফীতি ও বেড়ে গেছে। এখন আমাদের যেটা করতে হবে একটি সুনির্দিষ্ট সময়ে কত শতাংশ বাড়ালে আমাদের মূল্যস্ফীতিতে চাপ পড়বে না সেটা মাথায় রেখে আমাদের ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে। আমরা চট করে বেশি বাড়াতে পারবো না, সেটা মাথায় রেখে আমাদের চলতে হবে। ‘পাঁচ বছর টাইম ইজ টু শর্ট’ উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, কাজেই পাঁচ বছর আমি কাজ করে যাব দেশের জন্য। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দিয়েছি। সেটা মাথায় রেখেই আমাদের কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করতে হবে। সরকার গঠন করার পরে দ্রুত আমরা বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছি কারণ, নষ্ট করার মত সময় আমাদের হাতে নেই। প্রধানমন্ত্রী ভাষণের শুরুতে বলেন, আমি জাতির কাছে ঋণী এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণ, বারবার তারা ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছে। আমি আজকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় দায়িত্ব পেয়েছি। স্বাধীনতার সুফল এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যেন আমরা ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারি, স্বাধীনতার শুভফল যেন জনগণ পায় সেজন্যই আমাদের পথ চলা।বাসস।

জাতীয়

অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ চিরতরে রুদ্ধ করেছি — প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ চিরতরে রুদ্ধ করেছি — প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ চিরতরে রুদ্ধ করেছি। আগামীকাল বুধবার (২৪ জানুয়ারি) ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি। বাণীতে শেখ হাসিনা বলেছেন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়। বাহান্নর ভাষা আন্দোলন, বাঙালির মুক্তি সনদ ৬ দফা, পরবর্তীকালে ১১ দফা ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি মহান স্বাধীনতা, পেয়েছি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ। সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে। গত ১৫ বছরে নিরলস পরিশ্রম করে দেশের আর্থ-সামাজিক সব খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত মানুষ উন্নয়নের সুফল উপভোগ করছে। জাতিকে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস উপহার দিয়েছি। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছি। ইতিহাস বিকৃতি বন্ধ করেছি। অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পথ চিরতরে রুদ্ধ করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি এবং রায় কার্যকর করছি। নতুন প্রজন্ম দেশের সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে। তিনি বলেন, এমডিজির লক্ষ্যগুলো সফল বাস্তবায়নের পর এসডিজির লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নের পথেও বাংলাদেশ দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা ‘এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছি। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধিশালী দেশে রূপান্তর এবং ২১০০ সালের মধ্যে ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে আমরা সক্ষম হব, ইনশাল্লাহ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে ঔপনিবেশিক পাকিস্তানি শাসন, শোষণ, নিপীড়ন, বৈষম্য ও বঞ্চনা থেকে বাঙালি জাতিকে চিরতরে মুক্ত করতে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা করেন। এতে আরও তীব্রতর হয় স্বাধিকার আন্দোলন। ১৯৬৮ সালে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনকে নস্যাৎ করার হীন উদ্দেশ্যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে বঙ্গবন্ধুসহ ৩৫ জনকে বন্দি করে। ১৯৬৮ সালের ১৯ জুন বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ঢাকা সেনানিবাসে বিচার শুরু করে। এ মামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক-জনতা দুর্বার ও স্বতঃস্ফূর্ত গণআন্দোলন গড়ে তোলে জানিয়ে তিনি বলেন, কারাগারে আটক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মুক্তির দাবিতে গর্জে উঠে সারা বাংলার মানুষ। ১৯৬৯ সালের পুরো জানুয়ারি ছিল আন্দোলনে উত্তাল। প্রতিদিন আন্দোলনের ঘটনা ঘটে এবং ধারাবাহিকভাবে দেশব্যাপী আন্দোলন চলতে থাকে। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের রাস্তায় ছাত্র-জনতার চলমান মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে আসাদুজ্জামান শহিদ হন এবং আহত হন আরও অনেকে। শেখ হাসিনা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে মুক্ত করা এবং পাকিস্তানি সামরিক শাসন উৎখাতের সংকল্প নিয়ে ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি সংগ্রামী জনতা শাসকগোষ্ঠীর দমন-পীড়ন ও সান্ধ্য আইন ভঙ্গ করে মিছিল বের করেন। মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণে ঢাকার নবকুমার ইনস্টিটিউশনের নবম শ্রেণির ছাত্র মতিউর রহমান মল্লিক এবং মকবুল, আনোয়ার, রুস্তম, মিলন, আলমগীরসহ আরও কয়েকজন শহিদ হন। জনতার কঠিন রুদ্ররোষ এবং গণঅভ্যুত্থানের জোয়ারে স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান অভিযুক্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ সকলকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ফলে আইয়ুব খানের স্বৈরতন্ত্রের পতন হয়। অপশাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারী সকল শহীদ গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি শহীদ মতিউরসহ দেশের মুক্তিসংগ্রামের সকল শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

জাতীয়

সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিশ্ব সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া আঞ্চলিক পরিচালক মনোনীত।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিশ্ব সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া আঞ্চলিক পরিচালক মনোনীত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ পেয়েছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই পদে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। আগামী মেয়াদে পাঁচ বছরের জন্য বর্তমান পরিচালক ড. পুনাম ক্ষেত্রপাল সিংয়ের স্থলাভিষিক্ত হবেন সায়মা ওয়াজেদ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ড. সায়েমা ওয়াজেদ পুতুলকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিচালক হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বর্তমান পরিচালক ড. পুনাম ক্ষেত্রপাল সিং আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দায়িত্ব পালন করবেন ড. সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল। এর আগে, গত ১ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক সম্মেলনে এ পদে নির্বাচিত হন সায়মা ওয়াজেদ। তিনি ৮-২ ভোটে পরিচালক নির্বাচিত হন। সে সময় নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক পরিচালক নির্বাচিত হওয়ার খবর জানান সায়মা ওয়াজেদ। তিনি বলেন, আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত করায় আমি ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের অঞ্চলের জনস্বাস্থ্যে অবদানের জন্য আমি বিদায়ী পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিংয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। সায়মা ওয়াজেদ ১৯৯৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক এবং ২০০২ সালে ক্লিনিক্যাল মনস্তত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৪ সালে স্কুল সাইকোলজির ওপর বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি অর্জন করেন। ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময় তিনি বাংলাদেশের নারীদের উন্নয়নের ওপর গবেষণা করেন। এ বিষয়ে তার গবেষণাকর্ম ফ্লোরিডার অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের কাছ থেকে শ্রেষ্ঠ সায়েন্টিফিক উপস্থাপনা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

জাতীয়

বাবরি মসজিদের ইতিহাস।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- বাবরি মসজিদের ইতিহাস। আজ সোমবার জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেইসঙ্গে উঠে আসছে ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ এর নামও। ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ নিয়ে বহুকাল ধরে যে বিতর্ক চলে আসছে, সেই ইতিহাসের পাতায় আজ যুক্ত হচ্ছে আরেকটি অধ্যায়। পনের শতকের ঐতিহাসিক স্থাপনা ৩২ বছর আগে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর রাষ্ট্রীয়ভাবে মহাসমারোহে সেখানে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে রাম মন্দির। গত শতাব্দীর ছবিগুলোতে বাবরি মসজিদের যে অবয়ব দেখা যায়, সেই কাঠামো আর নেই। প্রাচীন স্থাপনার আদলে একই জায়গায় গড়ে উঠেছে আধুনিকতার ছোঁয়ায় নান্দনিক স্থাপনা। দেয়ালে দেয়ালে বসেছে কারুকাজ আর দেব-দেবীর প্রতিমূর্তি। আলোয় ঝলমলে স্থাপনার গম্বুজের মত চূড়াগুলোতে উড়ছে গেরুয়া পতাকা। বাবরি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন যে মোগল সেনাপতি ভারতীয় উপমহাদেশে মোগল সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তন করেন জহির উদ্দিন মুহম্মদ বাবর। ১৪৯৪ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ১১ বছর বয়সে পিতৃ সিংহাসনে আরোহন করেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি ১৫০৪ খ্রিস্টাব্দে কাবুল নিয়ন্ত্রণে নেন। এরপর কয়েকটি পর্যপেক্ষণমূলক অভিযানে সফলতা লাভের পর ১৫২৬ সালে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে লোদী বংশের সর্বশেষ সুলতান ইবরাহিম লোদিকে পরাজিত করে দিল্লি সালতানাতের স্থলে মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। মোগল সাম্রাজ্য মোগল সাম্রাজ্য ছিল দক্ষিণ এশিয়ার একটি প্রাথমিক আধুনিক সাম্রাজ্য। প্রায় দুই শতাব্দী ধরে পশ্চিমে সিন্ধু অববাহিকার বাইরের প্রান্ত থেকে, উত্তর-পশ্চিমে উত্তর আফগানিস্তান এবং উত্তরে কাশ্মীর, পূর্বে বর্তমান আসাম ও বাংলাদেশের উচ্চভূমি এবং এর উচ্চভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। দক্ষিণ ভারতের দাক্ষিণাত্যের মালভূমি। বাবরি মসজিদ নির্মাণ মোগল শাসকদের আমলে ভারতবর্ষে অংখ্য শিল্প, স্থাপত্য গড়ে উঠে। মোগলস্থাপত্যের প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য হলো স্থাপত্যে গম্বুজের ব্যবহার। সম্রাট জহির উদ্দিন মুহম্মদ বাবর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর ১৫২৭ সালে অযোধ্যার নিয়ন্ত্রণ নেন তার সেনাপতি মীর বাকি। পরের বছর ১৫২৮ সালে সম্রাট বাবরের নামে সরযূ নদী পাড়ে নির্মাণ করেন তিন গম্বুজবিশিষ্ট এক মসজিদ। সাড়ে চার শতক পরে যা ভারতের রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিতর্কের কেন্দ্র হয়ে উঠে। সেনাপতি মীর বাকি বাবরি মসজিদ নির্মাণের ৩৫৭ বছর পর ১৮৮৫ সালে মসজিদটি নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক ও আইনি লড়াই। তিন গম্বুজওলা ওই মসজিদ শ্রীরামচন্দ্রের জন্মস্থান ভেঙেই তৈরি হয়েছে বলে বিশ্বাস করতেন হিন্দুদের একটা বড় অংশ। তারা বলতেন, মসজিদের ভেতরে থাকা একটা উঁচু বেদীর মতো অংশেই রাম ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, মোগল আমলে একাধিকবার ওই জমি উদ্ধারের চেষ্টা হয়েছিল। যদিও সেই দাবির সমর্থনে ঐতিহাসিক তথ্যপ্রমাণও মেলেনি। বাবরি মসজিদ বিতর্ক তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতে মহন্ত রঘবীর দাস নামের একজনের দায়ের করা এক মামলার পর সেনাপতি মীর বাকি নির্মিত বাবরি মসজিদ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। তৎকালীন ব্রিটিশ আদালত মহন্ত রঘবীর দাসের দায়ের করা মামলা খারিজ করে দেন। এরপর ১৯৪৯ সালের ২২ডিসেম্বর রাতে বাবরি মসজিদে রাম ও সীতা মূর্তি রেখে আসে অজ্ঞাতনামা কোন হিন্দু উগ্রবাদী। এ ঘটনাকে অলৌকিক দাবি করে প্রার্থনা শুরু করে মন্দিরপন্থীরা। এ ঘটনার পর ১৯৫০ সালে মসজিদে তালা দেয় ভারতীয় আদালত। সাথে বন্ধ করে হিন্দুদের মূর্তি দর্শন। ১৯৫৯ সালে হিন্দুদের পক্ষে জমি চেয়ে মামলা করেন নির্মোহী আখড়া নামের এক ব্যক্তি। অপরদিকে ১৯৬১ সালে মসজিদের জমির মালিকানা দাবি করে মুসলমানদের পক্ষে আদালতের দারস্থ হন উত্তর প্রদেশ মুসলিম ওয়াকফ বোর্ড। ১৯৮০-র দিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও তাদের রাজনৈতিক সহযোগী কট্টোর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতা ওই স্থানে রাম মন্দির নির্মানে প্রচারাভিযান চালায়। ১৯৮৬ সালে আদালত মসজিদের তালা খোলার নির্দেশ দিলে ১৯৯০ সালে এ প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে বেশ কিছু শোভাযাত্রা ও মিছিল বের করে লাল কৃষ্ণ আদভানি। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি দেড় লাখ কর সেবক নিয়ে একটি শোভাযাত্রা বের করে। এ শোভাযাত্রা চলাকালীন সময়ে উগ্রবাদী হিন্দুরা সহিংস হয়ে ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত এ মসজিদটি শহীদ করে। যা মুসলমানদের হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করে। পরবর্তীকালের অনুসন্ধানে এই মসজিদ ভাঙার অপরাধে ৬৮ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে, যাদের অধিকাংশই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বিজেপির নেতা বলে জানা যায়। ৩ এপ্রিল ১৯৯৩ সালে সংসদে পাশ হওয়া এক আইনের মাধ্যমে এ জমি দখল করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০ সালে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া ও রামলালা, সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে এই তিনভাগে জমিটি ভাগ করার রায় দেয় এলাহাবাদের তিন বিচারকের বেঞ্চ। কিন্তু ২০১১ সালের ৯ মে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এ রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় এবং ৯ নভেম্বর শনিবার ২০১৯ অযোধ্যার এ জমিটিতে হিন্দুদের মন্দির নির্মাণের রায় দেয় ভারতীয় সুপ্রিমকোর্ট। একইসঙ্গে মসজিদ নির্মাণের জন্য মুসলিমদের বিকল্প ৫ একর জমি দেওয়ার রায় দেওয়া হয়। তবে রামমন্দির ইতিমধ্যেই উদ্বোধন করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।২২ শে শে জানুয়ারী। সেই মসজিদ নির্মাণের কাজের কোনো অগ্রগতি নেই। কবে কখন শুরু হবে।

Scroll to Top