নভেম্বর ৮, ২০২৩

জাতীয়

পোষাক শ্রমিক আন্জু আরা পুলিশের গুলিতে নিহত।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- পোষাক শ্রমিক আন্জু আরা পুলিশের গুলিতে নিহত। মায়ের আদর নিতে এসেছিল দুই শিশু, ফিরল তার লাশ নিয়ে স্বল্প বেতনে আলাদা পোশাক কারখানায় কাজ করতেন মো. জামাল ও আনজু আরা দম্পতি। গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় আহত হয়ে আনজু আরার মৃত্যু হয়। এই দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। অর্থনৈতিক অস্বচ্ছল হওয়ায় ইচ্ছা থাকলেও সন্তানদের কাছে রাখার সামর্থ্য নেই তাদের। আট বছর বয়সী ছেলে মো. আরিফ ও সাত বছর বয়সী মেয়ে জয়া খাতুন গ্রামে তাদের দাদা-দাদির কাছে থেকে পড়াশোনা করে। একটি বিদ্যালয়ে আরিফ তৃতীয় শ্রেণিতে এবং জয়া দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। পূজার ছুটিতে ২০ দিন আগে মায়ের আদর নিতে এসেছিল দুই ভাই-বোন। বুধবার (৮ অক্টোবর) মা আনজু আরার লাশের সঙ্গে সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের চরগিরিশ গ্রামে ফিরতে হলো ছোট্ট দুই সন্তানকে। নিহত আনজু আরার স্বামী মো. জামাল বলেছেন, তার স্ত্রী শ্রমিক বিক্ষোভে ছিলেন না। বিক্ষোভের কারণে সকাল আটটার দিকে কারখানা ছুটি হওয়ার পর জরুন এলাকার বাসায় সন্তানদের কাছে ফিরছিলেন আনজু আরা। পথে কোনাবাড়ীর জরুন এলাকায় পুলিশের গুলিতে তার মৃত্যু হয়েছে। সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনজু আরার লাশের সুরতহাল করা হয়। পরে তার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যার পর স্বজনেরা অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ নিয়ে রওনা দেন। আনজু আরার দুই শিশুসন্তানও মায়ের লাশের সঙ্গে ওই অ্যাম্বুলেন্সে করে সিরাজগঞ্জে গ্রামের বাড়ির পথে রওনা হয়। আনজু আরার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, আনজু আরার মাথায় গুলির আঘাতের কোনো চিহ্ন তিনি পাননি। তার শরীরে আঘাতের চিহ্নগুলো দেখে মনে হয়েছে, হুড়োহুড়ির সময় আনজু আরা মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন। তখন মানুষের পায়ের আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে। আনজু আরাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনার পর রেজিস্টারে ‘গুলির আঘাতজনিত’ সমস্যায় আহত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আলাউদ্দিন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই আনজু আরা মারা যান। তাকে জরুরি বিভাগে আনার পর স্বজনেরা বলেছেন, গুলিতে আহত হয়েছেন। সেটিই প্রাথমিকভাবে রেজিস্টারে লেখা হয়েছে। তার মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক খতিয়ে দেখবেন। সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে কথা হয় আনজু আরার স্বামী জামালের সঙ্গে। স্ত্রীর মৃত্যুতে তিনি তখন স্বজনদের জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন। জামাল বলেন, আনজু আরা ইসলাম গার্মেন্টস নামে একটি প্রতিষ্ঠানে সুইং অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। আর তিনি নিজে কাজ করেন ডিজাইন প্রিন্টিং নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে। প্রতিদিনের মতোই গতকাল সকাল সাড়ে ছয়টায় তারা বাসা থেকে কারখানার উদ্দেশে রওনা দেন। আনজু আরাকে কারখানায় তিনিই পৌঁছে দিয়েছিলেন। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জামাল বলেন, পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর তিনি কারখানা থেকে বেরিয়ে স্ত্রীর খোঁজ নিতে যান। কারখানার সামনেই আনজু আরার সঙ্গে তার দেখা হয়। সকাল আটটার দিকে মাইকে আনজু আরার কারখানা ছুটির ঘোষণা আসে। তখন স্ত্রীকে বাসায় যেতে বলেন জামাল। বাসায় যাওয়ার সময় হঠাৎ গোলাগুলি শুরু হয়। একটি গুলি এসে আনজু আরার মাথায় লাগে। প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আশরাফ উদ্দিন রাতে বলেন, বিক্ষোভের সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করছিলেন পোশাকশ্রমিকেরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় পড়ে গিয়ে আহত হন আনজু আরা। কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে, তা জানতে পারেননি। স্বজনেরা জানান, জামাল ও আনজু আরার বিয়ে হয় ২০১৪ সালে। তারা দুজনই তখন তেজগাঁও এলাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। দুই বছর আগে তারা গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার দুটি কারখানায় কাজ নেন। জামাল জানান, দুজন মিলে প্রতি মাসে গড়ে ২০ হাজার টাকা পেতেন। এই টাকায় সন্তানদের নিয়ে চলা সম্ভব নয়। সে কারণে ছেলে-মেয়েদের দাদাবাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বিদ্যালয় ছুটি হলে অল্প দিনের জন্য দুই সন্তানকে নিজেদের কাছে এনে আদর করতেন।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাজ্যে লেবার পার্টির এমপি ও ছায়া মন্ত্রী ইমরান হোসেনের পদত্যাগ।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- যুক্তরাজ্যে লেবার পার্টির এমপি ও ছায়া মন্ত্রী ইমরান হোসেনের পদত্যাগ। যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি ইমরান হোসেন পদত্যাগ করেছেন। তিনি সংসদ সদস্য এবং কর্মসংস্থান অধিকার ও সুরক্ষা বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী। গাজায় ইসরায়েলি হামলার পক্ষে লেবার নেতা কিয়ার স্টারমারের অবস্থানের কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হোসেন দলের ফ্রন্টবেঞ্চ থেকে পদত্যাগ করেছেন।কিয়ার স্টারমারকে দেওয়া তাঁর পদত্যাগপত্রে হোসেইন বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় সম্পর্কে আমার দৃষ্টিভঙ্গি আপনার নেওয়া সিদ্ধান্ত থেকে যথেষ্ট আলাদা।’ হোসেন আরো উল্লেখ করেছেন, গত ১১ অক্টোবর এক সাক্ষাৎকারে লেবার নেতা গাজায় ‘ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পদক্ষেপকে সমর্থন করতে দেখা গেছে।’ হোসেন লিখেছেন, ‘আমি আপনার মন্তব্যগুলো স্পষ্ট করার জন্য আপনার পরবর্তী বিবৃতিগুলোর প্রশংসা করি। গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বাধিক জোর দেওয়া হচ্ছে- এই পদক্ষেপেরও প্রশংসা করি। আমরা উভয়েই রক্তপাত বন্ধ করতে চাই এবং আমি বিশ্বাস করি, পার্টিকে আরো এগিয়ে যেতে হবে এবং যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে হবে।’ হোসেইন বলেছেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে, তবে ‘বেসামরিকদের সুরক্ষার সব আন্তর্জাতিক আইন ইচ্ছাকৃতভাবে লঙ্ঘন বা যুদ্ধাপরাধ করার অধিকার থাকতে পারে না।’ গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলারও নিন্দা জানান তিনি। হুসেন তাঁর পদত্যাগপত্রটির শেষে উল্লেখ করেছেন, তিনি গাজায় একটি মানবিক যুদ্ধবিরতি চান। এ ছাড়া দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের অংশ হিসেবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের শান্তির জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থার বিষয়ে চাপ দেবেন। তিনি এই বিষয়ে লেবার পার্টির পেছন থেকে কাজ চালিয়ে যাবেন। সূত্র : আলজাজিরা

আন্তর্জাতিক

খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের চিঠি।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের চিঠি। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। ছবি: সংগৃহীত বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে জরুরি চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। চিঠিতে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ‘রাজনৈতিক সংলাপ ও সমঝোতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখা হবে। এমতাবস্থায় আমি আপনার সরকারের কাছে তার মুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার জন্য আবেদন করছি। গত ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি এই আহ্বান জানান বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাই কমিশনারের চিঠিতে বলা হয়, চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে শেখ হাসিনার সরকার। বাংলাদেশের চিকিৎসকরা বলছেন, বিদেশে চিকিৎসা না পেলে দুইবারের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জীবন ‘উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে। ওই চিঠিতে ভলকার তুর্ক বাংলাদেশ সরকারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গ্রেপ্তারসহ সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে এমন সকল স্বেচ্ছাচারী গ্রেপ্তার বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। এএফপির খবরে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া মূলত ‘ব্যাটলিং বেগমস’ নামে পরিচিত এবং তাদের মধ্যেকার তীব্র বিরোধই গত চার দশক ধরে ১৭ কোটি মানুষের দেশটির রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। ৭৮ বছর বয়স্ক খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রধান বিরোধীদল বিএনপির প্রধান। তার বিরুদ্ধে ১৭ বছরের কারাদণ্ডাদেশ রয়েছে, যদিও ২০২০ সাল থেকে তিনি গৃহবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ রয়েছে। গত মাসে তিন মার্কিন চিকিৎসক তার সার্জারি করেন। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য জার্মানিতে নিয়ে যেতে পরিবারের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানায় এএফপি। নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার মৃত্যু বাংলাদেশে বড় ধরনের বিক্ষোভের জন্ম দিতে পারে উল্লেখ করে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের কথা রয়েছে। এর আগে বিরোধী দলগুলো একটানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এমন সময়ে খালেদা জিয়ার মৃত্যু বাংলাদেশে বড় ধরনের বিক্ষোভের জন্ম দিতে পারে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করতে পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের মধ্যে রয়েছেন। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবারও ক্ষমতায় ফেরার আশা করছে বিএনপি।

জাতীয়

৩০০ আসনেই নির্বাচন করবে তৃণমূল বিএনপি – শমশের মুবিন চৌধুরী।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- ৩০০ আসনেই নির্বাচন করবে তৃণমূল বিএনপি – শমশের মুবিন চৌধুরী। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে প্রয়াত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার ‘তৃণমূল বিএনপি’। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন দলটির চেয়ারপারসন শমসের মোবিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। তিনশ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করছি।’ শমসের মোবিন বলেন, ‘তৃণমূল বিএনপি দলীয় নিয়ম নীতি মেনে পরিচালিত হবে। প্রাইভেট কোম্পানি হবে না। তৃণমূল বিএনপি হবে বাংলাদেশের তৃণমূল কংগ্রেস।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জ্বালাও পোড়াও রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। সুষ্ঠু রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। আমরা হত্যার রাজনীতি সহিংসতাকে সমর্থন করি না। সুষ্ঠু রাজনীতি হবে সুশানসের ভিত্তি। নির্বাচনে কমিশনকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তা অক্ষরে অক্ষের পালন করবে এটা আমাদের দাবি।’ তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘আমাদের দলকে এমনভাবে সংগঠিত করতে চাই যাতে করে শুধু রাজনীতি নয়, বরং স্থানীয় পর্যায়ে জনগণের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে জনগণের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে।’ এর আগে সারাদেশ থেকে রাজনীতিতে একেবারেই অপরিচিত ৩৫ জন তৃণমূল বিএনপিতে যোগদান করেন। এর মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, সেনা কর্মকর্তা ছাড়াও শিক্ষক, আইনজীবী রয়েছেন। এ সময় তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Scroll to Top