জুলাই ১২, ২০২৩

জাতীয়

বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যান্ডদল সোলস এর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে লন্ডনের মাইল এন্ড স্টেডিয়ামে কনসার্ট হয়েছে প্রথমবারের মতো

বিলেতের আয়না ডেক্স :-মাহমুদুর রহমান শানুর বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যান্ডদল সোলস এর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে লন্ডনের মাইল এন্ড স্টেডিয়ামে কনসার্ট হয়েছে প্রথমবারের মতো সোলস যুক্তরাজ্যে কনসার্ট করলো। নিজেদের গানের পাশাপাশি পার্থ বড়ুয়া রক আইকন আইয়ুব বাচ্চুকে স্মরণ করে গাইলেন ‘একদিন ঘুম ভাঙা শহরে।’ লন্ডনের মাইল এন্ড স্টেডিয়ামে হাজার হাজার দর্শক-শ্রোতাদের গানে গানে মাতালেন দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ডদল সোলস। গত ৯ জুলাই লন্ডনে ঈদ আনন্দমেলা আয়োজনে অংশ নেয় সোলস। প্রায় ৫০ হাজার দর্শক অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে উপস্থিত ছিলেন লন্ডনে বাংলাদেশের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম। এ সময় তিনি সোলসের সদস্যদের হাতে ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ সম্মাননা তুলে দেন। ‘এ এমন পরিচয়’ গানটি দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করে ব্যান্ডদল সোলস। এরপর একে একে ‘বৃষ্টি দেখে অনেক কেঁদেছি, কেন এই নিঃসঙ্গতা, ব্যস্ততা দেয় না অবসরসহ জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করেন। বিশেষ করে সিলেটি একটি জনপ্রিয় গান গেয়ে দর্শক স্রোতাদেক মাতিয়ে রেখেছিলেন। “কিতা ভাইছাব ‘কিতা খবর বাড়ির হক্কল বালানি ‘ গানটি গেয়ে দর্শকদের কে আলাদা উচ্চমাত্রায় নিয়ে গেছেন। এই অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়েই সোলসের ৫০ বছর পূর্তির আয়োজন শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে লন্ডন বাসীদের সিলেটি ভাষার ‘কিতা ভাইসাব’ গানটি উপহার দেন ব্যান্ডদলটি । এসময় হাজারো কণ্ঠে গানটি স্টেডিয়াম জুড়ে অন্যরকম উন্মাদনা সৃষ্টি করে। এই আয়োজনে প্রয়াত ব্যান্ড লিজেন্ড আইয়ূব বাচ্চুকে ট্রিবিউট করে ‘একদিন ঘুম ভাঙা শহরে’ গানটি পরিবেশন করেন সোলস সদস্যরা। প্রথমবারের মতো লন্ডনে পারফর্ম করা প্রসঙ্গে সোলস ব্যান্ডের প্রধান পার্থ বড়ুয়া বলেন,‘ প্রথমবারের মতো সোলস লন্ডনে শো করেছে। হাজার হাজার প্রবাসী বাঙালিরা আমাদের গান উপভোগ করেছেন। বিশেষ করে সোলসের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে লন্ডন বাসীদের ‘কিতা ভাইসাব’ গানটি উপহার দিতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।’ উল্লেখ্য, ঈদ আনন্দমেলায় ছিল প্রায় দুই শতাধিকেরও বেশি স্টল। সকাল থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে লন্ডন প্রবাসী বাঙালিদের মিলনমেলা।ইংল্যান্ডের বিভিন্ন শহর থেকে লন্ডনে এসেছিলেন নারী পুরুষ শিশু আবালবৃদ্ধবনিতা থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা।এসেছিলেন মারজুক রাসেল, হাবু ও সাব্বির শিশুসহ বেশ কয়েকজন নাট্য অভিনেতা। লন্ডনে বসবাসকারী স্বাধীন খসরু সহ স্হানীয় অনেক শিল্পী। কিন্তু স্হানীয় শিল্পীরা সুযোগ পাননি বলে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

জাতীয়

স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার রূপকার সিরাজুল আলম খান (দাদা) স্মরণে সার্বজনীন স্মরণসভা

বিলেতের আয়না ডেক্স :- মাহমুদুর রহমান শানুর স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার রূপকার সিরাজুল আলম খান (দাদা) স্মরণে সার্বজনীন স্মরণসভা গত ১০ই জুলাই ২০২৩ইং বাংগালী জাতিরাষ্ট্রের রূপকার সিরাজুল আলম খান (দাদা) স্মরনে পূর্বলন্ডনের স্থানীয় একটি হলে অনুষ্ঠিত হলো সার্বজনীন স্মরণসভা। দলমত নির্বিশেষে উক্ত স্মরণসভায় উপস্থিত বক্তারা বলেন, সিরাজুল আলম খান (দাদা) স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৬২ সালে কাজী আরিফ আহমদ ও আবদুর রাজ্জাক সমন্বয়ে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা নিউক্লিয়াসের জন্ম দেন। ছাত্রলীগের একজন প্রজ্ঞাবান ও জনপ্রিয় নেতা হিসাবে স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য নিউক্লিয়াসের সদস্য সংগ্রহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বক্তারা আরো বলেন, ১৯৬৬ইং সালের ৬ দফা ও ১১ দফা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৬৯ইং সালে আয়ূব বিরোধী আন্দোলন ও গণ অভ্যূত্থানের নেপথ্য কারিগর সিরাজুল আলম খানের নাম বাংলাদেশের স্বাধীকার আন্দোলন এবং স্বাধীনতার ইতিহাসে স্বর্নাক্ষরে লিখা থাকবে। বক্তারা আরো বলেন, সিরাজুল আলম খানের অবদানকে স্মরণ এবং বাঁচিয়ে রাখা সমগ্র বাঙ্গালি জাতির নৈতিক দায়িত্ব। স্মরণসভা শুরু হয় মাওলানা আবদুল কুদ্দুসের পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও মোনাজাতের মাধ্যমে। জাতীয় সংগীতের পর মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে দাড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সিরাজুল আলম খান (দাদা)র জীবন ও কর্মের উপর প্রদর্শিত হয় একটি প্রামান্যচিত্র। স্মরণসভার বক্তৃতা পর্ব শুরু হয় স্মরণসভা আয়োজক কমিটির আহব্বায়ক আবুল কালাম আজাদের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ডাঃ গিয়াসউদ্দিন আহম্মদ, সাবেক ছাত্রনেতা ভিপি হারুন এবং সিরাজুল আলম খান (দাদা)কে উৎসর্গ করে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন এডভোকেট মজিবুল হক মনি। কবিতা পাঠ করেন আবু জাফর প্রমূখ। বিলাতের জনপ্রিয় উপস্থাপক জনাব মেসবাহ জামালের প্রানবন্ত উপস্থাপনায় উক্ত স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন, প্রবীন সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা গাজিউল হাসান খান, জার্মান প্রবাসী প্রবীন রাজনীতিবিদ গোলাম কিবরিয়া, আবু আহমেদ খিজির (আইটি বিশেষজ্ঞ), বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মিফতা ইসলাম, বাংলাদেশ জাসদ কেন্দ্রীয়নেতা শামিম আহম্মদ, জাসদনেতা মতিউর রহমান মতিন, বিবিসিসি আই’র প্রেসিডেন্ট সাঈদুর রহমান রেনু, গ্রেটার সিলেট ডেভলপমেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিষ্টার আতাউর রহমান, প্রবীন সাংবাদিক আবু তাহের চৌধুরী, ড. কামরুল হাসান, সাবেক ছাত্রনেতা সেলিম খান, জাসদনেতা আবদুর রাজ্জাক, মজিবুর রহমান মজিব (রাজনীতিবিদ), সাংবাদিক নজরুল ইসলাম বাসন, সাংবাদিক মহিব চৌধুরী সহ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আবুল কালাম, মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. কামরুল হাসান, সমাজকর্মি রহমান জিলানী, নুরুল আমিন (কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ইতালি), সাবেক স্পীকার কাউন্সিলার আহবাব হোসেন, জাসদ নেতা মাহমুদুর রহমান শানুর, কমিউনিটি নেতা আব্দুল বাসিত, কাউন্সিলর শহিদুল্লাহ খান, মিসেস কিবরিয়া, বাতিরুল হক সরদার, মিসেস জাফর, প্রফেসর দেবব্রত চৌধুরী, একাউন্টেন্ট মজিবুর রহমান, এনাম আহমেদ, সেলিম খান, নুরুন নবী, মো: আশরাফ উদ্দিন (ব্যবসায়ী), মো: জসিম উদ্দিন, শাহ আতিকুল হক খান, হাসান শাহরিয়ার সহ কমিউনিটির বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার বিশিষ্টব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন, সিরাজুল আলম খান স্বাধীনতা আন্দোলনের রূপকার ছিলেন। তাঁর মুখেই প্রথম উচ্ছারিত হয়েছিল অগ্নিঝরা শ্লোগান বীর বাঙ্গালী অস্ত্র ধর-বাংলাদেশ স্বাধীন করো। ১৯৭১ইং ২রা মার্চ তৎকালীন ডাকসু ভিপি আ স ম আবদুর রবের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন এবং ৩রা মার্চ শাজাহান সিরাজের মাধ্যমে স্বাধীনতার ইশতিহার পাঠ তাঁরই চিন্তা প্রসূত কর্মসূচি। বক্তারা বলেন, অর্থ-সম্পদের লোভ, পদ-পদবীর লোভ, ক্ষমতার লোভসহ কোন কিছু তাঁকে আকৃষ্ঠ করতে পারেনি। তিনি দেশের মানুষের অধিকার আদায়ে ছিলেন সদা সক্রিয় একজন মানুষ। দেশ ও জাতি গঠনে বাঙ্গালির স্বকীয়তা অক্ষুন্ন রেখে ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থাকে বিলুপ্ত করে বৈষম্য ও শোষনের অবসানের মাধ্যমে স্বাধীন দেশ, উপযোগি গণমুখি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তনের উদ্দেশ্যে ১৯৬২ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত পুরো সময়টাই বিরামহীনভাবে যে কষ্ট,ত্যাগ, কারাবরণ এবং মৃত্যু ঝুকি নিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য যিনি সর্বদাই সক্রিয় ছিলেন, তিনি সিরাজুল আলম খান। বক্তারা আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সার্বক্ষনিক ঘনিষ্টসহচর হিসাবে পরিচিত সিরাজুল আলম খান ৬ দফা ও ১১ দফা দাবী আদায়ের আন্দোলনকে গণমুখি ও চিন্তা চেতনা এবং অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতার মাধ্যমে পরবর্তী আন্দোলন সংগ্রামে নতুন পদ্ধতি গ্রহন করতেন, তারই নাম সিরাজুল আলম খান (দাদা)। আগড়তলা ষড়ন্ত্র মামলা মোকাবিলায় রাজপথে ছাত্র-শ্রমিক, যুবক, ডান-বামকে একত্রিত করে গণ আন্দোলন গড়ে তোলায় নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সংগঠক ছিলেন।

Scroll to Top