জুন ২৫, ২০২৩

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন সিসিক নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন সিসিক নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন সিলেট সিটি রোববার (২৫জুন) দুপুর ১২ টায় তিনি সস্ত্রীক গণভবনে পৌঁছান এবং প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে সিলেটবাসীর ভালোবাসার মর্যাদা দিতে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো অগ্রাাধিকার ভিত্তিতে সমাধানের জন্য পরিকল্পনা ও কাজ শুরুর পরামর্শ দেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকার উন্নয়নে সরকারের সার্বিক সহযোগীতার আশ্বাস দেন। সাক্ষাতকালে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সাথে ছিলেন তার স্ত্রী হলি চৌধুরী ও দুই ছেলে রুহানুজ্জামান চৌধুরী ও রুম্মানুজ্জামান চৌধুরী।  

জাতীয়

এ বছর হজ্জ পালন করবেন ২৫ লাখ মুসলিম।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- এ বছর হজ্জ পালন করবেন ২৫ লাখ মুসলিম। পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরবের মক্কায় হাজির হয়েছেন লাখ লাখ মুসলমান। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতিহাসের অন্যতম বড় হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে সাদা কাপড়ে আবৃত হাজার হাজার মানুষ কাবাঘর তাওয়াফ করতে শুরু করেছেন। স্থানীয় সময় রবিবার থেকেই মক্কায় তাওয়াফ শুরু করেন হজ যাত্রীরা। সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা এবারই হতে চলেছে ইতিহাসের বৃহত্তম হজের আয়োজন। সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘এ বছর আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ প্রত্যক্ষ করতে চলেছি। ’ মন্ত্রণালয়টি আশা করছে, এবার হজ পালন করবেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ২৫ লাখের বেশি মানুষ। করোনার বিধিনিষেধ পুরোপুরি উঠে যাওয়ায় এবার আগের বছরের তুলনায় বহু পরিমাণে বেড়েছে হজযাত্রীর সংখ্যা। করোনা বিধি কাটিয়ে ২০২২ সালে ১০ সালের মতো মানুষ হজ কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিলেন। মিসর থেকে হজ করতে আসা ৬৫ বছর বয়সী আবদেল আজিম বলেছেন, ‘আমি আমার জীবনের সবচেয়ে ‍সুন্দর দিনগুলো কাটাচ্ছি। ’ তিনি গত ২০ বছর ধরে হজের জন্য অর্থ সঞ্চয় করেছেন। হজের জন্য তার খরচ হচ্ছে ছয় হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যা ছয় লাখের একটু বেশি। রবিবার সন্ধ্যায় হজযাত্রীরা মিনায় পথে রওয়ানা দেবেন। মক্কা থেকে যে স্থানের দূরত্ব আট কিলোমিটারের মতো। এরপর তারা যাবেন আরাফাতের ময়দানে। হজ যাত্রীদের নিরাপত্তায় মিনায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে সৌদি আরবের তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রির আশপাশে অবস্থান করছে। ফলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখাটাই সৌদি কর্তৃপক্ষের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

জাতীয়

মহাকাব্যের চরিত্র সিরাজুল আলম খান। আ স ম আব্দুর রব।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- মহাকাব্যের চরিত্র সিরাজুল আলম খান। আ স ম আব্দুর রব। বাঙালি জাতির মহাকাব্যের অন্যতম চরিত্র সিরাজুল আলম খান দাদাকে নিয়ে আমার আত্মায় বহন করা, অগণিত উপলব্ধি এবং জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কিছু মহৎ কীর্তি নিয়ে কয়েকটা কথা বলব ভেবে রেখেছিলাম। কিন্তু দাদা না ফেরার দেশে যাওয়ার পর আমার বলা বা লেখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। হয়তো বা এই জীবনে এই অসম্ভবকে সম্ভব করা আর হবে না। আমার কোনো জীবনী প্রকাশিত হয়নি বা কোনো জীবনী লিখেও যাইনি। ফলে দাদার সঙ্গে প্রায় ছয় দশকের সম্পর্কের অনেক ঘটনাই কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তবু কিছু বক্তব্য প্রকাশের তাগিদ অনুভব করছি। সিরাজুল আলম খান কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন, তাঁর বাবার মৃত্যুতে। আমি তখন নোয়াখালী ছাত্রলীগের কর্মী। ছাত্রলীগ নেতা খালেদ মোহাম্মদ আলী ভাই আমাকে নিয়ে গেলেন, সিরাজুল আলম খানের কাছে। ‘ও হচ্ছে রব, যার কথা আপনাকে আমি আগেই বলেছিলাম’। খালেদ মোহাম্মদ আলীর কথায় দাদা আমার দিকে তাকালেন। দাদাকে এই প্রথম দেখা। বুদ্ধিমান, দৃঢ়চেতা, তেজী স্বভাবের মর্যাদাসম্পন্ন একজন যুবক দেখলাম। অদ্ভুত মমত্ববোধ করলাম। কিছু কথা হলো, তারপর মাটি স্পর্শ করে শপথ নিলাম। সেই শুরু। ক্রমাগত নেতা, নির্দেশদাতা, রাজনৈতিক-দার্শনিক শিক্ষক এবং নৈতিক কর্তৃত্বপূর্ণ অভিভাবক। সশস্ত্র মুক্তি-সংগ্রামের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধ সৃষ্টি হলে দাদার ওপর আমাদের আস্থা এবং বিশ্বাসকে কেউ ভাঙতে পারেনি। ফলে ক্ষমতার মোহ আমাদের আবদ্ধ করতে পারেনি। দীর্ঘস্থায়ী সংগ্রামে জীবনবিপন্ন বিপদে নাম তালিকাভুক্ত করেছিলাম। সদ্য স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু অবিসংবাদিত নেতা, শুধু আদর্শিক স্বপ্নের সংঘাতে সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর বিপরীতে রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েছিলাম। প্রচণ্ড রাজনৈতিক বিরোধ হয়েছে, অনেক সিদ্ধান্তে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছি, বিতর্কিত হয়েছি কিন্তু কোনো মতপার্থক্য, বিরোধ, ভুল বোঝাবুঝির অজুহাতে একদিনের জন্যও সিরাজুল আলম খানকে ছেড়ে যাইনি। কারণ, আমি বিশ্বাস করতাম-সমাজ বিশ্লেষণ, আন্দোলন ও সংগ্রামের কৌশলের প্রশ্নে সিরাজুল আলম খান অদ্বিতীয়, অসাধারণ এবং অনন্য। ভুল হতে পারে কিন্তু উদ্দেশ্য মহৎ। কোনো ব্যক্তিগত লাভালাভ দিয়ে তিনি কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না। সব সময় বিশ্বাস করেছি পরিস্থিতি অনুযায়ী এটাই হয়তো সবচেয়ে ন্যায়সংগত ও বাস্তবসম্মত মূল্যায়ন। সিরাজুল আলম খান স্কুল এবং কলেজজীবনে মুক্তি-সংগ্রামের নেতা মহাত্মা গান্ধী, টিটো, নাসের, লুবুম্বা এবং নক্রুমার ইতিহাস পড়েন, অসম সাহসিকতা ও অকুতোভয় নেতৃবৃন্দের জীবনী পড়েন, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুসহ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মহানায়কদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত হতে থাকেন। অন্যদিকে আব্রাহাম লিংকনের ‘গেটিসবার্গ’ বক্তৃতা, মার্টিন লুথার কিংয়ের ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’ এসব অবিস্মরণীয় ভাষণ থেকে নিজের চেতনা শানিত করেন। লেনিন, ফিদেল কাস্ত্রো ও চে গুয়েভারার মতো গণমানুষের ত্রাণকর্তা এবং ইতিহাসের অতুলনীয়, অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বের দ্বারা তিনি প্রভাবিত হতে থাকলেন। ভাষা আন্দোলন, হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট এবং ঐতিহাসিক ২১ দফা, আইয়ুববিরোধী গণবিক্ষোভ সবকিছু তাঁর চেতনায় দাগ কেটে গেল। ভূগোল ও ইতিহাসে বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার ঐতিহাসিক ঘটনাবলির ওপর গভীর মনোযোগী হলেন। মাত্র ২১ বছর বয়স। খ্যাতি, অর্থ বা পদমর্যাদা কোনোটাই তাঁকে অনুপ্রেরণা জোগায়নি। তাঁর মনে উদিত হয়েছে জাতিসত্তার অস্তিত্ব রক্ষার্থে স্বাধীনতা ও স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। মনে প্রশ্নের উদয় হয়েছে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও কণ্টকাকীর্ণ বিপ্লবের পথ। ‘নিউক্লিয়াস’ বা ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’ গঠিত হয়েছিল সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমদের সমন্বয়ে। ছাত্র আন্দোলন, ছয় দফা, এগারো দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার আন্দোলন, বিএলএফ ও জয়-বাংলা বাহিনী গঠনসহ সব ছাত্র আন্দোলন গণবিক্ষোভ, গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন, পতাকা উত্তোলন, ইশতেহার পাঠ, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণসহ বিশেষ-বিশেষ ঘটনা এখন ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হচ্ছে। নিউক্লিয়াসের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকের নাম এখন ইতিহাসে ঠাঁই পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অন্যতম কারিগরদের একজন-কাজী আরেফ আহমদ তাঁর ‘বাঙালির জাতীয় রাষ্ট্র’ গ্রন্থে বলেছেন- ’৬৮, ’৬৯ ও ’৭০-এ অনুষ্ঠিত আন্দোলন এবং এর খুঁটিনাটি পর্যায়, কৌশল প্রণয়ন ও গ্রহণ- সবকিছুই এককভাবে নিউক্লিয়াসের পক্ষ থেকে সিরাজ ভাই ঠিক করতেন। আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি, বিভিন্ন স্তর ইত্যাদি বিষয়ে তাঁর দক্ষতা ও নিপুণতা, পরবর্তী সময়ে সত্তরের নির্বাচন এবং অবাঙালি প্রশাসন ভেঙে পড়লে সমান্তরাল প্রশাসনিক কর্মকৌশল ও তাঁর জ্ঞানের পরিধি- সবার কাছে জাতীয় পর্যায়ের এক অপ্রতিরোধ্য ব্যক্তি হিসেবে তাঁকে পরিচিত করে। বিভিন্ন আন্দোলনকে গণমুখী করার কৌশল অবলম্বনের কৃতিত্ব এককভাবে ‘নিউক্লিয়াস’-এর। সিরাজুল আলম খান ‘নিউক্লিয়াস’র প্রাণ। অতি সহজে এবং স্বল্প সময়ে সশস্ত্র যুদ্ধের পরিকল্পনা ও পরিচালনার ক্ষেত্রে সংগঠিত সংগঠনসমূহের ভূমিকা ভারতীয় সমর বিশেষজ্ঞদেরও অবাক করে দিয়েছিল। সিরাজুল আলম খানের এ ধরনের তৎপরতা এবং নিউক্লিয়াসের কার্যক্রম- কিউবা ও আলজেরিয়ার স্বাধীনতা অর্জনের সময়কার সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করা যায়। নোয়াখালী থেকে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই আমি নিউক্লিয়াসের ব্যাপক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়ি। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়া, সরাসরি ছাত্রদের ভোটে ডাকসুর ভিপি হওয়া, স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠন, পতাকা উত্তোলনসহ সব পরিকল্পনা ও কৌশল নির্ধারণ করেছেন সিরাজুল আলম খান। সংগঠনের অভ্যন্তরে ‘কূটনীতি’, ‘গ্রুপিং’ বা ‘লবিং’ কোনোটাই আমার জানা ছিল না। কিন্তু আমার পদ-পদবি, ঐতিহাসিক দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণে দাদাই ছিলেন আমার একমাত্র পথপ্রদর্শক। তিনি আমার আশীর্বাদ। আজকের বাস্তবতায় কল্পনাও করা যায় না, তখনকার সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে কী সংকটের মধ্য দিয়ে আমাদের কর্ম পরিচালনা করতে হয়েছে। দাদা ছিলেন স্বাধীনতা অন্তঃপ্রাণ, স্বাধীনতা উদ্দীপ্ত অভিযাত্রী, কোনো সংকটই তাকে নিভৃত করতে পারেনি। কোনো বাধা-বিঘ্ন তাঁকে নিরুৎসাহিত করতে পারেনি। না খেয়ে থাকা, পকেট খালি থাকা, আত্মগোপনে থাকা, গ্রেফতার হওয়া, অপঘাতে মৃত্যু- সবকিছুর জন্যই তিনি নৈতিকভাবে প্রস্তুত থাকতেন। সব বিপদ-আপদ অগ্রাহ্য করে, নিজের কাঁধে দায় তুলে নিয়ে, পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করে আন্দোলন-সংগ্রামের নতুন পদ্ধতি গ্রহণ করতেন- এটাই সিরাজুল আলম খান। স্বাধীনতার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু ও সিরাজুল আলম খানের ভূমিকা, অবদান, পারস্পরিক আস্থা, তৎকালীন রাজনৈতিক বাস্তবতার আলোকে বিচার করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির যে লৌহকঠিন ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তা হাজার বছরে আর কারও পক্ষে সম্ভব হয়নি বা হবেও না। অন্যদিকে আন্দোলন-সংগ্রামকে স্বাধীনতার লক্ষ্যে ধাবিত করার প্রাণপুরুষ ছিলেন সিরাজুল আলম খান। বঙ্গবন্ধু ও সিরাজুল আলম খান দুজনই জাতিরাষ্ট্রের জন্য অনিবার্য। তাঁদের একজনের অনুপস্থিতিতে বাঙালির জাতিরাষ্ট্র ‘বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ কঠিন হয়ে পড়ত। ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী লড়াইয়ে বঙ্গবন্ধুই ছিলেন সিরাজুল আল খানের নির্ভরশীল ও আপসহীন নেতা। সুতরাং বঙ্গবন্ধু কাল্ট সৃষ্টিতে দাদা সর্বকৌশল প্রয়োগ করেছেন। ১৯৬৯ সালে গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করায়- রেজাউল হক চৌধুরী মোস্তাক কর্তৃক ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি এবং তোফায়েল আহমেদের মাধ্যমে বিশাল জনসভায় তা ঘোষণা করানোর পরিকল্পনা- সবই ছিল সিরাজুল আলম খানের। ইশতেহারে সিরাজুল আলম খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক ঘোষণা করেন। সশস্ত্র মুক্তি-সংগ্রামের পর বিএলএফের অস্ত্র জমা প্রদান অনুষ্ঠানে মাইকের সামনে সিরাজুল আলম খান নিজেই ‘মুজিববাদ’ স্লোগান উত্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধু-বিহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন সিরাজুল আলম খানের কোনো দিন ছিল না। তাই স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধের আকাক্সক্ষায় রাষ্ট্রীয় রাজনীতির আলোকে শাসনব্যবস্থা প্রণয়নের দাবিতে বঙ্গবন্ধুর কাছে সিরাজুল আলম খান ১৫ দফা সুপারিশমালা উত্থাপন করেছিলেন। এই ১৫ দফার ৩ নম্বর প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ‘বঙ্গবন্ধুর মর্যাদার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বঙ্গবন্ধু থাকবেন সব দলের ঊর্ধ্বে। প্রয়োজন

আন্তর্জাতিক

বিদ্রোহীরা নিজ , ঘাঁটিতে ফিরে যাচ্ছে- ওয়াগনার।

বিলেতের আয়না ভেক্স :- বিদ্রোহীরা নিজ , ঘাঁটিতে ফিরে যাচ্ছে- ওয়াগনার। বিদ্রোহী রাশিয়ান ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার গ্রুপ রক্তক্ষয় এড়াতে নিজেদের ঘাঁটিসমূহে ফিরে যেতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতা ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। খবর রয়টার্স’র। শনিবার টেলিগ্রাম-এ এক অডিওবার্তায় প্রিগোজিন বলেছেন, ২৪ ঘণ্টায় আমরা মস্কোর ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে গিয়েছিলাম। এখন এমন একটা সময় হয়েছে যখন রক্তক্ষয় শুরু হতে পারে। রুশ রক্তপাত ঘটতে পারে — এ বিষয়টির সম্পূর্ণ দায়ভার নিয়ে আমরা রণক্ষেত্রের ঘাঁটিগুলোতে ফিরে যাচ্ছি। ওয়াগনারের মস্কোমুখী অগ্রগতি থামানো এবং তার বিনিময়ে বিদ্রোহীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো’র মধ্যস্থতায় একটি সমঝোতা করা হয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিনের সঙ্গে আজ সারাদিন ধরে আলোচনা করেছেন। এই সংলাপের প্রেক্ষিতে বিদ্রোহে ক্ষান্ত দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সম্মত হন প্রিগোজিন। লুকাশেঙ্কোর প্রেস সার্ভিস জানিয়েছে, আলোচনার বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্মতি ছিল। বেলারুশের প্রেসিডেন্টের দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘তার বাহিনীর মস্কো অভিমুখে যাত্রা বন্ধ করতে রাজি হয়েছেন প্রিগোজিন। একইসঙ্গে, উত্তেজনা প্রশমনে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। ‘ দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি অনুসারে, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেয়েছে ওয়াগনার যোদ্ধারা। কিন্তু, প্রিগোজিন ও তার ভাড়াটে সেনাদের আর কী কী প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। এর আগে শনিবার (২৪ জুন) মস্কো অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছিল ওয়াগনার সেনাবহর। তাদের থামাতে এক পর্যায়ে হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ করে রাশিয়ান সেনাবাহিনী।

আন্তর্জাতিক

ওয়াগনার বিদ্রোহ ঘোষণা কীভাবে মোকাবিলা করবে মস্কো।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- ওয়াগনার বিদ্রোহ ঘোষণা কীভাবে মোকাবিলা করবে মস্কো। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই যে বেসরকারি ভাড়াটে সেনাদলের তৎপরতা নিয়মিত বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনামে হয়েছে। সেই ওয়াগনার গ্রুপ ছিল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের জন্য এক বড় ভরসার জায়গা। রাশিয়ার নিয়মিত সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি ওয়াগনার গ্রুপের সৈন্যরা তীব্র লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রণাঙ্গনে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র, ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন এখন নিজেই বিদ্রোহ করেছেন মস্কোর সামরিক নেতৃত্বে বিরুদ্ধে, তার বাহিনী এখন এই সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের জন্য মস্কো পর্যন্ত যাবে বলে হুমকি দিয়েছেন। রাশিয়ায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাহিনী এবং মি. প্রিগোশিনের অধীন ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনী এখন কার্যত মুখোমুখি। উভয়পক্ষই বিরোধী শিবিরের সৈন্যদের প্রতি পক্ষত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছে। কিন্তু কাদের পাল্লা ভারী তা এখনো বোঝা মুশকিল। রাশিয়া এক গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত হচ্ছে। যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশংকা বাড়ছে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ দৃষ্টি রাখছেন। কিন্তু মি. প্রিগোশিনের বাহিনীর কি আসলেই মস্কো পর্যন্ত যাওয়ার সেই সক্ষমতা আছে? নাকি তিনি ক্রেমলিনকে ব্ল্যাক-মেইল করতে চাইছেন? মি. প্রিগোশিন দাবি তার বাহিনীতে ২৫ হাজার সশস্ত্র যোদ্ধা আছে। এদের অনেকেই বহু মাস ধরে পূর্ব ইউক্রেনে তীব্র লড়াইয়ে লিপ্ত ছিল। সাম্প্রতিক দিনগুলিতে ওয়াগনার গ্রুপ তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করে রুশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো সরিয়ে নিচ্ছিল, বিশেষ করে রোস্তভ এবং বেলগোরডে। কিন্তু ওয়াগনার গ্রুপের বেশিরভাগ সৈন্য মস্কো থেকে বহু দূরে। মস্কো পর্যন্ত যেতে হলে মি. প্রিগোশিনের বাহিনীকে শত শত মাইল পথ পাড়ি দিতে হবে। ওয়াগনার গ্রুপ দাবি করছে, এরই মধ্যে তারা ইউক্রেন সীমান্তবর্তী শহর রোস্তভ দখল করে নিয়েছে। ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মাত্র একশো কিলোমিটার দূরের এই শহরে আছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের মূল কেন্দ্র। রুশ বাহিনীকে সামরিক রসদ সরবরাহের ক্ষেত্রেও এই শহরটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন সূত্রের খবরে দাবি করা হচ্ছে, এটি এখন ওয়াগনার গ্রুপের দখলে। রোস্তভ শহরের একজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, পুরো শহরের কেন্দ্রস্থল ঘিরে অবরোধ স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে অনেক সৈন্য অবস্থান নিয়েছে। “শহরের পরিস্থিতি শান্ত, এখানে কোন আতংক নেই। সবকিছু অন্য যে কোন দিনের মতোই স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে”। এদিকে রোস্তভ অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি গুলুবেভ সেখানকার জনগণের প্রতি প্রেসিডেন্ট পুতিনের পক্ষে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক বার্তায় বলেন, “রাশিয়ার ইতিহাসে এমন অনেক সময় এসেছে যখন আমাদের জনগণকে বিভক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে, গৃহযুদ্ধের উস্কানি দেয়ার চেষ্টা হয়েছে- এর ফলে বিপর্যয় ঘটেছে। কিন্তু এটি ঘটতে দেওয়া যাবে না। রোস্তভ অঞ্চল প্রেসিডেন্ট পুতিনের পক্ষে আছে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।” ইন্সটিটিউট ফর দ্যা স্টাডি অব ওয়ার নামে একটি গবেষণা সংস্থার মতে, রোস্তভে রুশ বাহিনীর অবস্থানের জন্য কোন হুমকি তৈরি হলে তার একটি বিরাট প্রভাব পড়তে পারে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার লড়াইয়ের ওপর। সূত্র: বিবিসি বাংলা  

আন্তর্জাতিক

পুতিনের বাবুর্চি থেকে ওয়াগনার প্রধান।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- পুতিনের বাবুর্চি থেকে ওয়াগনার প্রধান। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে উৎখাতে বিদ্রোহের ডাক দেওয়া ওয়াগনার প্রধান প্রিপোশিন ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার পরই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের নজর কাড়েন। যুদ্ধের শুরু থেকেই তিনি একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। নতুন করে তিনি আবার আলোচনায় এসেছেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ডাক দিয়ে। শুক্রবার এক অডিওবার্তার মাধ্যমে তিনি বিদ্রোহের ডাক দেন। তবে ওয়াগনার প্রধানের সঙ্গে পুতিনের পূর্বেই ঘনিষ্ঠতা ছিল। পুতিনের সঙ্গে তার এতটাই ঘনিষ্ঠতা ছিল যে রাশিয়ায় তিনি পরিচিতি পেয়েছিলেন ‘পুতিনের বাবুর্চি’ নামে। পিএমসি ওয়াগনারের শীর্ষ কমান্ডার ইয়েভগেনি প্রিগোশিন ১৯৬১ সালে জন্ম নেন। ঘটনাচক্রে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং প্রিগোশিনের জন্ম একই শহরে। রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সেন্ট পিটার্সবার্গে। ইয়েভগেনি প্রিগোজিন একাধিকবার কারাবাসের সাজা খাটা আসামিও। ১৯৭৯ সালে, আঠারো বছর বয়সে চুরির অভিযোগে আড়াই বছর কারাগারে ছিলেন তিনি। সেই সাজা খেটে বের হওয়ার দু’বছর পর আবারও চুরি-ডাকাতির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে এবং আদালতে সেসব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া ১৩ বছর কারাবাসের সাজা হয় তার। পরে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গে হটডগ ও অন্যান্য ফাস্টফুড বিক্রির দোকান খোলেন। একই সময়ে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও পরিচয় হয় তার। পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্টতার সূত্রে ক্রেমলিন ও সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে তিনি পরিচিতি পান ‘পুতিনের বাবুর্চি’ নামে। পরে এই নাম তার পরিচিত মহলেও ছড়িয়ে পড়ে। ক্রেমলিনের সঙ্গে দহরম মহরম সম্পর্ক থাকায় গোটা নব্বইয়ের দশক এবং তার পরের দশক বিভিন্ন লোভনীয় সরকারি ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন তিনি। এখান থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়েই বেসরকারি সামরিক কোম্পানি পিএমসি ওয়াগনার গড়ে তুলেছেন ইয়েভগেনি প্রিগোশিন, তারপর নিজেই হয়েছেন এই কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহী ও কমান্ডার। পিএমসি ওয়াগনার গ্রুপের যোদ্ধাদের অধিকাংশই জীবনের কোনো না কোনো সময় কারাগারে সাজা খেটে আসা আসামি। মূলত অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন দেশের সরকারি বাহিনীর সহযোগী হিসেবে যুদ্ধ করে ওয়াগনার গ্রুপ। সূত্র : বিবিসি

Scroll to Top