জানুয়ারি ২৪, ২০২৩

জাতীয়

স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে না আনলে দেশ টিকবে না — হাইকোর্ট

বিলেতের আয়না ডেক্স :- স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে না আনলে দেশ টিকবে না — হাইকোর্ট স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে হবে, দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে না পারলে দেশ টিকবে না বলে মন্তব্য করেছেন আদালত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে উদ্দেশ করে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। হাইকোর্ট বলেন, কারাগারে থাকা মানুষদেরও স্বাস্থ্য সেবার অধিকার আছে। সেবাটা দেওয়া দরকার। আমাদের তো কাউকে ডাকতে মন চায় না। এটা শোভনীয় নয়। আমরা অনেক সময় দিয়ে থাকি। বার বার সময় দেওয়ার পরও যখনও আদালতের আদেশ মানা হয় না, তখন আমরা বাধ্য হয়ে ডাকি। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, এটা কনসিডার করেন। স্বাস্থ্য খাতের বিষয়টি কোভিডের কারণে হয়েছে। এ সময় হাইকোর্ট বলেন, সরকার তো কোনো খাতেই টাকা কম দেয় না। ফরিদপুর মেডিকেলে দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে আদালত বলেন, একটি জিনিসের দাম বাজারের তুলনায় ৪০০ গুণ হতে পারে না। বিদেশিরা দেশ চালায় না। আমরা নিজেরা দেশ চালাচ্ছি। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে বলেন, সব জায়গায় ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ডায়াসের সামনে ডেকে বলেন, এ দেশের মানুষ কিন্তু গরিব। মানুষ বিপদে পড়লেই ডাক্তারের কাছে যায়। এটা একটা মহান পেশা। ডাক্তাররাও সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেবা দেয়। তাদের ব্যক্তি জীবন আছে বলে মনে হয় না। তারপরও মানুষ সেবা পায় না। আপনি বিষয়টি দেখবেন। গরিব দেশ হিসেবে যথেষ্ট টাকা স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেয় সরকার। অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে কোনো কিছু গেলে আপনারা গুরুত্ব দেবেন। এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আদালতে বলেন, অনিইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে বিলম্ব হয়েছে। এরকম ভুল আর হবে না। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। পরে আদালত এই মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২ মে দিন ধার্য করেন। এর আগে সকালে দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন না করায় হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। মঙ্গলবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চে লিখিতভাবে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন। গত ১৭ জানুয়ারি দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় তার ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেন হাইকোর্ট। ২৪ জানুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও কারা কর্তৃপক্ষকে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। অ্যাডভোকেট মো. জে আর খান রবিন ওইদিন বলেছিলেন, কারা কর্তৃপক্ষ আজ প্রতিবেদন দাখিল করে বলেছেন, কারাগারগুলোতে ৯৩ জন চিকিৎসক নিয়োগ ও সংযুক্ত করা হয়েছে। ৪৮টি পদ শূন্য রয়েছে। শূন্যপদে নিয়োগের জন্য সময় প্রয়োজন। পরে আদালত ৮ জানুয়ারির মধ্যে শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ দেন। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দিয়ে জানানো হয়, দেশের ৬৮টি কারাগারে ১১২ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ১৪১টি পদের মধ্যে এই ১১২ পদে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাকি থাকা শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

জাতীয়

জাতীয় সংসদে সর্বজনীন পেনশন বিল পাস

বিলেতের আয়না ডেক্স :- জাতীয় সংসদে সর্বজনীন পেনশন বিল পাস দেশের সব নাগরিককে পেনশনের আওতায় আনতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ পাস করা হয়েছে। বিলে ১৮ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী সব নাগরিকের জন্য নির্ধারিত হারে চাঁদা পরিশোধ করে ৬০ বছর পূর্তির পর আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্বরাও এই আইনের আওতায় নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা পরিশোধ করে পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ থেকে নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা দেওয়া শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হবেন, সে বয়স থেকে আজীবন পেনশন প্রাপ্য হবেন। আজীবন বলতে পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত বিবেচনা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাস করার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। তবে কয়েকটি সংশোধনী গৃহীত হয়। এর আগে বিলটি সরাসরি সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে বিলটি পাস না করে ফেরৎ পাঠানো বা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানোর পক্ষে বক্তব্য রাখেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, ফখরুল ইমাম, মুজিবুল হক চুন্নু, পীর ফজলুর রহমান ও শামীম হায়দার পাটোয়ারি এবং স্বতন্ত্র সদস্য রেজাউল করিম বাবলু। পেনশন আইনে বলা হয়েছে, চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিলে মাসিক পেনশন পাবেন। চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জীভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন দেওয়া হবে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন। আইনে আরও বলা হয়েছে, নিম্ন আয় সীমার নিচের নাগরিকদের অথবা অস্বচ্ছল চাঁদাদাতার ক্ষেত্রে পেনশন তহবিলে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসেবে দিতে পারবে। একজন পেনশনার আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন। তবে পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে তার নমিনি অবশিষ্ট সময়ের জন্য (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন। চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে মারা গেলে জমা করা অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে। বিলে আরও বলা হয়েছে, পেনশন তহবিলে জমা দেওয়া অর্থ কোনো পর্যায়ে এককালীন তোলার প্রয়োজন পড়লে চাঁদাদাতা আবেদন করলে জমা দেওয়া অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে তুলতে পারবেন, যা ফিসহ পরিশোধ করতে হবে। আইনে পেনশন থেকে পাওয়া অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে এবং পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতিতে সরকারি অথবা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারবে। এক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে। তবে সরকারি সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত সরকারি ও আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা পেনশন ব্যবস্থার আওতাবহির্ভূত থাকবে। সরকার আইনের উদ্দেশ্য পূরণে প্রজ্ঞাপন জারি করে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন করবেন। এই আইন কার্যকর হওয়ার পর সরকার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পাঁচ সদস্যের একটি জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠন করবে। যার প্রধান হবেন নির্বাহী চেয়ারম্যান। অপর চারজন কর্তৃপক্ষের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এদের নিয়োগ করবে সরকার। তাদের চাকরির মেয়াদ ও শর্ত বিধি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ব্যয় সরকার নির্বাহ করবে। সরকারের অনুমোদন নিয়ে এ কর্তৃপক্ষ ঋণ নিতে পারবে বলে বিলে বলা হয়েছে। এছাড়া আইনের পেনশন ব্যবস্থাপনার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১৬ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। এর চেয়ারম্যান হবেন অর্থমন্ত্রী। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, এপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি, উইমেন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি এর সদস্য হবেন। পর্ষদের সদস্য সচিব হবেন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদের দফা (ঘ) এর বিধান অনুযায়ী, সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার ও অন্যান্য অভাবগ্রস্থার ক্ষেত্রে নাগরিকদের সরকারি সাহায্য লাভের অধিকারের বিধান অন্তভুক্ত করে একটি পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়ন আবশ্যক। চলমান উন্নয়নের অগ্রযাত্রার সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা ও দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীরকে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় আনার বিষয়টি নিশ্চিত কল্পে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন বিলটি প্রণয়ন করা সমচীন।

জাতীয়

সরকারি সেবাপ্রধান সহ জেলা প্রশাসকদের ২৫ দফা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- সরকারি সেবাপ্রধান সহ জেলা প্রশাসকদের ২৫ দফা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সামাজিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, জনসন্তুষ্টি অর্জন, বাজার মনিটরিং এবং জনগণকে সরকারি সেবা প্রধানসহ জেলা প্রশাসকদের ২৫ দফা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলের ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকটে জনগণের কল্যাণকেই সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। আর এজন্য সরকারি দফতরগুলোকে মিতব্যায়ী হবার নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ২৫ দফা নির্দেশনা হচ্ছে— ১. খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে। পতিত জমিতে ফসল ফলাতে হবে। কোনো জমি যেন অনাবাদি না থাকে সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। ২. নিজেরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে এবং জনগণকে এ ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। ৩. সরকারি অফিসসমূহে সাধারণ মানুষ যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বিঘ্নে যথাযথ সেবা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। সেবা প্রত্যাশীদের সন্তুষ্টি অর্জনই যেন হয় সরকারি কর্মচারীদের ব্রত। ৪. সরকারি তহবিল ব্যবহারে কৃচ্ছতা সাধন করতে হবে। ৫. এসডিজি স্থানীয়করণের আওতায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনে তৎপরতা জোরদার করতে হবে। ৬. দেশে একজনও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। গৃহহীনদের জন্য গৃহনির্মাণ, ভূমিহীনদের কৃষি খাস জমি বন্দোবস্তসহ সব সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে যেন প্রকৃত অসহায়, দুস্থ ও সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ সুযোগ পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। জমি ও ঘর দেওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। ৭. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের পাঠদান কার্যক্রমের মানোন্নয়নে উদ্যোগী হতে হবে। অপেক্ষাকৃত দুর্গম এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। ৮. কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রসমূহ যেন কার্যকর থাকে তা প্রতিনিয়ত তত্ত্বাবধান করতে হবে। ৯. শিশু-কিশোরদের শারীরিক-মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে তাদের জন্য প্রত্যেক এলাকায় সৃজনশীল চর্চা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও ক্রীড়া সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। ১০. নাগরিকদের সুস্থ জীবনাচারের জন্য জেলা ও উপজেলায় পার্ক, খেলার মাঠ প্রভৃতির সংরক্ষণ এবং নতুন পার্ক ও খেলার মাঠ তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। ১১. পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে উচ্চ প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তুলতে কাজ করতে হবে। ছবি: ফোকাস বাংলা ১২. সরকারি দপ্তরসমূহের ওয়েবসাইট নিয়মিত হালনাগাদ করতে হবে। নিজ নিজ জেলায় সরকারের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সাফল্য ওয়েবসাইটে তুলে ধরতে হবে। ১৩. জনসাধারণের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতকরণে কাজ করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার, গুজব ইত্যাদি রোধে উদ্যোগ নিতে হবে। ১৪. আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন কোনোভাবেই অবনতি না হয় সে লক্ষ্যে নজরদারি জোরদার করতে হবে। ১৫. মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে কেউ যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। ১৬. মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দূর করতে হবে। নিরীহ ধর্মপ্রাণ মানুষ যাতে জঙ্গিবাদে জড়িত না হয় সেজন্য সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। যুবসমাজকে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে মুক্ত রাখতে হবে। ১৭. বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং, খাদ্যে ভেজাল, নকল পণ্য তৈরি ইত্যাদি অপরাধ প্রতিরোধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে। ১৮. বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে, কৃত্রিম সঙ্কট রোধ ও পণ্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। ১৯. সরকারি জমি, নদী, বনভূমি, পাহাড়, প্রাকৃতিক জলাশয় প্রভৃতি রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকরণের উদ্দেশে নতুন সরকারি প্রতিষ্ঠান স্থাপনে ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণকে প্রাধান্য দিতে হবে। ২০. নিয়মিত নদী ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্যতা বাড়াতে হবে। সুইচগেট বা অন্য কোনো কারণে যেন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বিশেষ করে জলাবদ্ধতার জন্য যেন উৎপাদন ব্যাহত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ২১. বজ্রপাতপ্রবণ এলাকায় তালগাছ রোপণ করতে হবে। ২২. পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নতুন নতুন পর্যটন স্পট গড়ে তুলতে হবে। ২৩. জেলার নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষা এবং জেলাভিত্তিক বিখ্যাত পণ্যসমূহের প্রচার, বিপণন ও ব্র্যান্ডিং করতে হবে। ২৪. জনস্বার্থকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে রেখে সেবার মনোভাব নিয়ে যেন সরকারি দপ্তরগুলো পরিচালিত হয় সে লক্ষ্যে মনিটরিং জোরদার করতে হবে। ২৫. জেলার সব সরকারি দপ্তরের কার্যক্রমসমূহ যথাযথ সমন্বয়ের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আপনাদের ব্রতী হতে হবে।

জাতীয়

পাবলিক ডিপ্লোমেসি-অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)

বিলেতের আয়না বিশেষ রির্পোটঃ-পাবলিক ডিপ্লোমেসি-অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) নয়া দিল্লীর ইন্দিরা গান্ধি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শহরে প্রবেশ করার পথে পরে চানাক্যপুরীসহ বেশ কিছু অভিজাত এলাকা। বিশাল চওড়া রাস্তাঘাট, গ্রীন বেল্ট, সুরম্যসব দুতাবাস ভবন, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের সরকারী ভবন আর উর্দ্বতন সরকারী কর্মকর্তাদের বাসভবনের মন মাতানো সমারোহের ভীড়েও আলাদা করে দৃষ্টি কারে ভারতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয়একটি থিংক ট্যাংকের কার্যালয়টি। বিশাল এলাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই থিংক ট্যাংকটির প্রধান ভারতের উপরাষ্ট্রপতি স্বয়ং। তবে এর চেয়ে যা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো এই থিংক ট্যাংটির বয়স স্বাধীন ভারতের বয়সের চেয়েও বেশি। ভারত স্বাধীন হওয়ার ঢের আগের। ভারতের কংগ্রেস নেতৃত্ব ভারত স্বাধীন হওয়ার আগেই বুঝেছিলেন যে দেশটি একদিন দারিদ্রের তকমা ঝেড়ে ফেলে আবারো বিশ্বকে নেতৃত্ব দিবে। আর সেই ভারতের বিশ্ব ব্যাপি যে যোগাযোগ, সেই জায়গাটায় সরকারী ডিপ্লোমেসির পাশাপাশি পাবলিক ডিপ্লেমেসিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যে কারনে দুরদর্শী সেই নেতৃত্ব এই থিংক ট্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বলাই বাহুল্য তাদের সেই প্রজ্ঞা আজ শতভাগ সঠিক বলে প্রমানিত হয়েছে। সম্প্রতি কোলকাতায় বাংলা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড আয়োজিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বাঙালী সম্মেলনে যোগদিয়ে সদ্যই দেশে ফিরেছি। বিশ্বের শতাধিক মেট্রোপলিসে বসবাসরত বিশ্বের নানা দেশের নানা রঙের পাসপোর্টধারী খাস বাংলা ভাষাভাষী বাঙালীদের মধ্যেনেটওয়ার্কিং আর বাঙালীদের ভেতর ‘প্রত্যেকে আমরা প্রত্যেকের তরে’ টাইপ সহযোগীতার মেলবন্ধন তৈরী করাই এই বাংলা ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের প্রধান লক্ষ্য। বলাই বাহুল্য বাঙালীদের প্রধান দুটি বাসভ‚মি, বাংলাদেশ আর ভারত বাংলা ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের এজেন্ডার শীর্ষে রয়েছে। একথা অস্বীকার করার একদমই জো নেই যে বাংলাদেশ এবং ভারতের সরকার দুটিও এ বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। বাংলাদেশের মত ছোট একটি দেশে যেমন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ভারতের দুতাবাসের পাশাপাশি একাধিক উপ ও সহকারী হাই কমিশন, তেমনি ভারতে বাংলাদেশের হাই কমিশনের যতগুলো শাখা-প্রশাখা রয়েছে, আমার জানা মতে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্বিতীয় আর কোন দেশে এতগুলো পেখম মেলেনি। পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতা আর ত্রিপুরার আগরতলায় রয়েছে আমাদের হাই কমিশনের এমনি দুটি শাখা। তারপরও এ কথা কেউ অস্বীকার করবেন না যে দু’দেশের বাঙালীদের মধ্যে আরো ঘনিষ্ট যোগাযোগ আর সহযোগীতা গড়ে তোলা আর পাশাপাশি তাদের মধ্যকার নানান সমস্যার সমাধান আর মিথস্ক্রিয়াগুলো যথাযথভাবে সামাল দেয়ার জন্য দুদেশের সরকারের দক্ষতম ডিপ্লোমেটদের এই উপস্থিতিও যথেস্ট নয়। আর এই জায়গাটাতেই দারুন সফল পাবলিক ডিপ্লোমেসি যদি তা ঠিকঠাকমত কাজে লাগানো যায়। বাংলা ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের এই দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বাঙালী সম্মেলনের কথাই ধরা যাক। সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামের মুখে বাংলাদেশের সংবিধান প্রনয়নের গল্প কিংবা বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর কাছে একাত্তরের যুদ্ধগাথা, পশ্চিমবঙ্গের আর সাথে বিশে^র নানান প্রান্তের বাঙালীরা যেভাবে মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনছিলেন, দেখে মনে হচ্ছিল তারা বোধহয় তাদের নিজেদের সংবিধান রচনার অজানা তথ্যগুলো জানছেন আর শিহরিত হচ্ছেন তাদের নিজেদের স্বাধীনতা সংগ্রামে গেরিলাদের বীরত্বের কথা জানতে পেরে। আর যখন আইন বিষয়ক গোলটেবিলে আমাদের সুপ্রীমকোর্ট ও হাইকোটের মাননীয় বিচারপতিররা বাংলাদেশের সংবিধান আর আইনের ব্যাখ্যাগুলো তুলে ধরছিলেন তখন তা মন দিয়ে শুনছিলেন পশ্চিমবঙ্গের হাইকোটের অবসরপ্রাপ্ত মাননীয় প্রধান বিচারপতি থেকে শুরু করে ওখানকার শীর্ষ আইনজীবিরা। বাংলদেশে ব্রিটিশ জমানারসেকেলে আইনগুলো ঝেড়ে-মুছে এত যে আজকের উপযোগী করে তোলা হয়েছে, এখানে যে এতটাই সুরক্ষিত নারী কিংবা ধর্মীয় সংখ্যালঘুর সাংবিধানিক অধিকারগুলো, সেসব অজানা তথ্যে সমৃদ্ধতর যখন পশ্চিমবঙ্গের আইনজগতের আইকনরা, তখন নিশ্চিত থাকতে পারেন এক লক্ষ পশ্চিমবঙ্গবাসীর সামনে বক্তৃতা করে কিংবা দু’দেশের দক্ষতম ডিপ্লোমেটদের নিয়মিত যোগাযোগেও এই অর্জনটুকু ঘরে তোলা সম্ভব ছিল না। একইভাবে আমি যখন ফ্যাটি লিভার নিয়েকথা বলে মঞ্চ থেকে নামছি তখন আমাকে ঘিরে ধরে পশ্চিবঙ্গের যে উৎসুক সুশীলদের ভীড়, তারা যতটানা আরো বেশি জানতে চায় লিভারের চর্বি নিয়ে, তার চেয়েও তাদের ঢেড় বেশি আগ্রহ বাংলাদেশের রোগীরা কেন সেদেশের ডাক্তার ফেলে তাদের ডাক্তারখানাগুলোয় ভীড় বাড়ায়। আবার এর উল্টোটাও সত্যি। রিসার্চের সাথে সংশ্লিষ্টতা আর জাপানের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে খন্ডকালীন অধ্যাপনার সুযোগে পৃথিবীর বেশকিছু আধুনিক ডায়াগনোস্টিক ল্যাবরোটরী আর রিসার্চ ফ্যাসিলিটি ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা আমার ঝুলিতে জমা আছে। সেই জায়গায় দাড়িয়েই আমি হলফ করে বলতে পারি যে এই কনফারেন্সে এসে যদি আমার সাথে সোমনাথ দার পরিচয়টা না ঘটতো আর তার আমন্ত্রনে আমি যদি তার সুরক্ষা ডায়াগনষ্টিক ল্যাব ভেতরে-বাইরে ঘুরে দেখার সুযোগটুকু না পেতাম তাহলে আমার এ বিষয়ে জ্ঞান স্রেফ অর্ধেকই রয়ে যেত। সুরম্য আধুনিক ভবনে সোমথান দার সুরক্ষার বিশাল আয়োজন। একটা মেশিন আছে যার দৈর্ঘ্য ৩২ মিটার। রোগীর রক্তের স্যাম্পল বোঝাই, বার কোডেড টেস্ট টিউবগুলো সেই মেশিনের একপ্রান্তে ঢেলে দেয়া হচ্ছে আর এ,আই আর রোবটের জাদুকরি ছোয়ায় অন্য প্রান্তে বেড়িয়ে আসছে হেমাটোলজি, ইমিউনোলজি, বায়োকেমিষ্ট্রি ইত্যকার যত রিপোর্ট। লিখলে শুধুমাত্র এই সম্মেলনটি নিয়েই ভরা যাবে পাতার পর পাতা। আমি শুধু এটুকু বলতে পারি এই সম্মেলনে এপারের আর ওপারের আর সাথে সাত সমুদ্দুর, তের নদী পারের যে সমস্ত বিশিষ্ট বাঙালীযোগ দিয়েছিলেন তাদের প্রত্যেকেই এমনি সব দারুন অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হয়েই যার যার ঘরে ফিরেছেন। এটাই পাবলিক ডিপ্লোমেসির শক্তি। আমরা লিভার বিষেশজ্ঞরাও এমনি ধরনের ‘লিভার ডিপ্লোমেসির’ সাথে যুক্ত আছি। আমরা গত চার বছর ধরে ‘পদ্মা গঙ্গা গোমতী লিভার সম্মেলন’ নামে একটি সম্মেলনের আয়োজন করে আসছি। পদ্মা-গঙ্গা বাংলাদেশ আর পশ্চিমবঙ্গের ঐক্যতান আর গোমতিতে বহমান বাংলাদেশ আর ত্রিপুরার বাঙালীর বাঙালীয়ানা। আমরা তেমনটা বিশ্বাস করি বলেই বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ আর ত্রিপুরার বাঙালী লিভার বিশেষজ্ঞদের এই সম্মেলনটিকে আমরা এ নামে ডাকি। হালে আমরা শুরু করেছি আরেকটি নতুন লিভার সম্মেলন – ‘বালিকা’ অথ্যাৎ কিনা বাংলা লিভার ককাস। এর সভ্য বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ আর ত্রিপুরার সীমানা পেরিয়ে বিশ্বের তাবৎ দেশের, তাবৎ পাসপোর্টধারী, তাবৎ বাঙালী লিভার বিশেষজ্ঞ। বাঙালীর পাসপোর্ট আজ কাটাতারের বেড়ার জালে কারো সবুজ তো কারো নীল আর কারো বা অন্য কোন রঙের, কিন্তু তাতে বাঙালীর লিভার রোগের থোরাই যায় আসে। ভেতো বাঙালীর লিভারের চর্বি জমে ঢাকায়, কোলকাতায় আর ওয়াশিংটন কিংবা লন্ডনে। আবার বাঙালী লিভার বিশেষজ্ঞরা, তা তার পাসপোর্টটা যে রং-এরই হোক না কেন, তারা যখন এক সাথে হন তখন হোক চিকিৎসা, হোক গবেষনা কিংবা নিখাদ আড্ডা, তার আমেজটাই থাকে অন্য রকম। সেখানে যে আন্তরিকতা আর প্রানের অনুরনন, সে আর অন্য কোথায়? পদ্মা গঙ্গা গোমতি লিভার সম্মেলনে আর বালিকায় যেসব ভীন দেশি বাঙালী লিভার বিশেষজ্ঞ ঢাকায় পা দিয়েছেন তারা প্রত্যেকেই শ্রদ্ধা জানিয়ে এসেছেন ৩২-এ বঙ্গবন্ধুকে। কাউকেই বলতে হয়নি। এটি ছিল তাদের প্রত্যেকের ঢাকায় কার্যতালিকায় একেবারে শীর্ষে। আমার জাতির পিতার প্রতি তারা যেভাবে শ্রদ্ধায় অবনত হয়েছেন তার চাক্ষুষ স্বাক্ষী আমি নিজে আর তার স্বাক্ষ্য লিপিবদ্ধ আছে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের ভিজিটর বুকেও। বঙ্গবন্ধু শুধু হাজার বছরেরই নন, তিনি যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠবাঙালী, সেই বোধটুকু আমার বারবার জাগ্রত হয়েছেআমি যতবারই আমার এই ভীনদেশি বাঙালী লিভার কলিগদের সাথে নিয়ে ৩২-এ গিয়েছি। বালিকার আয়োজনটা ছিল একেবারেই পদ্মার ধারে। কাচের জানালার পেছনে পদ্মা সেতু আর সামনে বাঙালী লিভার বিশেষজ্ঞের বাংলায় লেকচার তার বাঙালী সহকর্মীদের উদ্দেশ্যে-এ এক এমন অনুভূতি যা ভাষায় ফুটিয়ে তোলার ভাষা আমার ভান্ডারে অনুপস্থিত। শুধু মনে হচ্ছিল এতো বাঙালীর একের পর এক বাংলায় লিভার চর্চা নয়, এটা বাঙালীর লাগাতার বিজয় উদযাপন। ক’দিন আগে এদেশ থেকে

জাতীয়

সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এর ৮৯ তম জন্মদিন

বিলেতের আয়না ডেক্স :- সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এর ৮৯ তম জন্মদিন বুধবার বরেণ্য অর্থনীতিবিদ, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী রাজনীতিবিদ, লেখক, ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মাল আবদুল মুহিত এর ৮৯ তম জন্মদিন বুধবার (২৫ জানুয়ারি)। শ্রদ্ধা ভালোবাসয় দিবসটি পালন উপলক্ষে সিলেট ও ঢাকায় নানা কর্মসুচীর আয়োজন করা হয়েছে। আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯৩৪ সালের ২৫শে জানুয়ারি বর্তমান সিলেট শহরের ধোপা দিঘির পাড়ে পৈতৃক বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা এডভোকেট আবু আহমদ আবদুল হাফিজ ছিলেন তৎকালীন সিলেট জেলা মুসলিম লীগের নেতা। মা সৈয়দা শাহার বানু চৌধুরী ছিলেন সিলেট মহিলা মুসলিম লীগের সহ-সভানেত্রী। আবুল মাল আবদুল মুহিতের সহধর্মিনী সৈয়দা সাবিয়া মুহিত একজন ডিজাইনার। তাদের তিন সন্তানের মধ্যে প্রথম কন্যা সামিনা মুহিত ব্যাংকার ও আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞ, বড় ছেলে সাহেদ মুহিত বাস্তুকলাবিদ এবং কনিষ্ঠ পুত্র সামির মুহিত একজন শিক্ষক। আবুল মাল আবদুল মুহিত ছাত্রজীবনে অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তিনি ১৯৪৮ সালে স্কুল ছাত্র হিসেবে প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেন এবং রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে জড়িত হন। ১৯৪৯ সালে সিলেট সরকারি পাইলট হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় কৃতকার্য হন। ১৯৫১ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে আইএ পরীক্ষায় প্রথম স্থান, ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ (অনার্স) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম এবং ১৯৫৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে এমএ পাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। বিদেশে চাকুরীরত অবস্থায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন তিনি। অতঃপর ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবর্ষে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমপিএ ডিগ্রী লাভ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে আবুল মাল আবদুল মুহিত যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তান সরকারের পক্ষ ত্যাগ করেন এবং সেখানে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযোদ্ধের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। জাতীয় সংসদে সর্বোচ্চ ১২ বার বাজেট দেয়া সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ছিলেন সিলেট-১ আসনের সাংসদ। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। শৈশবে ‘মুকুল ফৌজ’ করে আসা আবুল মাল আবদুল মুহিত বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সলিমুল্লাহ হল ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। সক্রিয় ছিলেন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনেও। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস-এ (সিএসপি) যোগ দেয়ার পর জনাব মুহিত তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার, পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকার এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশের পরিকল্পনা সচিব নিযুক্ত হন। তবে এই দায়িত্ব গ্রহণ না করে তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পরামর্শ করে ওয়াশিংটন দূতাবাসে ইকোনোমিক মিনিস্টারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকে নির্বাহী পরিচালক পদে নিযুক্ত হন। এখন পর্যন্ত তিনি একমাত্র বাংলাদেশী, যিনি এ পদে আসীন হয়েছিলেন। ১৯৭৭ সালে তিনি অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বহিঃসম্পদ বিভাগে সচিব পদে নিযুক্ত হন। ১৯৮১ সালে চাকরির ২৫ বছর পূর্তিকালে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে তিনি স্বেচ্ছায় সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন। আবুল মাল আবদুল মুহিত পাকিস্তান পরিকল্পনা কমিশনের চিফ ও উপ-সচিব থাকাকালে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্যের ওপর ১৯৬৬ সালে একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন করেন। পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে এটিই ছিল এই বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদন। ওয়াশিংটন দূতাবাসের তিনি প্রথম কূটনীতিবিদ, যিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৯৭১ এর জুন মাসে পাকিস্তানের পক্ষ পরিত্যাগ করে বাংলাদেশের পক্ষে আনুগত্য প্রদর্শন করেন। ১৯৮১ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে তিনি অর্থনীতি ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে ফোর্ড ফাউন্ডেশন ও ইফাদে কাজ শুরু করেন। ১৯৮২-৮৩ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের উড্রো উইলসন স্কুলের ভিজিটিং ফেলো ছিলেন। ১৯৯১ সাল থেকে তিনি সার্বক্ষণিক দেশে অবস্থান করে একজন নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার হিসেবে বিভিন্ন বিষয়ে ভূমিকা রাখতে শুরু করেন। বিভিন্ন সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনে সম্পৃক্ত হয়ে দেশের সুশীল সমাজের একজন অগ্রণী ব্যক্তিত্ব হিসেবে আবির্ভূত হন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনে তিনি একজন পথিকৃত এবং বাপা-র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। ২০০১ সালের আগস্টে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং অক্টোবরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট ১ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। ২০০২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নিযুক্ত হন। ২০০৯ সালে সিলেট ১ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। অত্যন্ত দৃঢ়তা ও সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে তিনি নতুন দিগন্তের সূচনা করেন। ২০১৪ সালে সিলেট ১ আসন থেকে টানা দ্বিতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আবারো অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। দক্ষতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করে আর নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেন। বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণের ঘোষণায়ও তিনি ব্যতিক্রম। অবসর নিয়েও মুজিববর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। একজন আবুল মাল আবদুল মুহিত অফুরন্ত জীবনীশক্তির অধিকারী এক প্রাণবন্ত মানুষ। সদা হাস্যোজ্জ্বল কর্মযোগী, ধীমান এই মানুষটির স্পষ্টতা, সরলতা ও সাহসিকতা ছিল অনবদ্য। একজন লেখক হিসেবেও জনাব মুহিত খ্যাতিমান। প্রশাসনিক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থ ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে তার ৩০টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিষয়ে তার ‘জেলায় জেলায় সরকার’ একটি আকর গ্রন্থ। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের মহকুমাগুলোকে জেলায় রূপান্তর এবং গণতান্ত্রিক জেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠার প্রথম প্রশাসনিক প্রতিবেদন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ১৯৭২ সালে প্রণয়ন করেছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, ১০ বছর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ে নিজের শেষ কর্মদিবসে এক বিদায়ী অনুষ্ঠানে হাসতে হাসতে তিনি বলেন, “এটি আমার খুব আনন্দের বিষয়, আমাকে বিদায়-টিদায় করতে হয় নি, আমি নিজে নিজেই বিদায়টা নিয়ে নিয়েছি। জনাব মুহিত এর সংগ্রহে ছিলো ৫০ হাজার বই। মুক্তিযুদ্ধ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ইতিহাস, জনপ্রশাসন এবং রাজনীতি নিয়ে ৩৪টি বই তিনি লিখেছেন, তার লেখা গ্রন্থ হলো—স্মৃতিময় কর্মজীবন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও সম্ভাবনা, বাংলাদেশের অভ্যুদয়, বাংলাদেশ : জাতিরাষ্ট্রের উদ্ভব, মহাপুরুষদের কথা কাছে থেকে দেখা, নানা দেশ নানা জাতি, স্মৃতির মণিকোঠায়, আমার সিলেট, মুক্তিযুদ্ধের রচনাসমগ্র, বসবাসের উপযুক্ত বাংলাদেশ চাই, সংকট ও সুযোগ, আমাদের জাতীয় সংসদ ও নির্বাচন, নির্বাচন ও প্রশাসন, আমাদের বিপন্ন পরিবেশ, সোনালি দিনগুলি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাতাশ মাস, রাজনৈতিক ঐকমত্যের সন্ধানে। ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় ‘স্মৃতিময় কর্মজীবন’ নামে তার ষাট বছরের বিচিত্র কর্মজীবনের স্মৃতিকথা। বইটি উৎসর্গ করেছিলেন তার সহধর্মিনী সৈয়দা সাবিয়া মুহিতকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে এবং জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের জন্যে ২০১৬ সালে আবুল মাল আবদুল মুহিতকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেন বাংলাদেশ সরকার। জীবনের শেষ দিনগুলোতে অনেকটা নিভৃতে পরিবারের সঙ্গেই কাটছিল জনাব মুহিতের সময়। তবে ভঙ্গুর স্বাস্থ্যের কারণে মাঝে মাঝে হাসপাতালে যেতে হচ্ছিল। ১৬ মার্চ ২০২২ বুধবার সিলেটে ‘গুণীশ্রেষ্ঠ সম্মাননা’ অনুষ্ঠানই ছিল তার শেষ কোনো অনুষ্ঠানে মঞ্চে আরোহণ। নিজের জেলার মানুষের সম্মাননায় সিক্ত হয়ে আবেগ আপ্লুত মুহিত সেদিন বলেছিলেন, “আমি একান্তভাবে সিলেটের মানুষ। আমার

জাতীয়

ভোলায় গ্যাসের সন্ধান লাভ।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- ভোলায় গ্যাসের সন্ধান লাভ। বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের সময়ে সু-সংবাদ দিলো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। ভোলায় নতুন একটি কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার খবর জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সোমবার বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করে জনকণ্ঠকে জানান, ভোলার  নর্থ-২ কূপে নতুন এই গ্যাস পাওয়া গেছে। এখান থেকে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা গত বছরের ডিসেম্বরের ৫ তারিখে খনন কাজ শুরু করেছিলাম। স্বল্পতম সময়ে এখানে ৩ হাজার ৫২৮ মিটার গভীর পর্যন্ত খনন করেছি আমরা। এখন যাছাই-বাছাই চলছে। কিভাবে এই গ্যাস উত্তোলন এবং জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা হবে এই নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে। দ্বীপ অঞ্চল ভোলায় উৎপাদিত মোট গ্যাসের পরিমাণ এতদিন ছিলো প্রায় ১৪০ মিলিয়ন ঘনফুট। নতুন এই কূপের গ্যাস যোগ হলে এবার এর পরিমাণ আরও বাড়বে। জ্বালানি বিভাগ জানিয়েছে, খুব শিগগীরই ভোলার এই প্রাকৃতিক গ্যাসকে সিএনজিতে (কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস) রূপান্তর করে আনা হবে। স্থানীয় চাহিদা মেটার পরও দৈনিক প্রায় ৮০ মিলিয়ন অবশিষ্ট থাকলেও আপাতত: ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আনা হবে। যার পুরোটাই সরবরাহ করা হবে শিল্প কারখানাগুলোতে। ফলে বৈশ্বিক জ্বালানির বাজারের অস্থিরতা থেকে বাংলাদেশের  শিল্পখাত কিছুটা হলেও উপকৃত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জাতীয়

আগামী ১৮ শে ফেব্রুয়ারীতে পবিত্র শবে মেরাজ।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- আগামী ১৮ শে ফেব্রুয়ারীতে পবিত্র শবে মেরাজ। বাংলাদেশের আকাশে রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে। সোমবার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা যাওয়ায় আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ১৪৪৪ হিজরি সালের রজব মাস গণনা শুরু হবে। সে অনুযায়ী পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হবে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি (২৬ রজব) দিবাগত রাতে। রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) সভাকক্ষে সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মুনিম হাসান। সভায় অতিরিক্ত সচিব জানান, সব জেলাপ্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, আবহাওয়া অধিদপ্তর, মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশের আকাশে ১৪৪৪ হিজরি সালের রজব মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পাওয়া গেছে। এজন্য আজ মঙ্গলবার থেকে রজব মাস গণনা শুরু হবে। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হবে। শবে মেরাজের দিন বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানে এ দিন ঐচ্ছিক ছুটি। ‘শবে মেরাজ’ অর্থ ঊর্ধ্ব গমনের রাত। মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী, ২৬ রজব দিনগত রাতে ঊর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করে মহানবী হয়রত মোহাম্মদ (স.) আল্লাহ তা’আলার সাক্ষাৎ লাভ করেছিলেন। শবে মেরাজ মুসলমানদের কাছে বিশেষ মর্যাদার। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নফল ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে মূল্যবান এই রাত কাটান। এদিন অনেকে নফল সিয়াম সাধনা করেন।

জাতীয়

আর্থিক সংকটের কারণে ইভিএম প্রকল্প হচ্ছে না।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- আর্থিক সংকটের কারণে ইভিএম প্রকল্প হচ্ছে না। আর্থিক সংকটে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রকল্প আপাতত হচ্ছে না। পরিকল্পনা  কমিশন এ প্রকল্প ফেরত পাঠিয়েছে। সোমবার (২৩ জুনয়ারি) নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১৫০টি আসনে ব্যবহারের জন্য দুই লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্প স্থগিত করেছে সরকার। ইসি সচিব জানান, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে ব্যয় সংকোচন নীতির অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

জাতীয়

বিশ্ব মহামারী সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশকে সহায়তা করার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- বিশ্ব মহামারী সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশকে সহায়তা করার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কোভিড-১৯ মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত সংকট কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করার জন্য বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিদ্যমান সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করুন।’ সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ কথা বলেন। বিশ্বব্যাংকের এমডি বাংলাদেশের উন্নয়নকে ‘অবিশ্বাস্য’ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং উন্নয়নের ধারায় ঢাকার পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের পাশে আছি এবং দেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবো।’ বিশ্বব্যাংক এমডি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে তার সফরের প্রধান উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করা। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫০ মার্কিন ডলার, কিন্তু তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮২৪ মার্কিন ডলারে। উন্নত দেশগুলো মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের জন্য দায়ী কিন্তু উন্নত দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে পালন করছে না। প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে তার সরকার কী করছে তা সংক্ষেপে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, তার সরকার ব্যাপক বনায়ন, গ্রিনবেল্ট নির্মাণ এবং দুর্বল মানুষের জন্য টেকসই আবাসন ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রজন্মের পর প্রজন্মকে উন্নত জীবন দিতে ‘ডেল্টাপ্ল্যান-২১০০’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে। সরকারপ্রধান বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকার কারণে তার সরকার বিগত ১৪ বছরে বাংলাদেশের দ্রুত উন্নয়ন করতে পেরেছে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী দেশবাসীকে একটি সুন্দর ও উন্নত জীবন দিতে অক্লান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির আগে বাংলাদেশ জিডিপিতে ক্রমাগত ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত ছিল। কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেল, খাদ্যসামগ্রী ও পরিবহন ব্যয় আকাশচুম্বী হওয়ায় উন্নয়নশীল দেশগুলো সমস্যায় পড়েছে। কিন্তু মহামারি থেকে বেরিয়ে আসার পর, জিডিপি প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করেছে, যা এখন পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের এমডি ট্রটসেনবার্গ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের দেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর উচিত নতুন প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।

Scroll to Top