জানুয়ারি ২২, ২০২৩

আন্তর্জাতিক, জাতীয়

দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা শেষ। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে দোয়া।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা শেষ। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে দোয়া। দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ, মুক্তি কামনা এবং বিশ্ব শান্তির জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য চেয়ে শেষ হলো মুসলমানদের অন্যতম বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমা। দ্বিতীয় পর্বটি ছিল সাদ অনুসারীদের, এ পর্বে আখেরি মোনাজাতও পরিচালনা করেন দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাযের প্রধান মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী। টঙ্গীর তুরাগ তীরের লাখ লাখ মুসল্লি উপস্থিত হয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করতে আল্লাহর দরবারে রহমত প্রার্থনা করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। এ সময় কান্ধলভী নিজে কাঁদলেন এবং মোনাজাতে অংশ গ্রহণকারী সবাইকে কাঁদালেন। তাদের অশ্রুভেজা কান্না আর আমিন, আমিন শব্দে তুরাগ তীরে বিরাজ করে অন্যরকম ধর্মীয় আমেজ। মোনাজাতে মাওলানা ইউসুফ সাদ কান্ধলভী আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে দ্বীনের ওপর সবাই যেন চলতে পারে সে দোয়া করেন। এ ছাড়া দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে মানুষকে হেফাজত করতে আল্লাহর কাছে সাহায্য চান। তার সঙ্গে দু’হাত তুলে আমিন আল্লাহুম্মা আমিন ধ্বনি তুলে কান্নায় ভেঙে পড়েন উপস্থিত মুসল্লিরা। এর আগে ভোর থেকে শুরু হয় দিকনির্দেশনামূলক বয়ান। শীর্ষস্থানীয় অনেক আলেম ইসলামের পথে সঠিকভাবে চলতে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বয়ান করেন। সকাল সাড়ে আটটার দিকে হেদায়েতি বয়ান শুরু করেন দিল্লির মাওলানা মোরসালিন।

জাতীয়

আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উন্নয়ন দর্শন ও সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে সফলভাবে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আগামীকাল জাতীয় প্রশিক্ষণ দিবস উপলক্ষে আজ রবিবার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সবক’টি লক্ষ্য অর্জনে আমরা সমানভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে সামিল হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবেও বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমাদৃত। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। ’ তিনি বলেন, ‘বিএসটিডি দীর্ঘকাল ধরে মানবসম্পদ উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রশিক্ষণ বিষয়ক বাস্তবধর্মী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উদ্ভাবন, গবেষণা পরিচালনা, সরকারি-বেসরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের সঙ্গে সমন্বয়মূলক কাজ ও উচ্চতর প্রশিক্ষণ আয়োজন করে রাষ্ট্রের মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আশা করি, বিএসটিডি আগামী দিনেও সরকারের রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে এবং মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। ’ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রশিক্ষণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে প্রশিক্ষণ সেক্টরের উন্নয়ন ও সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত গতিতে চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সরকার যে জনপ্রশাসন নীতি বাস্তবায়ন করছে, তাতে প্রশিক্ষণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোসহ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের অবকাঠামো উন্নয়নকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্যাডার অফিসারদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ চার মাস থেকে বাড়িয়ে ছয় মাস করা হয়েছে। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসকে সেবাধর্মী, উন্নয়নবান্ধব ও আধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের পরিসর বাড়ানোসহ নানাবিধ সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যথাযথ প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে একজন নির্বাহী ও কর্মীর মনোবল, দক্ষতা তথা সার্বিক মান উন্নয়ন সম্ভব, যা মানবসম্পদ উন্নয়নের চাবিকাঠি। ’

আন্তর্জাতিক

উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছাতে বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের পাশে থাকবে।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছাতে বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের পাশে থাকবে।উচ্চমধ্যম আয়ের দেশের অভীষ্টে পৌঁছাতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশনস) অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ। শনিবার (২১ জানুয়ারি) রাজধানীর হোটেলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক সভায় এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সভায় বিশ্বব্যাংকের এমডি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। সেই সঙ্গে দারিদ্র্য দূরীকরণে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের প্রশংসা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়োচিত পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের উচ্চমধ্যম আয়ের দেশের অভীষ্টে পৌঁছাতে বিশ্বব্যাংকের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। সভায় বিশ্বব্যাংকের খসড়া কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক (সিপিএফ) নিয়েও আলোচনা হয়। অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ জানান, সিপিএফ-এ বাংলাদেশকে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এসময় অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে অভিহিত করে বাংলাদেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, দুর্যোগ মোকাবিলা খাতসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে, বিশেষত করোনাকালীন বাজেট সহায়তা, কোভিড মোকাবিলা এবং কোভিড ভ্যাকসিন ক্রয়ে অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ জানান। তিনি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন উদ্যোগে বিশ্বব্যাংকের আরও জোরদার ও ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ঢাকাকে আরও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে বিশ্বব্যাংক এবং ৫০ বছরের অংশীদারত্বকে মনে রাখতে মেগা প্রকল্পে অর্থায়নে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান। এছাড়াও এলডিসি উত্তরণে বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারে বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান, অতিরিক্ত সচিব মো. শাহ্‌রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার, কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুলায়ে সেক, ড্যানডান চেনসহ অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা

জাতীয়

গাজীপুরের বরখাস্ত হওয়া মেয়র জাহাঙ্গীর আলম কে শর্ত সাপেক্ষে ক্ষমা।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- গাজীপুরের বরখাস্ত হওয়া মেয়র জাহাঙ্গীর আলম কে শর্ত সাপেক্ষে ক্ষমা। গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে শর্তসাপেক্ষে ক্ষমা করা হয়েছে। গত ১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা চিঠিতে জাহাঙ্গীর আলমকে ক্ষমা করার কথা জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে, তা ক্ষমার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে বলেও চিঠিতে তাকে সতর্ক করা হয়েছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গোপনে ধারণ করা মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও গাজীপুর জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে। ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কার করে। পরে মেয়র পদ থেকেও বরখাস্ত হন তিনি। ক্ষমা ঘোষণা করে দেওয়া ওবায়দুল কাদেরের সই করা চিঠিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা, তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থী সম্পৃক্ততার জন্য ইতিপূর্বে জাহাঙ্গীর আলমকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার/অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ স্বীকার করে তিনি ভবিষ্যতে এই ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত না হওয়ার বিষয়ে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দলের গত ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুসারে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে তা ক্ষমার অযোগ্য বিবেচিত হবে।

আন্তর্জাতিক

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে ১০০পাউন্ড জরিমানা।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে ১০০পাউন্ড জরিমানা। ব্রিটিশ পুলিশ শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে একটি সামাজিক মিডিয়া ভিডিও চিত্রগ্রহণের সময় চলন্ত গাড়িতে সিটবেল্ট না পরার জন্য জরিমানা করেছে। ল্যাঙ্কাশায়ার পুলিশ সরাসরি সুনাকের নাম না করে একটি টুইটার বিবৃতিতে বলেছে: “আমরা আজ লন্ডনের একজন 42 বছর বয়সী ব্যক্তিকে একটি নির্দিষ্ট শাস্তির শর্তসাপেক্ষ প্রস্তাব দিয়েছি।” একটি নির্দিষ্ট শাস্তি মানে সুনাক আদালতের শুনানি এড়াতে জরিমানা দিতে পারে। ডাউনিং স্ট্রিট বলেছে যে সুনাক “এটি একটি ভুল ছিল তা পুরোপুরি স্বীকার করেছেন এবং ক্ষমা চেয়েছেন”। বিবিসি জানিয়েছে যে গাড়ির যাত্রী হিসাবে সিট বেল্ট না পরার জন্য জরিমানা হবে £100 । মামলাটি আদালতে গেলে সুনাক £500 দিতে পারে।

জাতীয়

মুঘল আমলের সেই ‘দেওয়ানের পুল’ রক্ষার জন্য আগামীকাল রবিবার গণশুনানি।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- মুঘল আমলের সেই ‘দেওয়ানের পুল’ রক্ষার জন্য আগামীকাল রবিবার গণশুনানি। সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের বাউসী এলাকায় মুগলদের সময়ে দেওরভাগা খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। মুগলদের তৎকালীন দেওয়ানের (রাজস্ব কর্মকর্তা) নির্দেশনায় নির্মিত সেতুটির নাম দেওয়া হয় ‘দেওয়ানের পুল’। ঐতিহাসিক সেতুটি ভেঙে সেখানে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে পরিবেশবাদীদের বাধায় আটকে যায় সেতুটি ভাঙার কাজ। কিন্তু এবার সেতুটি ভেঙে সেখানে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগে গণশুনানি করতে চাইছে সিলেটের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। গণশুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ জানুয়ারি সিলেট এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইনামুল কবীর গত ১৫ জানুয়ারি একটি নোটিশ দিয়েছেন। সেই নোটিশে বলা হয়েছে, ‘গোলাপগঞ্জ উপজেলাধীন হেতিমগঞ্জ-ঢাকাদক্ষিণ-চন্দরপুর-বিয়ানীবাজার সড়কের ৫৫০ মি. চেইনেজে এলজিইডি পুরাতন ব্রিজটি (দেওয়ানের পুল) ভেঙে আধুনিক যুগোপযোগী ব্রিজ নির্মাণের কার্যক্রম গ্রহণ করেন। এ প্রেক্ষিতে কয়েকটি পত্রিকায় ব্রিজটি না ভাঙার অুনরোধ করেন। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য মানববন্ধন করেন। বিষয়টি সরকারের গোচারীভূত হলে স্থানীয় লোকজনের মতামত গ্রহণের জন্য গণশুনানির আয়োজন করা হয়।’ ভাঙা হচ্ছে মুঘল স্থাপত্যের দেওয়ানের ব্রিজ, জনমনে ক্ষোভ এই গণশুনানি দেওয়ানের পুল সংলগ্ন রাস্তায় আগামী রোববার বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়। তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করছেন সচেতন মহল। তারা বলছেন, ঐতিহাসিক দেওয়ানের পুল প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সম্পদ। এই পুল ভাঙার আগে অবশ্যই প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অনুমোদন নিতে হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, ‘দেওয়ানের পুল একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। এটি প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ। এই পুল ভাঙার অধিকার এলজিইডির নেই। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরও এই পুল ভাঙার অনুমোদন দেয়নি।’ তিনি বলেন, ‘প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদে ভাঙার হাত দিয়ে জড়িতরা অপরাধ করেছেন। এখন তাদের যাতে শাস্তি না হয়, সেজন্য তারা সাজানো নাটক শুরু করেছেন। ভাড়াটে লোক ডেকে ও ঠিকাদারের লোকদের দিয়ে পুলটি ভাঙার পক্ষে মানববন্ধন করানো হচ্ছে। এখন নাকি এলজিইডি গণশুনানি করবে!’ গণশুনানি তো পুল ভাঙার আগে করার কথা ছিল, এখন কেন করবে- এমন প্রশন করে কিম বলেন, ‘এটাও একটা পাতানো খেলা, দেখা যাবে নিজেদের লোকদের দিয়ে গণশুনানিতে পুল ভাঙার পক্ষে মতামত নিয়ে আসবে। কিন্তু এই পাতানো খেলা বন্ধ করতে হবে। ঐতিহাসিক, প্রাচীন স্থাপনাকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।’ সিলেটে দেওয়ানের পুল ভাঙার কাজ স্থগিত মোগল শাসনামলে সম্রাট মুহম্মদ শাহের রাজত্বকালে আনুমানিক ১৭৪০ সালে অল্পকালের জন্য শ্রীহট্ট (বর্তমান সিলেট) জেলার দেওয়ান (রাজস্ব কর্মকর্তা) নিযুক্ত হন গোলাব রাম (মতান্তরে গোলাব রায়)। তিনি মুর্শিদাবাদ থেকে আসেন। ওই সময়ে বাংলার শাসনকর্তা ছিলেন সুজা উদ্দিন খান এবং সিলেট অঞ্চলের ফৌজদার ছিলেন শমসের খান। দেওয়ান গোলাব রাম ছিলেন খুবই ধর্মপ্রাণ। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক শ্রীচৈতন্যের পিতৃভূমি দেখতে শ্রীহট্ট থেকে হেঁটে রওয়ানা দেন। বাউসী এলাকার দেওরভাগা খালে গিয়ে তিনি আটকে যান। পরে নৌকাযোগে সেই খাল পার হয়ে গোলাব রাম যান শ্রীচৈতন্যের পিতৃভূমি দেখতে। পরে তার নির্দেশে সেখানকার মন্দির মেরামত করা হয়। মন্দিরে যাতায়াত সহজ করতে একটি সড়ক ও খালের ওপর একটি পুল নির্মাণের নির্দেশ দেন তিনি। দেওরভাগা খালে নির্মিত সেতুটিই ‘দেওয়ানের পুল’ নামে পরিচিতি লাভ করে। সিলেটে দেওয়ানের পুল ভাঙার কাজ স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। গোলাপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র জানায়, দেওয়ানের পুল ভারী যানবাহন বহনের ক্ষমতা হারানোয় পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। পুরোনো সেতুটির দৈর্ঘ্য ছিল ২০ ফুট ও প্রস্থ ১৬ ফুট। একই জায়গায় ৯৯ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩২ ফুট প্রস্থের নতুন সেতু বানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ জন্য ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ মিলেছে। গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে দেওয়ানের পুল ভাঙার কাজ শুরু করে এলজিইডি। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সদস্যরা সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ জানান। পরে ২৮ ডিসেম্বর পুল ভাঙার কাজ স্থগিত করে এলজিইডি।

Scroll to Top