ডিসেম্বর ১৫, ২০২২

জাতীয়

শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- মাহমুদুর রহমান শানুর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি। আজ ১৪ ডিসেম্বর শহী দ বুদ্ধিজীবী দিবস। পৃথিবীর ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। ১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ চলছিল, তখন বাঙালি বুদ্ধিজীবী হত্যা ছিল নৃশংসতম ও বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ। জাতি যখন বিজয়ের খুব কাছাকাছি, সেই সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগিতায় রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ধরে ধরে হত্যা করে। ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বাঙালি শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদরা এই সুপরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হন। জাতি আজ স্মরণ করবে একাত্তরে অকালে প্রাণ হারানো জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে দিনটি কালো অধ্যায় হিসাবে বিবেচিত। একাত্তরে ৩০ লাখ শহীদের মধ্যে বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যার করে।। তাদের এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বুদ্ধিজীবিদেরকে হত্যা করেছে । হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী তাদের পরাজয় আসন্ন জেনে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে বুদ্ধিজীবী নিধনের এই পরিকল্পনা করে। একাত্তরের সেই যুদ্ধাপরাধী ও বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকের বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের এদেশীয় দোসর আলবদরের সাহায্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার বরেণ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করা হয়। পরে নিদারুণ যন্ত্রণা দিয়ে রায়েরবাজার ও মিরপুরে তাদের হত্যা করা হয়। এ দুটি স্থান এখন বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষিত।তাদের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছে। মুক্তিযুদ্ধের শেষ সময়ে ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আলবদর বাহিনী আরো অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে আলবদর ঘাঁটিতে নির্যাতনের পর হত্যা করে। শহিদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন—অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, ডা. আলিম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ড. ফজলে রাব্বী, সিরাজুদ্দীন হোসেন, শহীদুল্লা কায়সার, অধ্যাপক জি সি দেব, জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক রশীদুল হাসান, ড. আবুল খায়ের, ড. মুর্তজা, সাংবাদিক খন্দকার আবু তাহের, নিজামউদ্দিন আহমেদ, এস এ মান্নান (লাডু ভাই), এ এন এম গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক, সেলিনা পারভিনসহ অনেকে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় একই ভাবে বুদ্ধিজীবিদেরকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। বাঙালি জাতি কে মেধা শুন্য করার জন্য তাদের পরিকল্পনা ছিল। সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার প্রথিতযশা রাষ্ট্রচিন্তাবিদদেরকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বিজয়ের স্বাদ গ্রহণের পূর্বে নিদারুণ যন্ত্রণা দিয়ে অত্যন্ত করুন ভাবে নির্দয়ভাবে অত্যাচার করে হত্যা করেছিল। দেশের মুক্তির জন্য রণাঙ্গনে ঝাপিয়ে পড়তে বাঙালি জাতিকে উজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে বুদ্ধিজীবিদের যথেষ্ট ভুমিকা ছিল অপরিসীম। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুজিব নগর সরকার গঠন ও দেশের বিভিন্ন এলাকাকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে ও সেক্টর কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সেক্টর প্রধানসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ও যথেষ্ট ভুমিকা ছিল অপরিসীম। দেশপ্রেমে উদ্বেলিত ছিল তাদের ধ্যান ধারণা।’৭১সালে বুদ্ধিজীবিরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ছিলেন। শোষণ বঞ্চনার বিপক্ষে দাড়িয়ে তাঁরা নিজের শেষ রক্তবিন্দু বিলিয়ে দিয়েছেন। শিক্ষাবিদ ডাক্তার, সাহিত্যিক, গবেষক, লেখক, সাংস্কৃতিক কর্মী একটি দেশের অলংকার। তাঁরা দেশের সম্পদ। জাতির সর্বশ্রেষ্ট সন্তান। তাদের চিন্তা ও লেখনীতে জাতি দিক নির্দেশনা পায়। ১৯৭১ সালে হানাদার বাহিনী আমাদের ভিত্তি দূর্বল করে দেয়ার জন্য নৃশংস কায়দায় আমাদের আত্মার আপনজন, শ্রেষ্ট গুণীজনদেরকে হত্যা করেছে। জাতি এখন ও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসে দেশের জন্য জীবন দেয়া জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের আমরা শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করি।

সাম্প্রতিক

মুক্তিযুদ্ধে গোলাপগঞ্জ

বিলেতের আয়না ডেক্স :- আনোয়ার শাহজাহান মুক্তিযুদ্ধে গোলাপগঞ্জ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বর্বর পাকবাহিনী রাতের অন্ধকারে বাঙালিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালালে দেশের প্রতিটি এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। গোলাপগঞ্জের জনগণও পিছিয়ে ছিল না। ২৫ মার্চ রাতে স্বাধীনতা ঘোষণার সংবাদ গোলাপগঞ্জে এসে পৌঁছলে শত শত মানুষ রাতভর গোলাপগঞ্জ ও ঢাকাদক্ষিণে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। ২৬ মার্চ সকাল থেকেই সিলেট শহর থেকে শত শত লোক প্রাণভয়ে গোলাপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় আসতে থাকে। মুক্তিসংগ্রামী গোলাপগঞ্জবাসীরা শরণার্থীদের মাঝে খাবার ও পানি সরবরাহসহ তাদের থাকার ব্যবস্থা করে। মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে গোলাপগঞ্জ উপজেলার রয়েছে বিরল ইতিহাস। মুক্তিযুদ্ধ আন্দোলনে জানমাল ও মেধা দিয়ে উপজেলার ছাত্র-শিক্ষক, শ্রমিক, কৃষকসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন। যুব ও তরুণ সমাজ দলে দলে যোগ দেন মুক্তিবাহিনীতে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সক্রিয় হয়ে ওঠেন সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে। প্রবাসী গোলাপগঞ্জবাসী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জনমত গঠন এবং অর্থ সংগ্রহ করে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে ত্বরান্বিত করতে সর্বাত্বক সহযোগিতা করেন। স্বাধীনতাকামী সৈনিকরা যুদ্ধের প্রথম প্রহরেই প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। উপজেলার ফুলবাড়ী মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে স্থাপিত প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে এলাকার ছাত্র ও যুব সমাজকে অস্ত্র মহড়া, আক্রমণ ও শত্রুদের ঘায়েল করতে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে যুবক ও ছাত্ররা দলে দলে অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে ছুটে আসেন। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিতে এগিয়ে আসেন তৎকালীন ইপিআরের কয়েকজন জোয়ান। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সুবেদার মতিউর রহমান এবং হবিলদার আবু আহমদ। এখান থেকে যোগাযোগ করা হত বিয়ানীবাজারের মেওয়া ক্যাম্পে। বেঙ্গল রেজিমেন্ট এটি পরিচালনা করছিল, আর কিছুদিন তার দায়িত্বে ছিলেন গোলাপগঞ্জের কৃতিসন্তান মেজর জেনালের আজিজুর রহমান (ছত্রিশ রাণাপিং)। মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করতে কাজ করেন মরহুম আব্দুর রহিম অ্যাডভোকেট (সাবেক এমপি), মসুদ আহমদ চৌধুরী (রণকেলী), কফিল উদ্দিন চৌধুরী (রণকেলী), ইকবাল আহমদ চৌধুরী (রফিপুর), আব্দুল জববার (বারকোট), সৈয়দ মকবুল হোসেন (সুন্দিশাইল), শহীদ লে. কর্ণেল মুজিবুর রহমান চৌধুরী (রণকেলী), জয়নাল মহসীন চৌধুরী (ভাদেশ্বর) প্রমূখ। মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার প্রথমেই গোলাপগঞ্জের ফুলবাড়ী ইউনিয়নের বইটিকর নামক স্থানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে প্রতিহত করার চেষ্টা গ্রহণ করা হয়। ৮ এপ্রিল রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সিলেট শহর পূর্ণ দখল করে ফেলে। এসময় মুক্তিসেনারা কৌশল গ্রহণের জন্য ৩টি গ্রুপে বিভক্ত হন। একটি শেরপুর হয়ে মৌলভীবাজারের দিকে পিছু হটে, একটি খাদিমনগর জৈন্তা হয়ে তামাবিলের দিকে অগ্রসর হয় এবং অপরটি গোলাপগঞ্জ বইটিকর এলাকায় প্রতিরক্ষা ব্যূহ রচনা করে। পাকিস্তানি বাহিনী সিলেট শহরে তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করে তাদের একটি গ্রপ গোলাপগঞ্জের দিকে অগ্রসর হলে বইটিকরে অবস্থান নেয়া মুক্তিবাহিনীর জোয়ানরা তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা চালায়। এসময় লড়াই বেঁধে গেলে অনেকেই হতাহত হন। গোলাবারুদ, অস্ত্র এবং সৈন্যবল তুলনামূলক কম থাকায় মুক্তিবাহিনীর জোয়ানরা বইটিকর এলাকা ত্যাগ করে। ১০ এপ্রিল বিয়ানীবাজারের মেওয়া থেকে ফুলবাড়ী মাদ্রাসায় স্থাপিত ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ট্রাকযোগে খাবার নিয়ে আসা হচ্ছিল। ট্রাকটির সঙ্গে ছিলেন ফুলবাড়ীর লাল মিয়াসহ ৪ জন আনসার। গাড়িচালক ছিলেন জকিগঞ্জের বাসিন্দা এখলাছ হোসেন (ছুতু মিয়া)। খাদ্য বহনকারী ট্রাক ছাড়াও রাস্তায় কয়েকটি ট্রাক ও গাড়ি চলাচল করছিল। হঠাৎ খাদ্যবাহী ট্রাককে লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়তে থাকে পাকিস্তানি বোমারু বিমান। গোলাপগঞ্জের মৌলভীর খাল নামক কালভার্টের নীচে আত্মগোপন করার জন্য গাড়ি থেকে নামার আগেই পাকবাহিনীর ছোঁড়া বোমায় খাদ্যবাহী ট্রাকটি বিধ্বস্ত হয়ে যায় এবং শহীদ হন ফুলবাড়ী এলাকার কিশোর মতিউর রহমান, মোহাম্মদপুরের ভেড়াই মিয়া ঠিকাদার, সাইদুর রহমান ও গাড়িচালক জকিগঞ্জ উপজেলার এখলাছ হোসেন (ছুতা মিয়া)। বোমার আঘাতে লাল মিয়ার ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পাকবাহিনীরা এখান থেকে এগিয়ে রাণাপিং এলাকায় পৌঁছে আওয়ামী লীগ নেতা কফিল উদ্দিন চৌধুরী ও হারুন চৌধুরীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে গুলি করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু পাকবাহিনীর ১০ জন সৈন্যের মধ্যে কারো কাছে গুলি না থাকায় অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয় তাদের উপর এবং রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে চলে যায় হানাদার বাহিনী। উপজেলার বইটিকরে ক্যাপ্টেন আজিজ ও তাঁর নেতৃত্বাধীন সেনা, ইপিআর ও আনসার মুজাহিদের প্রায় ৩০০ জনের একটি দল পাকবাহিনীর সাথে ২৪ এপ্রিল এক সম্মুখযুদ্ধে লিপ্ত হয়। তাদের সহযোগিতা করেন সুতারকান্দি সীমান্ত দিয়ে আসা প্রায় ৩০০ বিএসএফ-এর একটি দল। আধ ঘণ্টা স্থায়ী এ যুদ্ধে পাকবাহিনীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ২৬ এপ্রিল সকালে পাকহানাদার বাহিনীর একটি দল উপজেলার ঢাকাদক্ষিণে প্রবেশ করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও হিন্দুধর্মালম্বীদের খুঁজতে থাকে। এসময় পাকবাহিনী স্থানীয় ব্যাংক, দোকানপাট লুটপাট করে। এছাড়া শ্রী চৈতন্য দেবের মন্দির ও দত্তরাইল গ্রামের কালিকৃষ্ণ চৌধুরীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট করে। একইদিন বারকোট গ্রামের মনোরঞ্জন চক্রবর্তী নিতাইকে হত্যা করে। মুক্তিকামী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর ঢাকাদক্ষিণ পাকহানাদার বাহিনীমুক্ত হয় এবং একইদিন মুকিতলা গ্রামের ছানুহর আলীকে পাক ও রাজাকার বাহিনী হত্যা করে। স্বাধীনতা পরবর্তী প্রজন্ম সংগঠন ঢাকাদক্ষিণ সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদ ২০১২ সাল থেকে ১১ ডিসেম্বর ঢাকাদক্ষিণ মুক্ত দিবস পালন করে আসছে। ১২ সেপ্টেম্বর গোলাপগঞ্জের সীমান্তসংলগ্ন হাকালুকী হাওড়ে চলে দুর্ধর্ষ এক অপারেশন। ৪ নং সেক্টরের কুকিতল সাবসেক্টরের ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে গঠিত এ দলের নেতৃত্বে ছিলেন আবুল খায়ের চৌধুরী, ছাত্র ইউনিয়ন নেতা তজম্মুল আলী ও লুৎফুর রহমান। মুক্তিযোদ্ধাদের এ দলটি বড়লেখার ডিমাই গ্রামে অবস্থানের পর ফেঞ্চুগঞ্জ থানার চান্দভাগ চা-বাগানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলে গন্তব্যস্থলে পৌঁছার আগেই ভোর হয়ে যায়। এসময় একটি স্থানে মুক্তিযোদ্ধারা বিশ্রাম নিতে গেলে সংবাদ পেয়েই তাদের উপর আক্রমণ চালায় পাকবাহিনী। এসময় মুখোমুখী সংঘর্ষে ২৫ জন পাকবাহিনী নিহত হয় এবং মুক্তিবাহিনীর ৩ জন জোয়ান শহীদ হন। ২৫ অক্টোবর (৪ রমজান) বারপুঞ্জি ক্যাম্প থেকে ৩৬ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল উপজেলার পশ্চিম আমুড়া ইউনিয়নের সুন্দিশাইল গ্রামে এসে পৌঁছে বিশ্রাম নেন। মুক্তিযোদ্ধার আগমনের সংবাদ পেয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর এক দোসর এ সংবাদটি পাকবাহিনীর কাছে পৌঁছে দেয়। এসময় পাকসেনারা এলাকায় আক্রমণ চালালে মুক্তিযোদ্ধারা নিরীহ এলাকাবাসীর কথা চিন্তা করে পাল্টা আক্রমণ না করে পাশ্ববর্তী টিলা দিয়ে সুন্দিশাইল এলাকা ত্যাগ করেন। মুক্তিবাহিনীকে না পেয়ে স্থানীয় এক রাজাকারের নির্দেশে মুক্তিবাহিনীদের আশ্রয়দাতাদের মধ্যে এলাকার ১৭ জন নিরীহ লোককে ধরে নিয়ে যায় পাকবাহিনী। তাদেরকে হত্যা করার জন্য স্থানীয় মোকামটিলায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করালে পাকবাহিনীর উপর আক্রমণ চালান মুক্তিযোদ্ধারা। এ সুযোগে আটককৃত লোকজন পালিয়ে গিয়ে তাদের জীবন রক্ষা করেন। দীর্ঘ সময় ধরে চলা পাল্টাপাল্টি আক্রমণে শহীদ হন দু’জন এবং আহত হন বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা। পরদিন ২৬ অক্টোবর (৫ রমজান) মোকামটিলায় অবস্থিত হযরত জাহান শাহ্ মৌলার মাজারসংলগ্ন মসজিদে (উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জড়ো হওয়া) মুসুল্লিরা আসরের নামাজ পড়ে বের হচ্ছিলেন। এসময় পাকবাহিনীর স্থানীয় এক দোসরের নেতৃত্বে একদল পাকসেনা গণহত্যা চালিয়ে একসাথে শহীদ করে ২১ জন রোজাদার সাধারণ মুসুল্লিকে। এ ২১ জন শহীদের মধ্যে কেউই মুক্তিবাহিনীর সদস্য না হলেও দেশ স্বাধীনের রণাঙ্গনের সাথে তাদের কারো সন্তান বা কারো আত্মীয়-স্বজন জড়িত ছিলেন। ২৫ ও ২৬ অক্টোবর সুন্দিশাইল মোকামটিলায় আক্রমণ চালিয়ে দু’দিনে ২৩ জনকে শহীদ করে পাকবাহিনী। নির্মম এ গণহত্যাটি ছিল গোলাপগঞ্জ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় গণহত্যা। মোকামটিলায় পাকহানাদার বাহিনীর আক্রমণে নির্মমভাবে যারা শহীদ হয়েছেন তারা হলেন – (১) শহীদ খুর্শেদ আলী (সুন্দিশাইল), পিতা সরাফত আলী লস্কর (২) শহীদ আসদ আলী (সুন্দিশাইল), পিতা আব্দুল হামিদ (৩) শহীদ তুতা মিয়া (সুন্দিশাইল), পিতা আব্দুল মজিদ মাস্টার (৪)

আন্তর্জাতিক

কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু

বিলেতের আয়না ডেক্স :- কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু ২৮তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় কলকাতার নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। এই উদ্বোধনকে ঘিরে ছিল রীতিমতো চাঁদের হাট। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যটির রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মঞ্চ আলোকিত করে ছিলেন বলিউড অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান, সাবেক ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলী, তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা, পরিচালক মহেশ ভাট, অভিনেত্রী জয়া বচ্চন, রানী মুখার্জি, গায়ক কুমার শানু ও অরিজিৎ সিং, অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী, দীপক অধিকারী (দেব), সোহম চক্রবর্তী, অভিনেত্রী শ্রাবন্তী, মিমি চক্রবর্তী, সায়ন্তিকা ব্যানার্জি ও পাওলি দাম। এছাড়াও ছিলেন উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান ও পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী, অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক, প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী, জুন মালিয়া, কোয়েল মল্লিক, শুভশ্রী গাঙ্গুলী, ইন্দ্রানী হালদারসহ টলিউডের এক ঝাঁক শিল্পী। প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন অমিতাভ বচ্চন। এ সময় মঞ্চে আলোকিত করেছিলেন অন্য অতিথিরাও। এদিনের অনুষ্ঠানে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, যুব কল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, পর্যটন মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, তথ্য ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, বন প্রতিমন্ত্রী ও সাঁওতালি অভিনেত্রী বিরবাহা হাঁসদা সহ মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যও উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৃত্যশিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় ও তার সংস্থার শিক্ষার্থীরা বিশেষ নৃত্যঅনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে মমতা ব্যানার্জি বলেন, “বাংলা সব সময় লড়াই করে একতার জন্য, মানবিকতা, সংহতির জন্য। এর লড়াই চলতেই থাকবে। আমরা লড়াই করে এটাই বোঝাতে চাই যে বাংলা কখনো মাথা নত করে না। বাংলা কখনো কারো কাছে ভিক্ষা চায় না। মাথা উঁচু করে চলে। বাংলা টলিউড, বলিউড সকলকে নিয়ে একসাথে চলতে জানে। আমি মনে করি বাংলা একদিন বলিউড, হলিউড দখল করবে।মনে রাখতে হবে আমরা সকলেই এক পথে চলতে চাই। ” এ সময় অমিতাভ বচ্চন জানান, “গত তিন বছর এই উৎসবে আসতে পারেনি, আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ দেখা করতে পারিনি তাই অনেক কষ্ট হয়েছে। তিন বছর পর এই অনুষ্ঠান আসতে পেরে আমি খুবই গর্ববোধ করছি। ” তিনি আরো বলেন, “কলকাতা, আমার বাড়ির মতো আপনাদের জামাইবাবু চিরকাল আপনাদের জামাইবাবু হয়েই থাকবে। ” করোনা মহামারির ভয়াবহতার কথা তুলে ধরে অমিতাভ বচ্চন বলেন, “আপনারা সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এটাই আমার আন্তরিক মন ও কামনা। ” প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রচুর মানুষ অপেক্ষা করে থাকেন, এই চলচ্চিত্র উৎসবে ভাল ছবি দেখার জন্য। আমরা সেই সুযোগ করে দিই। পাশের দেশ বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকেও প্রচুর ছবি এখানে আসে। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব ধীরে ধীরে যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তা খুবই উৎসাহ ব্যঞ্জন হয়ে উঠেছে। কারণ ভারতবর্ষের দিকপালদের সাথে বিশ্ব চলচ্চিত্রের সঙ্গে একটা মেলবন্ধন হচ্ছে। ” তার অভিমত, “ভালো সিনেমা দেখার যে সংস্কৃতি সেটাই আমাদের বাঁচিয়ে রাখবে। ” আট দিনব্যাপী (১৫ থেকে ২২ ডিসেম্বর) চলচ্চিত্র উৎসবে ৪২ দেশের মোট ১৮৩টি ছবি দেখানো হবে। উদ্বোধনী ছবি হিসেবে দেখানো হচ্ছে পরিচালক ঋষিকেশ মুখার্জি পরিচালিত এবং অমিতাভ বচ্চন জয়া বচ্চন অভিনীত হিন্দি ছবি ‘অভিমান’। নন্দন-১,২ ৩, নজরুল তীর্থ-১,২ ৩, রবীন্দ্র সদন, শিশির মঞ্চ, চলচ্চিত্র শতবর্ষ ভবন (রাধা স্টুডিও) ও সল্টলেকের রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবন-কলকাতার এই দশটি প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হবে এই ছবি গুলি। ২৮তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের থিম রাখা হয়েছে বিশ্ব মেলে ছবির মেলায় (মিট দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যাট ওয়ার্ল্ড অফ সিনেমা)। এবার মোট পাঁচটি আলাদা প্রতিযোগিতামূলক বিভাগ রয়েছে-এগুলি হল ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিশন ইনোভেশন ইন মুভিং ইমেজ, কম্পিটিশন অল ইন্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজেস, এশিয়ান সিলেট (নেটপ্যাক অ্যাওয়ার্ড), ন্যাশনাল কম্পিটিশন অন ডকুমেন্টারি এবং শর্ট ন্যাশনাল কম্পিটিশন অন ফিকশন। এছাড়াও দুটি নন-কম্পিটিশন বিভাগ থাকবে, এ দুটি হল-সিনেমা ইন্টারন্যাশনাল ও বেঙ্গলি প্যানোরামা। এই উৎসবের সেনটেনারি ট্রিবিউট বিভাগে থাকছে ঋষিকেশ মুখোপাধ্যায়, ভারতী দেবী, দিলীপ কুমার, অসিত সেন, কে আসিফ, অ্যালা রেনে, আলি আকবর খা, পাওলো পাসোলনির ছবি। ক্রীড়া বিষয়ক বেশ কয়েকটি ছবি দেখানো হবে এবার। সেই তালিকায় রয়েছে ৮৩, এমএস ধোনি, চক দে ইন্ডিয়া, মেরি কম, কোনি, ভাগ মিলখা ভাগ প্রমুখ। এ বছর ৮০-তে পা দিলেন অমিতাভ বচ্চন। তাকে সম্মান জানাতে চলচ্চিত্র উৎসবে তার নয়টি ছবি প্রদর্শিত হবে। কলকাতার গগনেন্দ্রপ্রদর্শশালা ও নজরুল তীর্থে অমিতাভ বিষয়ক প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়েছে। বিশেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে জ লু গদার ও তরুণ মজুমদারকে। দুই কিংবদন্তি পরিচালিত বেশ কিছু ছবি দেখানো হবে এবারের উৎসবে। এবার এই চলচ্চিত্র উৎসবে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের মোট চারটি সিনেমা। এগুলি হল পরিচালক মো. কাইয়ুম এর ‘দ্য গোল্ডেন উইংস অফ ওয়াটারকক্স’, পরিচালক ফখরুল আরেফিন খানের ‘জেকে ১৯৭১’, পরিচালক গৌতম ঘোষের ‘মুজিব ইন ক্যালকাটা’ এবং পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের ‘হাওয়া’ সিনেমা। সম্প্রতি কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশি চলচ্চিত্র উৎসবের প্রধান আকর্ষণ ছিল ‘হাওয়া’ সিনেমাটি। সিনেমা প্রেমী দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত এই ছবিটি। এবারের কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে ‘হাওয়া’ সিনেমাটি দেখানো হবে আগামীকাল ১৬ ডিসেম্বর নন্দন-১ সন্ধ্যা সাতটার শো’য়। ‘দ্য গোল্ডেন উইংস অফ ওয়াটারকক্স’ ছবিটি দেখানো হবে আগামীকাল ১৬ ডিসেম্বর নন্দন-১ এ সকাল সাড়ে এগারোটার শো’তে। দ্বিতীয় বার ২১ ডিসেম্বর নজরুল তীর্থ-১ মঞ্চে বিকাল ৪ টার শো’এ দেখানো হবে। ‘জেকে ১৯৭১’ সিনেমাটি আগামী ১৯ ডিসেম্বর বিকাল চারটে শো’এ নন্দন-২ তে দেখানো হবে এই ছবিটি। দ্বিতীয় বার ২০ ডিসেম্বর রবীন্দ্র সদনে বিকাল ৪ টার শো’এ দেখানো হবে এই ছবিটি। ‘মুজিব ইন ক্যালকাটা’ ছবিটি দেখানো হবে ১৭ ডিসেম্বর নন্দন-১’এ সন্ধ্যা সাতটার শো’তে।

জাতীয়

এবার ভূমিকর জমায় পরিবর্তন আসছে

বিলেতের আয়না ডেক্স :- নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা এবার ভূমিকর জমায় পরিবর্তন আসছে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, আগামী পয়লা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল ২০২৩) থেকে দেশব্যাপী হাতে হাতে ভূমি উন্নয়ন কর গ্রহণ বন্ধ হয়ে যাবে। এরপর থেকে কেবল অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর গ্রহণ করা হবে। অনলাইনে কর দেওয়ার পর অনলাইনেই কিউআর কোডসমৃদ্ধ দাখিলা (রসিদ) সংগ্রহ করতে পারবেন ভূমি উন্নয়ন করদাতা। ফলে ক্যাশলেস ই-নামজারির মতো সারা দেশে ক্যাশলেস ভূমি উন্নয়ন কর ব্যবস্থা চালু হবে। আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সচিবালয় বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপে’ এক প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এই মন্তব্য করেন। বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, কোনো জমির মালিকানার প্রমাণপত্র হিসেবে ‘সার্টিফিকেট অব ল্যান্ড ওনারশিপ’ তথা সিএলও নামক একটিমাত্র দলিল ইস্যু করা হবে। সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী জমির মালিকের তথ্য, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের তথ্যসহ সামগ্রিক তথ্য এবং ভূমির অবস্থানগত তথ্য যেমন জিও লোকেশসহ জমির মৌজা ম্যাপের তথ্য এই একটি দলিলের সাহায্যে নিশ্চিত করা যাবে। মালিকানা প্রমাণের জন্য আলাদা কয়েক ধরনের দলিল যেমন ডিড রেজিস্ট্রেশন, খতিয়ান কিংবা মৌজা ম্যাপ বহনের প্রয়োজন হবে না। এতে সাধারণ মানুষের ঝামেলা বহুলাংশে কমে যাবে। একই সঙ্গে ভূমির মালিক এমন নাগরিকদের জন্য স্মার্ট কার্ডও ইস্যু করা হবে, যেখানে কার্ড বাহকের মালিকানাধীন জমির তথ্যের ডিজিটাল সংস্করণ থাকবে এবং সব সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী সেসব জমির আগের সব তথ্যও এতে থাকবে। এর আগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাঁর ওপর প্রধানমন্ত্রীর আস্থা ছিল বলেই তাঁকে তিনি দেশের অন্যতম একটি জটিল খাতের সংস্কারের নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। মন্ত্রী এ সময় ভূমি সেক্টরে ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম এবং ভূমি আইন সংস্কারের ওপর আলোচনা করেন। সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার’ এবং ‘ভূমি ব্যবহার ও মালিকানা স্বত্ব’ আইনের খসড়া এমনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে যেন এর আইনি প্রয়োগ ভূতাপেক্ষভাবে সর্বশেষ জরিপ পর্যন্ত কার্যকর হয়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অতীতের যেকোনো সময় থেকে এখন ভূমি মন্ত্রণালয় এবং এর মাঠপর্যায়ের গণকর্মচারীদের জবাবদিহির আওতায় আনা হয়েছে। অসাধু কার্যক্রম চালানোর জন্য অনেক ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি এ সময় বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীসহ দেশের সবার ভূমির অধিকারের ব্যাপারে সরকার আন্তরিক এবং দেশের অপেক্ষাকৃত অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএসআরএফ সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক। বিএসআরএফ সহসভাপতি মোতাহের হোসেন শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

জাতীয়

২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হবে মেট্রোরেল: ওবায়দুল কাদের

বিলেতের আয়না ডেক্স :- ইয়ামিন হুসাইন, ঢাকা ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হবে মেট্রোরেল: ওবায়দুল কাদের দেশের প্রথম মেট্রোরেল উদ্বোধন করা হবে ২৮ ডিসেম্বর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে মেট্রোরেল চলাচল উদ্বোধন করবেন। আওয়ামী লীগের সম্মেলনের অভ্যর্থনা উপকমিটির সভায় আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর উত্তরা (দিয়াবাড়ি) থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্র জানিয়েছিল, তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে মেট্রোরেল উদ্বোধনের জন্য প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে। ওবায়দুল কাদের আজ জানান, ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধনের দিন ঠিক হয়েছে। মেট্রোরেল প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১২ সালে। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি হয় পরের বছর। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পথে উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ি), উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর–১১, মিরপুর–১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও—মোট ৯টি স্টেশন রয়েছে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত স্টেশন রয়েছে সাতটি—বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, টিএসসি, প্রেসক্লাব ও মতিঝিল। অবশ্য মেট্রোরেল কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার সম্প্রসারণ করা হবে। মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল আগামী বছরের শেষ দিকে চালুর কথা রয়েছে। কমলাপুর পর্যন্ত চালু হতে ২০২৫ সাল লেগে যেতে পারে। ডিএমটিসিএলের তথ্যমতে, মেট্রোরেল ছুটবে সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতে। শুরুর দিকে রাজধানীর উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও যেতে সময় লাগবে প্রায় ২০ মিনিট। পরে যাত্রার সময় ১৬ থেকে ১৭ মিনিটে নেমে আসবে। উদ্বোধনের পর দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে পূর্ণ যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলবে। প্রথম দিকে সকালে কিছুক্ষণ, আবার বিকেলে কিছুক্ষণ ট্রেন চলবে। অর্থাৎ ট্রেন চলাচলের সংখ্যা কম থাকবে। যাত্রীদের ওঠানামা ও আসনে বসা—এসব বিষয়ে অভ্যস্ত ও পরিচিত করাতে স্টেশনে ট্রেন কিছুটা বাড়তি সময় দাঁড়াবে। কিন্তু পরে ট্রেনের সংখ্যা বাড়বে এবং স্টেশনে দাঁড়ানোর সময় কমে যাবে। ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা জানান, শুরুতে পাঁচটি ট্রেন চলাচল করবে। ডিএমটিসিএল কর্মকর্তারা বলছেন, শুরুতে সব স্টেশনে থামবে না মেট্রোরেল। শুরুর স্টেশন উত্তরা উত্তর থেকে ছেড়ে ট্রেনটি পল্লবী গিয়ে থামবে। এরপর না থেমে আগারগাঁও চলে যাবে। মাঝের স্টেশনগুলোয় ট্রেন থামানোর কার্যক্রম শুরু হবে পরে। সরকার মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ঠিক করেছে ২০ টাকা। আর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভাড়া হবে ১০০ টাকা। প্রথম পর্যায়ে মেট্রোরেল যে অংশে চলাচল শুরু করবে, সেই উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া হবে ৬০ টাকা। উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে উত্তরা সেন্টার (মধ্য) ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনের ভাড়া একই—২০ টাকা। এ ছাড়া প্রথম স্টেশন (উত্তরা উত্তর) থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৪০ টাকা এবং শেওড়াপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মেট্রোরেল চালু হলে ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে গণপরিবহনে চলাচলে স্বস্তির দরজা খুলবে। মানুষ নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে যেতে পারবে। এখন যেমন লক্কড়ঝক্কড় বাসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পড়ে থাকতে হয়, অটোরিকশাচালকদের ভাড়ার নৈরাজ্য সহ্য করতে হয়, সেই ভোগান্তি থাকবে না। পরিবহনবিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশলের অধ্যাপক সামছুল হক গণমাধ্যমকে বলেছেন, মেট্রোরেলের পথে যাঁরা বসবাস করেন, তাঁদের যাত্রা আরামদায়ক, দ্রুতগতির ও নিরবচ্ছিন্ন হবে। যাত্রীরা নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে যেতে পারবেন। এখনকার গণপরিবহনে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছানোর কোনো নিশ্চয়তা নেই।

জাতীয়

চট্টগ্রাম টেস্টে দিশাহারা বাংলাদেশ

বিলেতের আয়না ডেক্স :- ক্রীড়া প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম টেস্টে দিশাহারা বাংলাদেশ লিটনের এই আউট যেন আজ দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের প্রতীকী চিত্রছবি: শামসুল হক ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেছিলেন, ম্যাচ পঞ্চম দিনে নিয়ে যাওয়াটাই প্রথম লক্ষ্য তাদের। তবে চট্টগ্রাম টেস্টে দ্বিতীয় দিনে যা হলো, তাতে বাংলাদেশের জন্য কাজটি এখন বেশ কঠিনই। ভারতের ৪০৪ রানের জবাবে দিন শেষে প্রথম ইনিংসে ১৩৩ রান তুলতেই ৮ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ, প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে ২৭১ রানে। ইবাদত হোসেনের সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজের নবম উইকেটে ৩১ রানের জুটি আপাতত অলআউট হওয়াটা আটকে রাখতে পেরেছে। দ্বিতীয় সেশনে প্রথমবার ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের মূল ক্ষতি করেছেন পেসার মোহাম্মদ সিরাজ ও বাঁহাতি স্পিনার কুলদীপ যাদব, দুজন মিলেই নিয়েছেন ৭ উইকেট। সিরাজ আঘাত করেন ইনিংসের প্রথম বলেই। তাঁর অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটকিপার ঋষভ পন্তের হাতে ধরা পড়েন নাজমুল হোসেন। ইনিংসের প্রথম বলেই এ নিয়ে ৮ বার কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান আউট হলেন। উমেশ যাদবের শরীর থেকে দূরের বল খেলতে গিয়ে স্টাম্পে বল ডেকে এনেছেন প্রথমবারের মতো তিনে আসা ইয়াসির। দ্রুত ২ উইকেট হারানোর চাপ চা-বিরতির আগে আক্রমণে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন লিটন দাস ও অভিষিক্ত জাকির হাসান। অষ্টম ওভারে উমেশকে টানা দুটি চার মারেন লিটন, পরের ওভারে অশ্বিনকে ৩ বলের মধ্যে ২টি মারেন জাকির। বিরতির ঠিক আগে উমেশকে দারুণ তিনটি শটে টানা তিন চার মারেন লিটন। লিটনের ইনিংস অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। সিরাজের নিচু হওয়া বলে ইনসাইড এজে বোল্ড হন তিনি। চার ওভার পর ফেরেন জাকিরও। এতক্ষণ বেশ ভালো টেম্পারামেন্ট দেখালেও সিরাজের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দেন। শুরুতে ধৈর্যের পরিচয় দেওয়া সাকিবও নিজের বিপদ ডেকে আনেন কুলদীপের দ্বিতীয় বলেই সামনে গিয়ে ফ্লিক করার চেষ্টায়। নেমেই প্রথম বলে চার মারা নুরুল আউট হতে ধরেছিলেন একটু পরই। কুলদীপের বলে ভারত নিয়েছিল রিভিউ। এলবিডব্লুর ক্ষেত্রে উইকেটে আম্পায়ার্স কল হয়েছে ধরে নেওয়া হলেও কিছুক্ষণ পর টেলিভিশন আম্পায়ার দেখা শুরু করেন সম্ভাব্য ক্যাচও। প্যাডে লাগার পর নুরুলের ব্যাট বা গ্লাভসের কাছে বল থাকার সময় আবার আলট্রা এজে ছিল স্পাইক। শেষ পর্যন্ত অবশ্য টিভি আম্পায়ার আউট দেননি। পরে কুলদীপের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়েই ফেরেন নুরুল, গিল নেন দারুণ রিফ্লেক্স ক্যাচ। কুলদীপের পরের শিকার মুশফিক। সুইপ করে চার মারার পরের বলে ডিফেন্ড করতে গিয়ে মিস করে হন এলবিডব্লু। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নিয়েছিলেন, তাতে কোনো লাভ হয়নি। বল ট্র্যাকিং দেখানোর আগেই হাঁটা শুরু করেন তিনি। আউট হওয়ার আগপর্যন্ত দারুণ নিয়ন্ত্রণ থাকলেও যে এক বলে গড়বড় হলো, তাঁকে ফিরতে হয়েছে তাতেই। সে ওভারেই গুগলি বুঝতে না পেরে বোল্ড তাইজুলও। ওয়ানডে সিরিজের নায়ক মিরাজ ও দশম ব্যাটসম্যান ইবাদত এরপর প্রতি-আক্রমণ করেছেন একটু। দুজনই মেরেছেন একটি করে চার ও একটি করে ছয়। এর আগে ৬ উইকেটে ২৭৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা ভারত রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ফিফটি, কুলদীপ যাদবের ৪০ রানের ইনিংসে পেরোয় ৪০০। আজও শুরুতে ইবাদতের বলে ডিপ ফাইন লেগে লিটনের হাতে জীবন পাওয়া শ্রেয়াস আগের দিনের সঙ্গে যোগ করতে পারেন মাত্র ৪ রান, সেঞ্চুরি থেকে ১৪ রান দূরেই থামেন। সেই ইবাদতের লাইন ধরে রাখা বলেই বোল্ড হন তিনি। শ্রেয়াসকে দ্রুত ফিরিয়ে ভারতের লেজ ছেঁটে দেওয়ার আশা বাংলাদেশের থেকে থাকলেও তা হতে দেননি রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও কুলদীপ যাদব। চা-বিরতির আগে-পরে অষ্টম উইকেট জুটিতে তাঁরা তোলেন ৯২ রান, বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের যেটি সর্বোচ্চ। আগের রেকর্ড ছিল অজিত আগারকার ও সুনীল যোশির ৫৬ রান, ২০০০ সালে বাংলাদেশের প্রথম টেস্টে। বাংলাদেশের বিপক্ষে যেকোনো দলেরই অষ্টম উইকেটে এর চেয়ে বেশি রানের জুটি আছে চারটি। সে জুটি ভাঙেন মিরাজ, তাঁকে সামনে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হন ক্যারিয়ারের ১৩তম ফিফটি করা অশ্বিন। পরের ওভারে ফেরেন ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ ৪০ রান করা কুলদীপও। ২ ছক্কা মারা উমেশকে আউট করে ইনিংসে নিজের চতুর্থ উইকেটটি নেন মিরাজ।

জাতীয়

জামিন হয়নি মির্জা ফখরুল ও আব্বাসের

বিলেতের আয়না ডেক্স :- নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা জামিন হয়নি মির্জা ফখরুল ও আব্বাসের বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের এডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) তোফাজ্জল হোসেন আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। মির্জা ফখরুলের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদিন গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার আদালতে জামিন শুনানিতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তাঁদের আইনজীবীরা বলেন, রাজধানীর পল্টন থানার যে মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেই মামলার এজাহারে তাঁদের নাম নেই। দুজনই বয়স্ক ও অসুস্থ। এই মামলায় এর আগে জামিন পেয়েছেন বিএনপির নেতা আমানউল্লাহ ও আবদুল কাদের ভূঁইয়া। যেকোনো বিবেচনায় মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস জামিন পেতে পারেন। অপর দিকে বিএনপি দুই জ্যেষ্ঠ নেতার জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষ। তাদের যুক্তি, জামিন পেলে মামলার তদন্ত বিঘ্নিত হবে। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন নাকচ করেন। এর আগে গত সোমবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাসসহ বিএনপির তিন শতাধিক নেতা–কর্মীর জামিন আবেদন নাকচ করেন ঢাকার সিএমএম আদালত। ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হন। সংঘর্ষের পর পুলিশ বিএনপির কার্যালয়ে অভিযান চালায়। ঘটনার পরদিন পল্টন, মতিঝিল, রমনা ও শাহজাহানপুর থানায় পৃথক চারটি মামলা করে পুলিশ। এতে ২ হাজার ৯৭৫ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। তাঁদের মধ্যে নাম উল্লেখ করা হয়েছে ৭২৫ জনের। তবে নাম উল্লেখ করা বিএনপির নেতাদের মধ্যে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস ছিলেন না। ‘ওপরের নির্দেশে’ ওই দুই নেতার বাসায় ৮ ডিসেম্বর (গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে) অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। দুজনকে প্রথমে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে। বাসা থেকে নিয়ে যাওয়ার প্রায় ১১ ঘণ্টা পর দুজনকে গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করেছিল ডিবি। ৭ ডিসেম্বরের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের চার মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৮৮ জনকে। তাঁদের মধ্যে ৩১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। অন্যদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর দুজনকে (আমানউল্লাহ ও আবদুল কাদের) জামিন দেন আদালত। কারাগারে পাঠানো নেতাদের মধ্যে রয়েছে রুহুল কবির রিজভী, আবদুস সালাম, খায়রুল কবির, শিমুল বিশ্বাস, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী প্রমুখ। বিএনপি বলে আসছে, ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় তাদের গণসমাবেশের যে কর্মসূচি ছিল, মূলত সেটি বানচাল করার উদ্দেশ্যেই পুলিশ ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে দলের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার করেছে।

জাতীয়

নাজিরা বাজারে জুতার গুদামে অগ্নিকাণ্ড

বিলেতের আয়না ডেক্স :- নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা নাজিরা বাজারে জুতার গুদামে অগ্নিকাণ্ড পুরান ঢাকার নাজিরবাজার সংলগ্ন আলুবাজারের একটি জুতার গুদামের পাঁচতলা ভবনের চতুর্থ তলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে এতে কেউ হতাহত হয়েছেন কি না, তা জানা যায়নি। আজ বুধবার বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো খুদে বার্তায় বলা হয়, বিকেল পাঁচটার দিকে আলুবাজারের একটি জুতার গুদামের পাঁচতলা ভবনের চতুর্থ তলায় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে বিকেল ৫টা ৮ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট পৌঁছায়। আগুনের তীব্রতা বেশি হওয়ায় তাদের সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের আরও আটটি ইউনিট যোগ দেয়। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে যোগাযোগ করা হলে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্তব্যরত কর্মকর্তা রাশেদউদ্দিন (খালেদ) গণমাধ্যমকে বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে আগুন লাগার কারণ ও হতাহতের খবর জানা যায়নি।

জাতীয়

দাম কমছে সয়াবিন ও পাম তেলের

বিলেতের আয়না ডেক্স :- ইয়ামিন হুসাইন, ঢাকা দাম কমছে সয়াবিন ও পাম তেলের প্রায় এক মাস পর সয়াবিন তেলের দাম আবার সমন্বয় করা হচ্ছে। বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের নতুন দাম হবে ১৮৭ টাকা। আর প্রতি লিটার পাম তেলের দাম দাঁড়াবে ১১৭ টাকা। সারা দেশে আগামী রোববার থেকে নতুন এই দর কার্যকর হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আজ বৃহস্পতিবার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম কমানোর তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি ও পণ্যের মজুত ও মূল্য পর্যালোচনার বিষয়ে গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সভায় পরিশোধিত সয়াবিন তেল ও পাম তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে সর্বশেষ গত ১৭ নভেম্বর বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৯০ টাকা করা হয়। নতুন দাম ১৮৭ টাকায় নির্ধারণের ফলে রোববার থেকে লিটারে ৩ টাকাই কমার কথা। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমবে। তাদের দাবি, বর্তমানে বাজারে ১ লিটার সয়াবিনের দাম ১৯২ টাকা। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, রোববার থেকে ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম হবে ৯০৬ টাকা, যা বর্তমানে ৯২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া খোলা সয়াবিন তেলের লিটার ১৭২ টাকা থেকে কমিয়ে ১৬৭ টাকা করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রতি লিটার পাম তেলের দাম ১২১ টাকা থেকে কমিয়ে ১১৭ টাকা করা হয়েছে। লিটারে তিন টাকা কমলেও প্রজ্ঞাপনে পাঁচ টাকা কমানোর কথা বলা হয়েছে কেন–এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে না পেয়ে খুদে বার্তা পাঠানো হয় বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষের কাছে। সচিব কোনো জবাব দেননি।

Scroll to Top