অক্টোবর ১৮, ২০২২

জাতীয়

শেখ রাসেল ছোটোদের বইমেলা ও শিশুসাহিত্য উৎসব উদ্বোধন।

বিলেতের আয়না ডেক্স :-শ‌হিদুল ইসলাম, সিলেট প্রতি‌নি‌ধি শেখ রাসেল ছোটোদের বইমেলা ও শিশুসাহিত্য উৎসব উদ্বোধন। শেখ রাসেল বিশ্ব শিশুর প্রতীক : অনুপম সেন বাংলাদেশ শিশুসাহিত্য একাডেমির উদ্যোগে পাঁচ দিনব্যাপী শেখ রাসেল ছোটোদের বইমেলা ও শিশুসাহিত্য উৎসব গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির গ্যালারি ভবনে শুরু হয়েছে। বিকেলে দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই মেলা উদ্বোধন করেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন। তিনি বলেন, শেখ রাসেল বিশ্ব শিশুর প্রতীক। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট কালো রাতে শেখ রাসেল হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে লঙ্ঘিত হয়েছে বিশ্বমানবতা। ঘাতকরা কেবল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি একে একে হত্যা করেছে পরিবারের সদস্যদের। তাদের নির্মমতা থেকে রক্ষা পায়নি ছোট্ট রাসেলও। চট্টগ্রামে শেখ রাসেল বইমেলা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য সংযোজন। শিশুসাহিত্যকরা ছড়া-কবিতা, গল্প-উপন্যাসে শেখ রাসেলকে বিভিন্নভাবে তুলে ধরেছেন। শেখ রাসেলের আদর্শ আমাদের নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। সাহিত্যিক ড. আনোয়ারা আলমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক আমীরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম কমু, নগর পরিকল্পনাবিদ লেখক প্রকৌশলী পুলক কান্তি বড়ুয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিশুসাহিত্য একাডেমির পরিচালক রাশেদ রউফ। সঞ্চালনায় ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী আয়েশা হক শিমু। খ্যাতিমান শিশুসাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম বলেন, শিশুদের বইমুখী করে তোলা অভিভাবকদের দায়িত্ব। তাদের কেবল পাঠ্যপুস্তকে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না সাহিত্য জগতেও বিচরণে সুযোগ করে দিতে হবে। বইয়ের কোনো বিকল্প নেই। পৃথিবী থেকে অনেক কিছু হারিয়ে গেছে, হারিয়ে যাবে। কিন্তু বই কখনোই হারিয়ে যাবে না। মানবাধিকার কর্মী সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম কমু বলেন, যারা শিশুসাহিত্য চর্চা করেন তারা দেশ কাল এবং শিশুমনন ধারণ করেন। তাদের লেখালেখিতে শিশুরা সঠিক পথের দিক নির্দেশনা পায়। প্রকৌশলী পুলক কান্তি বড়ুয়া বলেন, শিশুদের মেধার বিকাশে শিশুসাহিত্যের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, এখন শিশুদের সমৃদ্ধ অতীত নেই, সোনালি শৈশব নেই। তারা বড় হচ্ছে রোবটের মতো। তাদের এই সংকট থেকে উত্তরণে অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করা জরুরি। সভাপতির বক্তব্যে ড. আনোয়ারা আলম বলেন, শেখ রাসেল শুভবোধ সম্পন্ন শিশুদের প্রতীক। শেখ রাসেলের আদর্শ, শুভবোধ এবং মানবিক গুণের আলোকে আমাদের শিশুদের গড়ে তুলতে হবে। তিনি পাঠ্যপুস্তকে শেখ রাসেলের জীবনী অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। এরপরে অনুষ্ঠিত হয় ‘পথ খুঁজছে শিশুসাহিত্য’ বিষয়ক সেমিনার। কবি ওমর কায়সারের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক আনজীর লিটন। আলোচক ছিলেন কবি আবু মুসা চৌধুরী, ছড়াশিল্পী রোমেন রায়হান, ছড়াকার সিতাংশু কর, শিশুসাহিত্যিক আজিজ রাহমান, শিশুসাহিত্যিক জাকির হোসেন কামাল। শেষে শিশুসাহিত্যিক বিপুল বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ছড়া-কবিতা পাঠে অংশ নেন অপু চৌধুরী, অপু বড়ুয়া, অভি ওসমান, অরূপ পালিত, আকাশ আহমেদ, আজিজা রূপা, আ ফ ম. মোদাচ্ছের আলী, আবদুল্লাহ ফারুক রবি, আবিদ শাহরিয়ার খান, আনজানা ডালিয়া, আনোয়ারুল হক নূরী, আমান উদ্দীন আবদুল্লাহ, আরিফ নজরুল, আলম মাহবুব, আলী আকবর বাবুল, আল-হাসনাত মাসুম শিহাব, আরাফাত হোসেন কাউসার, আসিফ ইকবাল, আহসানুল হক, ইকরামুল হক ইলি, ইমরান পরশ, ইসমত আরা নীলিমা, ইসমাইল জসীম, ওবায়দুল সমীর, এমিলি মজুমদার, এয়াকুব সৈয়দ। সঞ্চালক ছিলেন লেখক অধ্যাপক কাঞ্চনা চক্রবর্তী। বইমেলায় মোট ১২টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এগুলো হলো কথাপ্রকাশ, চন্দ্রাবতী একাডেমি, আদিগন্ত, বাঙালি, শৈলী, শব্দশিল্প, প্রজ্ঞালোক, অক্ষরবৃত্ত, রাদিয়া, শালিক, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, বাংলাদেশ শিশুসাহিত্য একাডেমি। মেলায় ৩০% কমিশনে বই বিক্রি হচ্ছে। আজকের অনুষ্ঠান : বিকেল সাড়ে ৫ টায় থাকছে ‘দূরে থেকেও কাছের যারা’। এ পর্বে যাঁদের লেখা থেকে পাঠ হবে, তাঁরা হলেন অজয় দাশগুপ্ত, বিশ্বনাথ চৌধুরী বিশু, সনতোষ বড়ুয়া, সুদীপ্ত দেব, খালেদ সরফুদ্দীন, শামস চৌধুরী রুশো, শ্রীধর দত্ত, সুলতানা নুরজাহান রোজী, মির্জা মোহাম্মদ আলী, দিল মোহাম্মদ। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় থাকবে ‘বাংলাদেশ শিশুসাহিত্য একাডেমি সম্মাননা’ প্রদান অনুষ্ঠান। এবার যাঁরা পদক পাচ্ছেন, তাঁরা হলেন : তপংকর চক্রবর্তী, সনজীব বড়ুয়া, রোকেয়া খাতুন রুবী, হাসনাত আমজাদ ও আশরাফুল আলম পিনটু। এ পর্বে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক এলিজাবেথ আরিফা মুবাশশিরা। প্রধান অতিথি থাকবেন ভাষাবিজ্ঞানী ড. মাহবুবুল হক, আলোচক থাকবেন কথাপ্রকাশের প্রকাশক জসিম উদ্দিন।

জাতীয়

সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ধর্মকে দাঁড় করানোর অপরাজনীতি রুখে দিন : ইনু

বিলেতের আয়না ডেক্স :- সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ধর্মকে দাঁড় করানোর অপরাজনীতি রুখে দিন : ইনু সোমবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন জাসদসভাপতি হাসানুল হক ইনু । বাঙালি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ধর্মকে দাঁড় করানোর অপরাজনীতি রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। আজ সোমবার জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। ধর্মের নামে মানুষ ও সমাজের মধ্যে ভাগাভাগি, অসহিষ্ণুতা, সহিংসতা, ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা, অশান্তি, অসমতা ও বৈষম্যের বিপরীতে সাম্য-সমতা-শান্তি-মানবতার বাণীকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে জাতীয় সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণের আহ্বানে দলীয়ভাবে দেশব্যাপী ‘লালন দিবস’ পালন করা হয়। এ উপলক্ষে জাসদের উদ্যোগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় লালনগীতি পরিবেশন, আলোচনা সভা, বাউল সমাবেশ, র‍্যালি ও পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাঙালির দেশজ সংস্কৃতির বিপরীতে ধর্মকে দাঁড় করানোর বস্তাপচা অপরাজনীতি রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইনু বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপরীতে ইসলাম ধর্মকে দাঁড় করিয়েছিল তারা এখনো বাঙালির দেশজ সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ধর্মকে দাঁড় করিয়ে রাজনীতি করছে। তিনি বলেন, লালন সাঁইজিসহ দেশের বাউল, বৈষ্ণব, সুফি, সাধকরা সব বৈষম্য ও অশান্তির বিরুদ্ধে সাম্য ও মানবতার বাণী প্রচার করেছেন। তারা শান্তির দূত ছিলেন। তিনি বলেন, বাউলিয়ানা বাঙালির সাংস্কৃতিক ভাণ্ডারের অমূল্য সম্পদ। তাই দেশজ বাঙালি সংস্কৃতিকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা করা এবং বাউলদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি বলেন, কেবল মানবতাবাদের বিকাশ নয়, শোষণমুক্তির সংগ্রামে লালনের দার্শনিক চিন্তা বাঙালি ও বিশ্বমানবের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা।

Scroll to Top