বিলেতের আয়না ডেক্স :- যুক্তরাজ্যের কারি অ্যাওয়ার্ডস সেরা শেফ ও রেষ্টুরেন্টের সম্মাননা প্রদান। নান্দনিক আয়োজনে যুক্তরাজ্যের সেরা শেফ ও রেষ্টুরেন্ট মালিকদের পুরস্কৃত করেছে কারি লাইফ মিডিয়া গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাজ্যের ৪০ জন শেফ ও রেষ্টুরেন্ট মালিক কে দিয়েছে। রোববার সেন্ট্রাল লন্ডনের অভিজাত গ্রোভনর হাউস হোটেলের ‘দ্য গ্রেট রুমে’ এবারের কারি লাইফ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান ও গালা ডিনারের আয়োজন করা হয়। এটি ছিল কারি অ্যাওয়ার্ডসের ১৩তম আসর। ৫টি বিভাগে এবার ৪০ জন সেরা শেফ ও রেষ্টুরেন্ট পুরস্কার প্রদান করা হয়। পাঁচটি বিভাগ হলো কারি লাইফ এডিটর, চয়েস অ্যাওয়ার্ডস, কারি লাইফ বেস্ট রেস্টুরেন্ট অ্যাওয়ার্ডস, বেস্ট শেফ অ্যাওয়ার্ডস, বেস্ট টেকওয়ে অ্যাওয়ার্ডস ও কারি লাইফ লেজেন্ড অ্যাওয়ার্ডস। পাশাপাশি তিনটি বিশেষ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ‘বেস্ট লাক্সারি বিজনেস হোটেল’ অ্যাওয়ার্ডস পেয়েছে ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল। কারি অ্যাওয়ার্ডসের এই সম্মাননা গ্রহণ করেন ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের মহাব্যবস্থাপক অশ্বিনী নায়ার ও বিপণন বিভাগের পরিচালক শহিদুস সাদেক। এবার রেষ্টুরেন্ট খাতে অসামান্য অবদান রাখায় আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবরার শেজান ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট নামের এক রেস্টুরেন্টের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল গণি। অশীতিপর এই ব্যবসায়ী প্রায় ৫০ বছর ধরে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা খাতের সঙ্গে যুক্ত। রেষ্টুরেন্ট খাতে দীর্ঘদিন অবদান রাখায় সম্মাননা পেলেন তিনি। কারি লেজেন্ড অ্যাওয়ার্ডস পেয়েছেন স্টোক অন ট্রেন্টের কিসমত রেস্টুরেন্টের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত আলাউদ্দিন আহমদ। তিনি ১৯৬২ সালে লন্ডনে স্টাফোর্ডশায়ারের প্রথম ভারতীয় রেস্টুরেন্ট খোলেন। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ছেলে সালাউদ্দিন ৬০ বছরের পুরোনো এ রেস্টুরেন্ট এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন। কারিশিল্পের অর্জন, সম্ভাবনা ও সংকট নিয়ে নিয়মিত প্রকাশনা ও বিভিন্ন দেশে ‘ব্রিটিশ কারি ফেস্টিভ্যাল’ আয়োজনের মাধ্যমে কারি লাইফ ইতিমধ্যে ব্রিটিশ কারিশিল্পের বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য মুখপত্র। যুক্তরাজ্যের কালিনারি ক্যালেন্ডারের বার্ষিক অন্যতম সেরা আয়োজন হিসেবেও স্থান করে নিয়েছে ‘কারি লাইফ অ্যাওয়ার্ডস’। যুক্তরাজ্যে কারিশিল্পের সম্মানজনক এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এবারও রেস্তোরাঁমালিক ও খাদ্যরসিকদের সরব উপস্থিতি ছিল। যুক্তরাজ্যে রেস্টুরেন্ট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যের মূলধারার রাজনীতিক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিভিন্ন ব্যক্তি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সরকারবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী পল স্কালি। বিশেষ অতিথি ছিলেন কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রিজের (সিবিআই) সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান লর্ড করণ বিলিমোরিয়া। আরও ছিলেন লেবার পার্টির এমপি এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশনারা আলী, অনলাইন অর্ডারিং কোম্পানি জাস্ট ইট ইউকের অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট ডিরেক্টর মার্ক ফিঞ্চ, ইংলিশ ফুটবল ক্লাব লেস্টার সিটির সদস্য বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত উদীয়মান ব্রিটিশ ফুটবলার হামজা চৌধুরী। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের সাংবাদিক ও লেখক অ্যাডাম বোল্টনের উপস্থাপনায় এবারের আয়োজনে অতিথিরা বিজয়ীদের হাতে অ্যাওয়ার্ডস তুলে দেন। কারি লাইফ ম্যাগাজিনের এবারের আয়োজনও ছিল নতুনত্বে ভরা। নজরকাড়া সাংস্কৃতিক আয়োজনের পাশাপাশি এবার বিশেষ মযার্দায় বিজয়ীদের মঞ্চে নেওয়া হয়। । অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কারি লাইফ সাময়িকীর সম্পাদক সৈয়দ বেলাল আহমদ। তিনি বলেন, ব্রেক্সিট, করোনা মহামারি, মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাপনের ব্যয় বৃদ্ধির পর যুক্তরাজ্যে এখন চলছে জ্বালানিসংকট। একের পর এক সংকটের কারণে কারিশিল্প খাত ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। লর্ড করণ বিলিমোরিয়া বলেন, কঠিন সময়ে জনগণ ও ব্যবসায়কে সহায়তা করার জন্য সরকার বেশ উল্লেখযোগ্য কিছু সহায়তা করেছে। কিন্তু এই সংকট এখনো শেষ জয়নি। তাই কারি ইন্ডাস্ট্রির মতো বিশাল একটি খাতকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের আরও সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে কারি ইন্ডাস্ট্রি ব্রিটেনের অর্থনীতিতে বছরে প্রায় শত শত পাউন্ডের অবদান রাখে। প্রতিমন্ত্রী পল স্কালি বলেন, ‘আমরা হসপিটালিটি সেক্টরের পাশে আছি, থাকবে। এই খাত যাতে আরও উন্নতির দিকে যায়, সে লক্ষ্যে কাজ করবে।’ এ প্রসঙ্গে করোনার সময়ে সরকারি প্রণোদনার কথা উল্লেখ করেন তিনি। জাস্ট ইট ইউকের অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট ডিরেক্টর মার্ক ফিঞ্চ বলেন, অনলাইনে খাবার অর্ডারের তালিকায় শুরু থেকে এখনো শীর্ষে রয়েছে কারি।