অক্টোবর ৮, ২০২২

জাতীয়

শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মূখর পরিবেশে শারদীয় দূর্গোৎসব পালনে সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর সন্তোষ প্রকাশ।

বিলেতের আয়না রিপোর্ট :- শ‌হিদুল ইসলাম, সিলেট প্রতি‌নি‌ধি শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মূখর পরিবেশে শারদীয় দূর্গোৎসব পালনে সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর সন্তোষ প্রকাশ। সকল শংকা ও গুজবকে মিথ্যা প্রমান করে সুন্দর, সুষ্ঠু, আনন্দময় এবং শান্তিপূর্ন পরিবেশে এ’বছর শারদীয় দূর্গোৎসবের সমাপ্তি হয়েছে। এই বছর দেশের কোথাও উৎসবানন্দে বিঘœ ঘটেনি। সারাদেশে পুজা মন্ডপের সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ১৬৮ টি, যা সর্বাধিক। গত ২৫ সেপ্টেম্বর সম্প্রীতি বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মূখর পরিবেশে শারদীয় দূর্গাপুজা পালনে সর্ব ধর্মের এবং সর্বস্তরের মানুষকে সক্রিয় ও সবল ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়েছিল। বিবৃতিতে বলা হয়েছিল যে সরকার, প্রশাসন এবং শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর উপর দায়িত্ব ছেড়ে না দিয়ে, এগিয়ে আসতে হবে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাশ্রিত এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে লালিত সচেতন বাঙালিকে। গড়ে তুলতে হবে অসাম্প্রদায়িকতার দৃঢ় ঐক্য। বিনষ্ট করতে হবে ধর্মান্ধ, উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক জঙ্গী গোষ্ঠির সকল ষড়যন্ত্র এবং কুৎসিত আঘাত। আমাদের এই ক্ষুদ্র ভূখন্ডের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতির উজ্জল পরম্পরাকে চির জাগরুক রাখতে সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর আহবান সার্থক হয়েছে। এ’জন্য সর্বধর্ম নির্বিশেষে সমাজের সকল স্তরের মানুষের বিশেষ ভূমিকার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানায় সম্প্রীতি বাংলাদেশ। উল্লেখ্য যে, ২০২২ সালের ০৯ অক্টোবর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও পবিত্র একটি দিন। এই দিনে একই সাথে উদযাপিত হবে ইসলাম ধর্মালম্বিদের ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী, বৌদ্দ ধর্মালম্বিদের প্রবারণা পূর্ণিমা এবং হিন্দু ধর্মালম্বিদের কোজাগরী লক্ষী পূজা। যথাযথ সম্মান জানিয়ে দিনটি পালনের আহবান জানায় সম্প্রীতি বাংলাদেশ। “ধর্ম যার যার উৎসব সবার” মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই অসাম্প্রদায়িক ঘোষনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কার্যকরি ভূমিকাকে সম্প্রীতি বাংলাদেশ সাধুবাদ জানায়। যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশ বিশ্বমাঝে অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ হিসেবে পরিচিত, যেখানে সকল ধর্মের মানুষ নির্বিঘেœ নিজ নিজ ধর্ম পালন করে। সর্ব ধর্মের মানুষের মিলিত রক্তস্রোতের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে জাতির পিতা তাই ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ কে অতীব গুরুত্বসহ সন্নিবেশিত করেন। এই বছরের মত সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে শুভবাদী মানুষের ঐক্য যেন ভবিষ্যতেও অটুট থাকে এটাও কামনা করে সম্প্রীতি বাংলাদেশ। সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলসহ বিবৃতিদাতাদের ভেতর রয়েছেন, স্বাক্ষর করেছেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, ডাকসুর প্রথম মহিলা ভি.পি মাহফুজা খানম, আপীল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার, ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সচিব এ কে এম আতিকুর রহমান, সাবেক সচিব নাসির উদ্দিন আহম্মেদ, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামূল হক ভুইয়া, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক হারুন অর রশীদ, একুশে পদকপ্রাপ্ত আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ এস এম আব্রাহাম লিংকন, উপাচার্য অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহম্মেদ, সাবেক উপাচার্য ড. রশিদ আশকারী,অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বাবু, মেজর জেনারেল জন গোমেজ (অব.), ড. রতন সিদ্দিকী,রেভারেন্ড মার্টিন অধিকারী, উপাচার্য অধ্যাপক ছাদেকুল আরেফিন মাতিন, জেষ্ঠ সাংবাদিক শরীফ শাহাবুদ্দিন, জেষ্ঠ্য সাংবাদিক শোয়েব চৌধুরী, জেষ্ঠ্য সাংবাদিক আলি হাবিব,উপাচার্য অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর, অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ূয়া, উপাচার্য ড. মো. নাসিম আখতার, উপাচার্য ড. মাহমুদ হোসেন, অধ্যাপক নূজহাত চৌধুরী, অধ্যাপক সাদেকা হালিম, জেষ্ঠ সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাস (রা.বি), অধ্যাপক এ কে এম শাহনাওয়াজ (জা.বি), অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক, অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন, অধ্যাপক আসাদুজ্জামান চৌধুরী, অধ্যাপক ড. ফরিদুল আলম, অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, অধ্যাপক অসীম সরকার, অধ্যাপক বিমান চন্দ্র বড়ূয়া, অধ্যাপক আব্দুল খালেক (সাতক্ষীরা), অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামানিক (রা.বি), অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, সাবেক ছাত্রনেতা মিহির কান্তি ঘোষাল, বিশিষ্ট অভিনয় শিল্পী জয়শ্রী কর জয়া, অধ্যাপক আ.ব.ম ফারুক, সাবেক যুবনেতা ও আইটি বিশেষজ্ঞ মাহবুব জামান, সাবেক যুবনেতা মো. হিলাল উদ্দিন, নিরঞ্জন রায় (কানাডা), বদিউজ্জামান খান নাসিম (যুক্তরাষ্ট্র), মোস্তফা ফরিদ (যুক্তরাষ্ট্র), লোকমান হোসেন (যুক্তরাজ্য), আজিজ আহম্মেদ (যুক্তরাজ্য), দেলোয়ার হোসেন (সুইডেন), নজরুল ইসলাম (অস্ট্রিয়া),বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সুশান্ত ঘোষ (সাতক্ষীরা), অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ মোল্লা (সাতক্ষীরা), মিলন ব্যানার্জী (বাগেরহাট), লিয়াকত হোসেন (বাগেরহাট) এডভোকেট নরেশ মুখার্জী (বগুড়া), আব্দুস সালাম (নাটোর), এম সাইফুল মাবুদ (ঝিনাইদহ), কবি সাজ্জাদ আনসারী (জামালপুর), ডা. হরিপদ রায় (শ্রীমঙ্গল), তপন সেন (রাজশাহী), অধ্যাপক ননী গোপাল সরকার (নেত্রকোনা) সৈয়দা সায়েরা মহসিন (মৌলভীবাজার), অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার (ময়মনসিংহ), বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সুশান্ত ঘোষ (সাতক্ষীরা), মবিনুল হক মবিন (যশোর), অধ্যাপক এ.কে.এম গিয়াস উদ্দিন (কক্সবাজার) প্রমুখ।

জাতীয়

সম্প্রীতির প্রবারণায় আলোকিত ফানুসের আলোয় আলোকিত হোক পৃথিবী।

বিলেতের আয়না রিপোর্ট :- সিলেট প্রতিনিধি, উৎফল বড়ুয়া সম্প্রীতির প্রবারণায় আলোকিত ফানুসের আলোয় আলোকিত হোক পৃথিবী। প্রবারণা: প্রবারণা বৌদ্ধ ধর্মীয় অনুশাসনের অন্যতম এক ধর্মীয় উৎসব। আত্নন্বেষণ ও আত্ন সমপর্ণ এর তিথি। এটি গৌতম বুদ্ধ তাঁর ভিক্ষু সংঘের জন্য প্রবারণা অনুজ্ঞা প্রদান করেছিলেন-ভিক্ষু তিন মাস বর্ষাবাস ব্রত পালনোত্তর আসে প্রবারণা। বর্ষাবাসব্রত পালন কালে ভিক্ষুসংঘ সদ্ধর্মাচারের গভীর ভাবে অনুধ্যান ও অনুবেদনে ব্যাপৃত থাকেন, তাই প্রতিটি বিহারে ভিক্ষুসংঘ পরস্পরের সাথে বাস করেও বর্ষাবাস কালীন প্রায় একাচারী জীবন যাপন করেন। কারণ এ সময় বর্ষাব্রতের শৃংখলা রক্ষার্থে ভিক্ষুসংঘ পরস্পরের সাথে আলাপচারিতা বর্জন করতেন গৌতম বুদ্ধ এরূপ নিস্পাণ মৌনব্রত অবিধেয় বলেছেন। গৌতম বুদ্ধ শ্রাবস্তীতে অনাথপিন্ড শ্রেষ্ঠীর আরামে অবস্থানকালে কৌশল জনপদে বর্ষাবাস যাপনকৃত ভিক্ষুসংঘের জীবনাচার বিধি অবগত হয়ে বুদ্ধ বর্ষাবাস তিনমাস বর্ষাবাসব্রত পালনোত্তর প্রবারণা পালনের সূচনা হয়। যা আজও যথাযথ শ্রদ্ধা,ধর্মীয় মর্য়াদায় ও আন্তরিক অনুশীলনের মাধ্যমে ভিক্ষুসংঘের ধর্মাচারের ধারায় গুরুত্বের সাথে পালিত হচ্ছে। প্রবারণার অর্থ: প্রবারণার শাব্দিক অর্থ প্রকৃষ্ট রূপে বারণ বা নিষেধকরণ। সেই নিষেধযোগ্য বিষয় সমূহ হলো-আচরণীয় ক্ষেত্রে ত্রুটি নৈতিক স্থলন এবং সর্বোপরি চিত্তের মল(লোভ,বিদ্বেষ ও মোহ)এগুলোর নিরোধমূলক অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকলে এগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা যায়। প্রকৃত অর্থে এগুলোই হলো(লোভ,বিদ্বেষ ও মোহ) মানুষের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে মূল অন্তরায়। এই অন্তরায় হতে দুরে থাকার জন্য চঞ্চল চিত্তের জন্য দরকার পরিশুদ্ধ অবলম্বন। তাই ‘প্রবারণার’ আর একটি অর্থ হলো ‘বরণ’ অর্থাৎ শুভ, শুদ্ধ, সুন্দর ও সু-আচারকে বরণ। বৌদ্ধ পরিভাষায় বলা যায় অকুশলকে বারণ এবং কুশলকে বরণই হলো প্রবারণা। বলাবাহুল্য শুধু কৃতকর্মের জন্যই প্রবারণা নয়। গৌতম বুদ্ধের অনুজ্ঞা মতে চিত্তের অন্তলীন কমনা-বাসনা অথবা অনুমেয় ও আশন্কিত মনোবাসনার জন্যও প্রবারণা আবশ্যক। ত্রিপিটকের মহাবর্গ গন্থে দেখা যায় বুদ্ধ ভিক্ষুদের বলেছেন-“ভিক্ষুগণ দৃষ্টশ্রুত অথবা আশান্কিত ত্রুটি বিষয়ে প্রবারণা করিবে”। প্রবারণার আর একটি বিশেষ গুণ হলো-এর মাধ্যমে সাংঘিক জীবনের পরস্পরের প্রতি নির্ভরশীলতা, অপরাধ প্রবণতা দূরীকরণ এবং বিনয়আনুবর্তিতা সুদৃর করণে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। সে দিক থেকে প্রবারণার সরলীকৃত স্বরূপ হলো “আত্নশুদ্ধি ও উৎসব”। ভিক্ষু সংঘ এই তিথিতে পরস্পরের কাছে স্ব-স্ব দৃষ্টশ্রুত অথবা আশন্কিত অপরাধ প্রসঙ্গে মাজর্না কামনা করেন এবং জ্ঞাতসারে যদি কোন অপরাধ ঘটে যায় তার জন্য বিনয় সন্মত প্রতিবিধান প্রদানের কাজটিও প্রবারণায় হয়। সুতরাং মহান ভিক্ষুসংঘের জীবনে প্রবারণার গুরুত্ব অপরিসীম। প্রবারণার ফানুস সংস্কৃতিঃ প্রবারণা পূর্ণিমার উৎসবে কখন থেকে কীভাবে যে ফানুস উৎসবের সংযোগ হেছে তা সঠিকভাবে বলা দুস্কর। শাস্ত্রে ফানুসের বৃত্তান্ত বিশেষভাবে দৃষ্টও হয় না। নির্দিষ্ট কোন অনুষ্ঠানে বুদ্ধের সময়ে ফানুস উৎসবের আয়োজন হতো এরকম কোন ইঙ্গিত মেলে না। এ প্রসঙ্গে অনেকের সাথে কথা বলে নানা বিষয় সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। যে তত্ত্ব বা তথ্য সমূহকে এক কথায় বলা যায় এ যুগের ভাবনা। যেমন অনেকের মতে বুদ্ধের সময়ে কাগজের ব্যবহার ছিল কি না ? এরূপ সংশয়ও আছে। কিন্তু জাতকে দেখা যায় সে সময় কাগজের ব্যবহার,চিত্র শিল্পের ব্যবহার ইত্যাদি ছিল। হয়ত আজকাল ফানুষ তৈরিতে যে মসৃন পাতলা কাগজ ব্যবহৃত হয় তা ছিল না। এছাড়া ফানুসের কথা কোথাও সরাসরি উল্লেখ নেই। জাতকে কার্তিকোৎসবের কথা দেখা যায় যা কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে অনুষ্ঠিত হতো। এ উৎসব দু’তিন দিন স্থায়ী হওয়ার তথ্যও পাওয়া যায়। এ প্রেক্ষিতে এটিই অনুমিত হয় যে, সে সময় যেহেতু কঠিন চীবর দানোৎব(যা প্রবারণার পর হতে শুরু হয়) এত জাঁকজমক করে আয়োজন হতো না। এছাড়া বর্ষাবাস বর্ধিত করায় এবং আষাঢ়ী পূর্ণিমায় বর্ষাবাস ব্রত শুরু করতে না পারলে শ্রাবণী পূর্ণিমায় শুরু করার বিধান রয়েছে । সে হিসাবে বর্ষাবাস সমাপনোত্তর এটি কার্তিক উৎসব বলে ধরা হয়। এখানে বহুমাএিক ধর্মীয় ও আনন্দ উৎসবের আয়োজন হতো। হয়ত তারই ধারাবাহিকতায় আজকের প্রবারণা পূ্ণিমায় বহুবিধ সামাজিক আনন্দ উৎসবের সংযোজন। যার ফানুস উত্তোলন একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় । কিন্তু শাস্এীয় বিশেজ্ঞদের মধ্যে অনেকে এ বিষয়ে আবার অন্যমতও পোষণ করেন। যা বৌদ্ধরা অনাদিকাল হতে শ্রুতি পরস্পরায় নিজেদের অন্তরে জাগরুক করে রেখে ফানুসের প্রজ্জ্বলিত আলোক ধারায় আকাশস্থিত গৌতম বুদ্ধের চুলগুচ্ছকে বন্দনা জ্ঞাপন। এই চৈতন্যের আলোকেই অত্যন্ত শ্রদ্ধাচিত্তে প্রবারণা পূর্ণিমায় ফানুস উত্তোল সংস্কৃতিতে লালন করে চলেছে। ফানুস বৌদ্ধ সংস্কৃতির একটি অনন্য সংযোজন। এটি আজ শুধু ধমীর্য় বিষয় নয় অন্যতম একটি সামাজিক উৎসব। ফানুস উৎসব উপভোগ করার জন্য জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রবারণা পূর্ণিমায় বৌদ্ধ বিহার গুলোতে সমবেত হয়। তাই ঐতিহ্য ও ইতিহাসের অন্যতম বিষয় হিসেবে এই ফানুস উৎসবকে যথাযথ মযার্দায় সজীব রাখা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য এই ফানুস উৎসবের জন্য প্রবারণা পূর্ণিমার সামাজিক অধ্যায় বা প্রভাব বহুলাংশে সর্বজনীনতা লাভ করেছে । প্রবারণা উৎসবের দিন সমাপনোত্তর ফানুস(আকাশ প্রদীপ) উড়িয়ে বৌদ্ধরা বিশ্বের সকলের সুখ,শান্তি ও সকল অন্ধকারকে প্রশ্চাতপদ করে আলোকিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিশ্বময় করার আর একটি প্রয়াসও বটে । সম্প্রীতির প্রবারণায় আলোকিত ফানুসের আলোয়  আলোকিত হোক পৃথিবী, দূর হোক পৃথিবীর সমস্ত অন্ধকাার। বিশ্বে শান্তি আসুক, চেতনা হোক প্রজ্ঞায় উদ্ভাসিত। লেখকঃ উৎফল বড়ুয়া, সভাপতি, বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদ, সিলেট অঞ্চল, সংগঠক ও মানবাধীকার কর্মী।

জাতীয়

মহানবীর আদর্শ অনুসরণেই মানবজাতির জন্য কল্যাণকর – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- মহানবীর আদর্শ অনুসরণেই মানবজাতির জন্য কল্যাণকর। – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই মানবজাতির অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে। আগামীকাল রোববার (৯ অক্টোবর) ‘ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে আজ এ কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারী, বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম এবং ওফাতের পবিত্র স্মৃতি বিজড়িত ১২ রবিউল আউয়াল তথা ‘ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মুসলমানদের জন্য বিশেষ দিন। এ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মুসলিমদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, মহান আল্লাহ আমাদের প্রিয়নবীকে (সা.) এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন শান্তি, মুক্তি, প্রগতি ও সামগ্রিক কল্যাণের জন্য রাহমাতুল্লিল আলামিন তথা সারা জাহানের রহমত হিসেবে। নবী করিম (সা.)-কে বিশ্ববাসীর রহমত হিসেবে আখ্যায়িত করে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বজগতের জন্য রহমতরূপে প্রেরণ করেছি’ (সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ১০৭)। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) এসেছিলেন তাওহীদের মহান বাণী নিয়ে। সবধরনের কুসংস্কার, অন্যায়, অবিচার, পাপাচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তির বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তিনি। বিশ্ববাসীকে তিনি মুক্তি ও শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়ে অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়েছিলেন এবং সত্যের আলো জ্বালিয়েছেন। তিনি বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন এবং মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করে বিশ্বে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বশান্তির অগ্রনায়ক রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, নাগরিকদের মধ্যে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখাসহ নানা দিক বিবেচনা করে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেন মানব ইতিহাসের প্রথম প্রশাসনিক সংবিধান ‘মদিনা সনদ’। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় মহানবীর (সা.) অনবদ্য ভূমিকার আরেকটি অনন্য স্মারক হুদায়বিয়ার সন্ধি। বাহ্যিক পরাজয়মূলক হওয়া সত্ত্বেও কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তিনি এ সন্ধিতে সই করেন। তার অমিত সাহস, ধৈর্য ও বিচক্ষণতা তখনকার মানুষকে যেমন বিমুগ্ধ করে, তেমনি অনাগত মানুষদের জন্যও শান্তি প্রতিষ্ঠার আদর্শ ও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, মহানবীর (সা.) শান্তিপূর্ণ ‘মক্কা বিজয়’ মানব ইতিহাসের এক চমকপ্রদ অধ্যায়। তিনি বিনা যুদ্ধে ও রক্তপাতে মক্কা জয় করেন। শত অত্যাচার-নির্যাতন ও যুদ্ধ করে আজীবন যে জাতি নবী করিম (সা.)-কে সীমাহীন কষ্ট দিয়েছে, সেসব জাতি ও গোত্রকে মক্কা বিজয়ের দিন ক্ষমা করে তাদের সঙ্গে উদার মনোভাব দেখিয়ে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষমা ও মহত্ত্বের দ্বারা মানুষের মন জয় করে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার এমন নজির বিশ্বে দুর্লভ। করোনাভাইরাস মহামারিসহ আজকের দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে প্রিয়নবীর (সা.) অনুপম জীবনাদর্শ, তার সর্বজনীন শিক্ষা ও সুন্নাহর অনুসরণ এবং ইবাদতের মাধ্যমেই বিশ্বের শান্তি, ন্যায় এবং কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে। তাই ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর শিক্ষা সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুসরণীয় বলে আমি মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারপ্রধান আরও বলেন, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) এর এই দিনে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহ তথা বিশ্ববাসীর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করছি। মহান আল্লাহ আমাদের মহানবীর(সা.) সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ যথাযথভাবে অনুসরণের মাধ্যমে দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে কাজ করার তৌফিক দান করুন।

আন্তর্জাতিক

বুকের দুধে মাইক্রোপ্লাস্টিকের সন্ধান।

বিলাতের আয়না ডেক্স :- মায়েদের বুকের দুধে মাইক্রোপ্লাস্টিকের সন্ধান।  ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মায়েদের বুকের দুধে সন্ধান মিলেছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। এর ফলে নবজাতক শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। শিশু জন্ম দেয়ার পর সুস্থ ৩৪ জন মায়ের কাছ থেকে দুধের নমুনা সংগ্রহ করেন গবেষকরা। তা নিয়ে গবেষণায় তারা মাইক্রোপ্লাস্টিকের সন্ধান পান। গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন ওইসব মায়ের চারভাগের তিন ভাগের বুকের দুধেই মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব আছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল। এতে বলা হয়েছে, প্রতি বছর সারাবিশ্বে উৎপাদন হয় কমপক্ষে ৩৪ কোটি ৪০ লাখ টন প্লাস্টিক। এসব প্লাস্টিক যখন ভেঙে ফেলা হয় বা রিসাইকেল করা হয়, তখন বড় ঝুঁকির কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ, আমরা যে বাতাসে নিশ্বাস নিই, তাতে এই প্লাস্টিক পার্টিক্যাল বা কণার সন্ধান মিলেছে। সমুদ্রে প্লাস্টিকের সন্ধান মিলেছে। পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে প্লাস্টিকের সন্ধান মিলেছে। এমনকি মাছের পেটেও প্লাস্টিকের বোতল পাওয়া গেছে। নতুন করে গবেষকরা এ নিয়ে গবেষণা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। তাতে ক্রমবর্ধমান হারে প্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে আমাদের শরীরের ভিতরে। অথচ এই প্লাস্টিক নামের বস্তুটি আবিষ্কার হয়েছে সবেমাত্র বিংশ শতাব্দীতে। মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় নবজাতকের শরীরে, মানুষের ব্রেনে আর সর্বশেষ মায়েদের বুকের দুধে সন্ধান মিলল এই প্লাস্টিকের। তা সত্ত্বেও এখনও বিজ্ঞানীরা বলছেন, নবজাতকের জন্য সবচেয়ে সেরা খাবার মায়ের বুকের দুধ। এসব শিশুকে প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করে গুঁড়ো দুধ বা অন্য যেকোনো ‘ফমুলা দুধ’ পান করানোর মাধ্যমে তার শরীরে উচ্চ মাত্রায় প্লাস্টিকের মজুদ গড়ে তুলতে পারে। প্লাস্টিকের কারণে নানারকম স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে প্লাস্টিককে নরম করতে ব্যবহার করা হয় পথালটেস নামের একটি রাসায়নিক পদার্থ। এই পদার্থটি মানুষের যৌন হরমোনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। বছরের পর বছর ধরে প্লাস্টিকের কণা জমা হচ্ছে বলে মনে করা হয়। গবেষকরা বড় থেকে বড় পরিসরে প্রমাণ দিচ্ছেন ল্যাবরেটরিতে মানুষের কোষ এবং পশুর ওপর কিভাবে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে এসব প্লাস্টিক। সর্বশেষ পরীক্ষায় অংশ নেয়া মায়েরা সন্তান জন্ম দেয়ার এক সপ্তাহ পরে তাদের কাছ থেকে এক গ্রাম দুধ সংগ্রহ করা হয়। এই দুধে যাতে অন্য কোনো কিছুর সংক্রমণ না ঘটে সে জন্য মায়েদের কাছ থেকে প্লাস্টিকের তৈরি নয় এমন কন্টেইনারে সংগ্রহ করা হয় ওই দুধ। ‘ব্রেস্ট পাম্পিং’ সিস্টেমে নয়, হাতের চাপে সংগ্রহ করা হয় এই দুধ। এসব নমুনায় এক থেকে ৫টি মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। পলিমার নামের জার্নালে এ নিয়ে গবেষকরা লিখেছেন, মানুষের শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি এখন অনিবার্য হয়ে উঠেছে। এসব প্লাস্টিক পার্টিক্যাল এসেছে পিভিসি, পলিইথিলিন, পলিপ্রোপাইলিন সহ সব রকম প্লাস্টিক পণ্য থেকে। এর মধ্যে আছে প্লাস্টিকের বোতল, প্যাকেজিং, সিনথেটিক লেদার, ফ্লোর টাইলস এবং ফার্নিচারের কভার থেকে। এই গবেষণা করেছেন ইতালিয়ান একটি গবেষক দল। তারা প্রথমে নবজাতকের প্লাসেন্টায় মাইক্রোপ্লাস্টিকের সন্ধান পান ২০২০ সালে। এই গবেষক দলে আছেন, আনকোনায় অবস্থিত ইউনিভারসিটা পালিটেকনিকা ডেলে মার্চের ড. ভ্যালেন্টিনা নোটারস্টেফানো। তিনি বলেছেন, মায়েদের বুকের দুধে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এর ফলে নবজাতকরা চরম বিপন্ন অবস্থায় পড়বে। ফলে নারী যখন অন্তঃসত্ত্বা থাকেন এবং শিশুকে বুকের দুধ পান করান তখন তার শরীরে যাতে প্লাস্টিকের উপস্থিতি না থাকে, তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, আমাদের গবেষণার ওপর ভিত্তি করে মায়ের বুকের দুধ শিশুকে পান করানো কমিয়ে দেয়া উচিত হবে না। কিন্তু রাজনীতিকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে তারা দূষণ কমিয়ে আনার জন্য আইন করেন।

Scroll to Top