সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২

আন্তর্জাতিক

বিরোধী দলের নেতা স্যার কেয়ার স্টারমার সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- বিরোধী দলের নেতা স্যার কেয়ার স্টারমার সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। ব্রিটেনের বিরোধী দলের নেতা ও লেবার পার্টির প্রধান স্যার কেয়ার স্টারমার বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য চমৎকার সম্পর্কে আবদ্ধ এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকদের দ্বারা এই সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার আবাসস্থলে সাক্ষাৎকালে তিনি শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী এখন প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে চারদিনের সফরে লন্ডনে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং জানায়, শেখ হাসিনা রানীর মৃত্যুতে তাঁর গভীর শোক পুনর্ব্যক্ত করেছেন। স্যার স্টারমার রানীর স্মরণে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তারা ব্রিটেনের লেবার পার্টির সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্যার হ্যারল্ড উইলসনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাক্ষাৎ এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথাও স্মরণ করেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেওয়া বাণীর জন্য প্রধানমন্ত্রী লেবার পার্টি নেতাকে ধন্যবাদ জানান। স্যার স্ট্রারমার ২০১৬ সালে তার বাংলাদেশ সফর এবং সে সময় প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন। তিনি যুক্তরাজ্যজুড়ে লেবার পার্টি থেকে ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লোক প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, লেবার পার্টি তরুণ প্রজন্মের নেতাদের সহায়তা ও উৎসাহ-উদ্দীপনা দানে কাজ করছে, যা আরও ব্রিটিশ-বাংলাদেশী তরুণদের আকৃষ্ট করবে। দুই নেতা ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাব বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথের ওপর আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষকে খাদ্য, জ্বালানি ও আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা থেকে রক্ষা করতে আলোচনার মাধ্যমে সংঘাতের নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জনগণের ওপর ভিন্নরকম প্রভাব ফেলছে কিনা, তা পর্যালোচনার পরামর্শ দেন। উভয় পক্ষ চলমান মুদ্রাস্ফীতির চাপ এবং জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের কারণে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কে সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে মত বিনিময় করে। লেবার পার্টির নেতা বলেন যে, তারা যুক্তরাজ্য ও পশ্চিমের বড় খুচরা বিক্রেতাদের জন্য তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারকদের সাথে ব্যয় ভাগ করে নেওয়ার পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখবে। স্যার স্টারমার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলার প্রশংসা করেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশের সাথে কাজ করার জন্য লেবার পার্টির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে জলবায়ু অংশীদারিত্বের প্রসারের প্রশংসা করেন। শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতির কারণে বাংলাদেশের ওপর ক্রমবর্ধমান বোঝা সম্পর্কে লেবার পার্টির নেতাকে অবহিত করেন। তারা বাংলাদেশের সীমান্তের কাছাকাছি সশস্ত্র সংঘাতের সাম্প্রতিক বিস্তার নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশ তার ভূখন্ডের অভ্যন্তরে সংঘাতের উপচে পড়ার প্রভাব ছড়িয়ে পড়া সত্ত্বেও, সর্বোচ্চ সংযম অনুশীলন করছে। পরে মেরিলেবোনের লর্ড স্বরাজ পাল তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। যুক্তরাজ্যের হাউস অফ লর্ডসের প্রবীণ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের জন্য তার প্রশংসা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক ও শিক্ষা অংশীদারিত্ব আরও এগিয়ে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

আন্তর্জাতিক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সাথে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ

বিলেতের আয়না ডেক্স :- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সাথে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ব্রিটেনকে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে শাসন করে গেছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে তিনি সুসম্পর্ক ধরে রেখেছিলেন। সফর করেছেন পৃথিবীর নানা প্রান্তে। এমনকি বাংলাদেশেও এসেছিলেন তিনি। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তার বর্ণাঢ্য জীবনের বিভিন্ন ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সামনে এসেছে রানির সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাক্ষাতের দুর্লভ এক মুহূর্তের ছবি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর একজন প্রগতিশীল রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে শেখ মুজিব বিশ্ব নেতৃত্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতেন। এরই অংশ হিসেবে লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেসে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও প্রিন্স ফিলিপের সঙ্গে দেখা করেন বঙ্গবন্ধু। দুর্লভ ওই মুহূর্তের ছবিটিতে রানি এলিজাবেথের সঙ্গে করমর্দন করতে দেখা যায় বঙ্গবন্ধুকে। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রিন্স ফিলিপ। কেউ কেউ বলছেন, ছবিটি ১৯৭৩ সালের। সেবার কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার সময় লন্ডনে রানির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় বঙ্গবন্ধুর। তবে সেই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল কানাডার অটোয়ায়। তাই ছবিটি কমনওয়েলথ সম্মেলনের আগে তোলা নাকি পরের, সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের আগে ১৯৬১ সালে একবার এই ভূখণ্ডে এসেছিলেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। এরপর বঙ্গবন্ধুর সৌহার্দ্যতার ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব আরও গাঢ় হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে আবারও বাংলাদেশে সফর করেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ওই রাজকীয় সফরকালে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ১৮ মাইল সড়কের বিভিন্ন স্থানে ‘বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক’ লেখা রঙিন ব্যানার এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের পতাকা শোভিত ছিল। এরপর থেকে রানির সৌজন্যের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে একাধিক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করেছেন।

আন্তর্জাতিক

বিশ্বে দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বে ৩৪ কোটি মানুষ।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- বিশ্বে দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বে ৩৪ কোটি মানুষ। বিশ্বের ৮২টি দেশের অন্তত ৩৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ চূড়ান্ত খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে; এবং যদি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হয়, সে ক্ষেত্রে শিগগিরই এই সংখ্যার সঙ্গে আরও ৭০ কোটি মানুষ যুক্ত হবেন। জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান ডেভিড বিসলি বৃহত্তম এই বৈশ্বিক সংস্থার সবচেয়ে প্রভাবশালী বিভাগ নিরাপত্তা পরিষদের শুক্রবারের বৈঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর আল জাজিরার। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে নিজ বক্তব্যে জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের এই শীর্ষ নির্বাহী বলেন, করোনা মহামারীর শুরুর পর্যায়ে বিশ্বজুড়ে যত সংখ্যক মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল, মহামারীর আড়াই বছরে এই সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্তত ৪৫টি দেশে দুর্ভিক্ষ পরিস্থতির সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে বিসলি বলেন, ‘মহামারীর আগ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ক্ষুধার যে ঢেউ ছিল, মহামারীর প্রভাবে তা সুনামিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে খাদ্যপণ্যের মূল্য যে হারে বাড়ছে, তা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২৩ সালে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্য সংকট শুরু হবে। ফলে শিগগিরই বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিভাগের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথও উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ সুদান, ইয়েমেন, সোমালিয়া, আফগানিস্তানসহ এশিয়া ও আফ্রিকার বেশ কিছু দরিদ্র দেশে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ইতোমধ্যেই মানবিক বিপর্যয় পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সোমালিয়ায় ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেছে। অন্যান্য দেশে এখনো দুর্ভিক্ষ শুরু না হলেও অবস্থা খুবই সঙ্গিন। সেসব দেশে লাখ লাখ মানুষ এক বেলাও ঠিকমতো খেতে পারছে না।’ সংকটে থাকা বিভিন্ন দেশের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে গ্রিফিথ বলেন, ‘ইয়েমেনে গুরুতর খাদ্যাভাবে ভুগছে অন্তত ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ এবং দেশটির অন্তত ৫ লাখ ৩৮ হাজার শিশু অপুষ্টির শিকার। দক্ষিণ সুদানে বর্তমানে ৬০ শতাংশ মানুষের হাতে পুষ্টিকর খাদ্য কেনার মতো অর্থ নেই। ইথিওপিয়ায় এই সংখ্যা আরও বেশি- ১ কোটি ৩০ লাখ। নাইজেরিয়ায় দুই বেলা খাবারের নিশ্চয়তা নেই- এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ।’

Scroll to Top