সিলেটি নাট্যাভিনেতা মুরাদের বহিষ্কারাদেশ ‘কেন অবৈধ হবে না’ মর্মে হাইকোর্টের রুল।
বিলেতেৱ আয়না ডেক্স :- সিলেটি নাট্যাভিনেতা মুরাদের বহিষ্কারাদেশ ‘কেন অবৈধ হবে না’ মর্মে হাইকোর্টের রুল। সিলেটি নাটকের অভিনেতা ও সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের ‘চাকরিচ্যুত’ নকলনবিশ বেলাল আহমদ মুরাদের উপর আরোপিত বহিষ্কারাদেশ ‘কেন অবৈধ হবে না’ মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও কাজি দিনাত হকের দ্বৈত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। বিষয়টি সিলেটভিউ-কে নিশ্চিত করেছেন হাইকোর্টের আইনজীবি মো. জয়নুল হোসেন রুবেল। তিনি জানান- এ রুল আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইন্সপেক্টর (জেনারেল অব রেজিস্ট্রেশন), সিলেট জেলা রেজিস্ট্রার, সাব-রেজিস্ট্রার (সিলেট সদর) ও সাব-রেজিস্ট্রার (বালাগঞ্জ)-এর বিরুদ্ধে ইস্যু করা হয়েছে। ৪ সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে সংশ্লিষ্টদের আদেশ দিয়েছেন মহামান্য হাইকোর্ট। অ্যাডভোকেট জয়নুল হোসেন রুবেল বলেন, বেলাল আহমদ মুরাদকে গত বছরের ৬ নভেম্বর সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে জেলা রেজিস্ট্রার বহিষ্কার করেন। অভিযোগ আনা হয়- মুরাদ বালাম বই লিখেন না ও নিয়মিত ডায়েরি মেনটেইন করেন না। অথচ অভিযোগকারী ফরিদুর রহমান নামে কোনো ব্যক্তির অস্তিত্বই নেই। বিষয়টি আমরা মহামান্য আদালতের নজরে এনেছি, কী করে একটি বেনামি চিঠির প্রেক্ষিতে একজনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এর প্রেক্ষিতেই মহামান্য হাইকোর্ট এ রুল জারি করেছেন। বেলাল আহমেদ মুরাদকে ‘চাকরিচ্যুত’ করার পর গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (১ম) মো. সুমন ভূইয়ার আদালতে দুই কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মানহানি মামলা করেন তিনি। তিনি ওই মামলায় অন্যায় ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে জোরপূর্বক চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। মামলায় সিলেট জেলা রেজিস্ট্রার মুনসী মোকলেছুর রহমান, সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার (বর্তমানে ঢাকা সদর রেকর্ড রুমে কর্মরত) মাহবুবুর রহমান, অফিস সহকারী আব্দুল মালিক, মোহরার আতিকুর রহমানসহ আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় মুরাদ উল্লেখ করেন- তিনি ২০০৫ সালে সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নকলনবিশ হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি চলতি বছরের ১০ মে মাসে নকলনবিশ এসোসিয়েশন সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান। তিনি অন্যায় ও ঘুষবাণিজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়ায় ও তার কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে আতিকুর রহমান সিন্ডিকেট তাকে চাকরিচ্যুত করতে উঠেপড়ে লাগে। মুরাদ অফিসে নিয়মিত উপস্থিত থাকলেও তাকে বালাম বই সরবরাহ করা হয় না। কিন্তু পরবর্তীতে দেখানো হয় তিনি কাজ করেননি। মামলায় তিনি আরও উল্লেখ করেন- নকলনবিশরা কাজ অনুপাতে সম্মানি পান। কাজ না করলে সম্মানি পান না। এতে করে সরকারের কোনো প্রকার আর্থিক ক্ষতির সুযোগ নেই। অথচ ফরিদুর রহমান নামের পরিচয়-ঠিকানাহীন এক উড়োচিঠির সূত্র ধরে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যদিও তিনি পরবর্তীতে তদন্ত কমিটির কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তবু উদ্দ্যেশ্যমূলকভাবে মুরাদকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে। সর্বোপরি সেই উড়োচিঠির তদন্তের ফলাফল অফিসে আসার আগেই বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে পৌঁছে দিয়ে তা প্রকাশের ব্যবস্থা করে একটি কুচক্রি মহল বেলাল আহমেদ মুরাদকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করেছেন। মুরাদ বলেন- আতিক সিন্ডিকেটের কাছে সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে কর্মরত অনেক নারী কর্মরত ও সাধারণ নকলনবিশ জিম্মি। কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই ওদেরকে নানাভাবে হয়রানি ও বিভিন্ন অভিযোগ দিয়ে শায়েস্তা করে ওই সিন্ডিকেটের অনুগত করা হয়। আর বেলাল আহমেদ মুরাদকে অনুগত করতে না পেরেই তারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দায়িত্ব থেকে জোরপূর্বক অব্যাহতি দিয়েছে। এর আগে ১ নভেম্বর এ চক্রের বিরুদ্ধে নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান বেলাল আহমদ মুরাদ জানান। উল্লেখ্য, সিলেটি নাটকের দর্শকের মধ্যে প্রশংসিত অভিনেতা বেলাল আহমেদ মুরাদ বর্তমানে যুক্তরাজ্য সফরে রয়েছেন। সেখানে বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়োজিত বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও শো-তে অংশগ্রহণ করছেন। যুক্তরাজ্য সফর শেষে তিনি কয়েকটি অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতে কানাডা যাবেন বলে জানা গেছে।