তিন মাসে সিলেটের তিন কূপে মিলল গ্যাস।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- তিন মাসে সিলেটের তিন কূপে মিলল গ্যাস।
জ্বালানি সংকট নিরসনে গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে দেশের ৪৬টি কূপ অনুসন্ধান, খনন ও পুনঃখননের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। ২০২৫ সালের মধ্যে এসব খনন কাজ শেষ হওয়ার কথা। এতে ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রাকৃতিক সম্পদের আঁধার হিসেবে পরিচিত সিলেটে গত তিন মাসে তিনটি কূপে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। এর ফলে প্রতিদিন সিলেট থেকে আরও ২৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
সর্বশেষ সিলেট গ্যাসফিল্ডের আওতাধীন রশিদপুরের ২ নং কূপে গ্যাসের নতুন স্তরের সন্ধান মেলে।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ  সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার ফেসবুকে পেইজে এ তথ্য জানান।
নসরুল হামিদ লিখেন, সুখবর বাংলাদেশের জ্বালানিখাতের জন্য! সিলেটের রশিদপুর-২নং গ্যাস কূপ অনুসন্ধানে নতুন গ্যাস স্তরের সন্ধান পাওয়া গেছে। যার পরিমাণ প্রায় ১৫৭ বিলিয়ন ঘনফুট এবং বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১০ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা।
ফেসবুকে প্রতিমন্ত্রী জানান, ‘আশা করছি, আগামী ১০ দিনের মধ্যে এখান থেকে দৈনিক ৮০ লাখ ঘনফুট হারে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে শেখ হাসিনা সরকারের অগ্রাধিকার আগামীতে বাংলাদেশের জন্য আরও বড় সুসংবাদ বয়ে আনবে আশা করি।’
এরআগে গত ২৬ নভেম্বর দেশের সবচেয়ে পুরানো গ্যাসক্ষেত্র হরিপুরের ১০ নম্বর কূপে গ্যাসের সন্ধান মেলে। খনন কাজ শেষে ওইদিন গ্যাস প্রাপ্তির তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফএল)।
গতবছরের জুনে এই কূপ খনন কাজ শুরু হয়। ১৪৯ কোটি টাকায় সিলেট-১০ নম্বর কূপ খনন করে চীনা কোম্পানি সিনোপেক।
কূপটিতে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কর্তৃপক্ষ।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, এখানে থেকে দৈনিক ১৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তারা।
তিনি জানান,  এই কূপে মজুদ গ্যাসের মূল্য ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এলএনজি আমদানি মূল্য হিসেবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
তারও আগে, গত ২২ নভেম্বর সিলেটের কৈলাশটিলায় পরিত্যক্ত ২ নং কুপ থেকে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। এখান থেকে দৈনিক ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।
সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায় ১৯৫৫ সালে। এরপর আবিষ্কার হতে থাকে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র। বর্তমানে এসজিএফএল-এর আওতায় পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। সেগুলো হলো- হরিপুর গ্যাসফিল্ড, রশীদপুর গ্যাসফিল্ড, ছাতক গ্যাসফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাসফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাসফিল্ড। এর মধ্যে ছাতক গ্যাসফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বাকিগুলোর মধ্যে ১৪টি কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১০৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে।
জানা যায়, জ্বালানি সংকট নিরসনে গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে দেশের ৪৬টি কূপ অনুসন্ধান, খনন ও পুনঃখননের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। ২০২৫ সালের মধ্যে এসব খনন কাজ শেষ হওয়ার কথা। এতে ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসজিএফএল-এর আওতাধীন ১৪টি কূপ খনন ও পুনঃখননের কাজ চলছে। সিলেটের ১৪ কূপের মধ্যে তিনটির খনন কাজ থেকে ২০২২ সাল থেকে উৎপাদন শুরু হয়। ২০২৩ সালে আরও একটি থেকে উৎপাদন শুরু হয়।
২০২২ সালে সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) আওতাধীন সিলেট-৮, কৈলাশটিলা-৭ ও বিয়ানীবাজার-১ নামে তিনটি পরিত্যক্ত কূপ পুনঃখনন করা হয়। এসব কূপ থেকে দৈনিক ১৬ থেকে ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:  সৌদি আরবে দুই বাংলাদেশি প্রবাসীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর।

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn
Scroll to Top