পদ্মশ্রী’ পদকে ভূষিত হলেন রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- পদ্মশ্রী’ পদকে ভূষিত হলেন রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
বরেণ্য রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে রবীন্দ্র সংগীতের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক ‘পদ্মশ্রী’ পদকে ভূষিত করা হয়েছে।
ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার ২০২৪ সালের জন্য এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে একথা বলা হয়েছে।
বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ২০১৬ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার-স্বাধীনতা দিবস পদকসহ অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।  ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কারগুলোর মধ্যে একটি। ‘পদ্মবিভূষণ’, ‘পদ্মভূষণ’ এবং ‘পদ্মশ্রী’ নামে তিনটি বিভাগে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এই বছর ১৩২জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ‘পদ্ম’ সম্মাননার জন্য মনোনীত করেছেন। মার্চ বা এপ্রিলে রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক ভারতের রাষ্ট্রপতি এই পুরস্কার প্রদান করবেন।
তালিকায় ৫ জনকে পদ্মবিভূষণ, ১৭ জনকে পদ্মভূষণ এবং ১১০ জনকে পদ্মশ্রী পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে ৩০ জন নারী ও ৮ জন বিদেশি এবং ৯ জন মরণোত্তর পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিও রয়েছেন।
বন্যা ১৯৫৭ সালে বাংলাদেশের রংপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। চাচা আব্দুল আলীর কাছ থেকে তার প্রাথমিক গানের পাঠ গ্রহণ করেন, পরবর্তীতে এই সংগীত চর্চা সনজিদা খাতুন ও আতিকুল হকের তত্ত্বাবধানে ঢাকার ছায়ানট এবং বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টস (বাফা) এ অব্যাহত থাকে।
পরে তিনি ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস’ (আইসসিআর) থেকে শান্তি নিকেতনের সঙ্গীত ভবনে পড়ার জন্য বৃত্তি পান। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেই এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তিনি বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা সেন, শৈলজারঞ্জন মজুমদার, শান্তিদেব ঘোষ, গোরা সর্বাধিকারি, মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় ও আশেষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে শিক্ষা নেন।
বিশ্বভারতী থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের কয়েক বছর পর তিনি কণিকা ব্যানার্জির অধীনে বর্ধিত সময়ের জন্য ব্যক্তিগত সেশনে প্রশিক্ষণ নেন। ২০২১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্র সঙ্গীতের ওপর তার গবেষণা সম্পন্ন করেন এবং এর জন্য তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
বন্যা বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্য বিভাগের অধ্যাপক ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এর আগে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।
রবীন্দ্র সঙ্গীতের প্রচার ও প্রসারে বন্য একজন প্রবর্তকের ভূমিকা পালন করেন। এ লক্ষ্যে ১৯৯২ সালে ঢাকার একটি মর্যাদাপূর্ণ সঙ্গীত বিদ্যালয় ‘শুরের ধারা’ প্রতিষ্ঠা করেন।
২০২২ সালে সরকার আত্মজীবনী ও ফটোগ্রাফ সম্বলিত বন্যার ৫ হাজার গান সংরক্ষণ করে একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে। বন্যা শিল্প ও সঙ্গীতের ক্ষেত্রে তার অবদানের জন্য মর্যাদাপূর্ণ স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।
অন্যান্য পুরস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে সেরা নারী রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী হওয়ার জন্য আনন্দ সঙ্গীত পুরস্কার (২০০২), গানে গানে গুণীজন সংবর্ধনা (২০১১), ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৩ সালে সঙ্গীত সম্মান পুরস্কার, বঙ্গ ভূষণ (২০১৭), ফিরোজা বেগম স্মৃতি স্বর্ণপদক (২০১৭), পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক সঙ্গীত মহা সম্মান (২০১৭) এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (২০১৯) থেকে অনারারী ডক্টরেট অব আর্টস।

আরও পড়ুন:  বিশ্বমানের সেবায় "কাঁকন ডায়মন্ড"সো-রুম উদ্বোধন

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn
Scroll to Top