বিলেতের আয়না :- মোহাম্মদ মাসুদ
চট্টগ্রামে ভোট’র শেষ মুহূর্তে দেশে প্রথম
——————————————————
নৌকা প্রার্থিতা বাতিল-এমপি মোস্তাফিজের পতন
চট্টগ্রাম:চট্টগ্রাম ১৬ আসনের এমপি মোস্তাফিজ নৌকা প্রার্থিতা বাতিল। বাঁশখালী এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর অপক্ষমতার শিকার সাংবাদিক রাকিব উদ্দিন,ওসি তোফায়েল আহমেদ,নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ নেতা সিআইপি মুজিবুর রহমান’সহ তার নেতাকর্মী ও অসংখ্য ভুক্তভোগীদের অবর্ণনীয় চিত্র। যা ব্যাপক সমালোচিত হয় সোশ্যাল মিডিয়াসহ গণমাধ্যমে।ক্ষমতার অপব্যবহার,বে-আইনি আচরণ,নির্বাচনী বিধিলঙ্ঘ মিশনে প্রশাসনের সু-নজরে প্রার্থিতা বাতিল’সহ পতন হয় এমপি মোস্তাফিজের।
এমপি দ্বারা হেনস্তা হুমকি-ধামকি জানমালের ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয় সাংবাদিক,প্রশাসন,প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিপক্ষের নেতাকর্মী এলাকার বাসিন্দা ও জনসাধারণ। কেউই রক্ষা পায়নি তার উগ্র আচরণ হুমকি ধামকি-মারধর হতে। নানা ধরনের সুকৌশল ফাঁদের কালো থাবা থেকে। হামলা মামলা নানাভাবে অপক্ষমতা,অপব্যবহারে অপূরণীয় সব রকমের ক্ষয়ক্ষতির শিকার ভুক্তভোগী ও অনেকেই। প্রার্থিতা বাতিলে পতন হল এমপির। বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না।
এমপির নানা আলোচনা সমালোচনা গুজব গুঞ্জন ছিল দীর্ঘদিন ধরে। ভুক্তভোগীরা এমপি মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ আপত্তি ও নানা হয়রানি ভোগান্তির শিকার ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই। তার অপক্ষমতার হাত থেকে রক্ষা পায়নি এলাকাবাসী,সাংবাদিক,প্রশাসন কেউ-ই। ভোটের শেষ মুহূর্তে দেশে প্রথম নৌকা প্রার্থিতা বাতিলে এমপি মোস্তাফিজের হল পতন।
এসবের নেপথ্য ছিল রাজনৈতিক ছত্রছায়া ক্ষমতার অপব্যবহার। এমপির সমর্থক আদেশ হুকুম ক্ষমতার অবাধ্যরা ছিল অবরুদ্ধ। অন্যায় অপরাধ করেও ছিল ধরা-ছোঁয়ার নাগালের বাহিরে। অবশেষে শেষ রক্ষা হলো না। যার কিছু তথ্য প্রমাণ ভিডিও চিত্র ফাঁস হয়। এমনটাই বর্ণনা দেন ভুক্তভোগী প্রতিপক্ষের নেতাকর্মী অসাধারণ অনেকেই। যা প্রকাশ হয় গণমাধ্যম প্রিন্ট পত্রিকা ও সোশ্যাল মিডিয়ায়। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এলাকাবাসী চট্টগ্রামসহ দেশজুড়ে।
————————————————————————
এমপির প্রার্থিতা বাতিল ও পতনে এলাকাবাসী,প্রতিপক্ষ ও জনতার উল্লাসে রেকর্ড। সারা বাঁশখালী জুড়ে আনন্দের জোয়ার। একদিকে ক্ষমতার দাপট।অন্যদিকে নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান এমপির প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোট যুদ্ধে প্রতিদ্বন্দিতা করা ছিল চ্যালেঞ্জিং।
সরেজমিনে দেখা যায়, ১০নং চাম্বল ইউনিয়ন, দক্ষিণ চাম্বল,পূর্ব চাম্বল,পশ্চিম চাম্বল ৯টি কেন্দ্রের ফলাফল। যার ৭টিতে ঈগল বিজয়ী ২টিতে আংশিক ভোটে নৌকা বিজয়ী। প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় মোট ভোটের পরিসংখ্যান ঘোষণা প্রকাশ হয়নি।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে।আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিলে আবারো সমাআলোচিত হলেন নতুন করে।যা এলাকাসহ দেশবাসীর কাছে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাপক সমালোচিত হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।এতে প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্রের দলীয় নেতাকর্মী অনুসারী সমর্থকদের ও সাধারণ মানুষের মধ্যেও ফিরে আসে শান্তি ও স্বস্তি।
ভোট গ্রহণের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে মোস্তাফিজুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে,জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান সন্ধ্যায় গমমাধ্যমে বলেন,প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে মানে তিনি আর প্রার্থী নন। এখন তাঁর ব্যালটগুলো গণনা করা হবে না। সেগুলো আলাদা করে নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আর এই আসনে বাকি প্রার্থীদের মধ্যে যিনি সর্বোচ্চ ভোট পাবেন, তিনিই বিজয়ী হবেন।
মোস্তাফিজুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, ওই আসনে আরো ৭জন প্রার্থী থাকায় অবশ্যই সেখানে ভোট চলবে।
ইসি সচিব আরও বলেন,ওই প্রার্থী এর আগেও একাধিকবার আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। আজ তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হুমকি দিয়েছেন। এ কারণে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুর রহমান ও আবদুল্লাহ কবির প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে আরও আটজন প্রার্থী এখানে আছেন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে নৌকার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে ইসির সচিব জাহাংগীর আলম বিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানান। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হুমকি দিয়েছিলেন বলে জানান ইসি সচিব৷ তবে ওই আসনে ভোট চলবে বলে জানান তিনি।
প্রসংঙ্গ: চট্টগ্রাম-১৬ জাতীয় সংসদ ২৯৩নং আসনের সাবেক ও বর্তমান এমপি মুজিবুর রহমান চৌধুরী।
২২ মে ২০২৩ইং জনসমক্ষে পিস্তল হাতে আওয়ামী লীগের মিছিল করার পরে মোস্তাফিজুর এর নামে সমালোচনা তৈরি হয়। প্রদর্শিত আগ্নেয়াস্ত্রটি বৈধ বলা হলেও পরবর্তিতে পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁর কাছে এই ঘটনার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। প্রমান থাকার পরেও জেলা প্রশাসন লাইসেন্সটি বাতিল করেনি।
ওসি তোফায়েল আহমেদ ও মোস্তাফিজের সাথে হাত কেটে ফেলার হুমকি। কথোপকথনের ১ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের একটি অডিও গণমাধ্যমে এসেছে।ইনডিপেনডেন্ট টিভির সাংবাদিক রাকিব উদ্দিন প্রশ্ন করলে মোস্তাফিজুর তাঁর দিকে তেড়ে যান ও মারধর করেন।
৩০ নভেম্বর-২৩ইং ১০ জন কর্মী নিয়ে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সাংবাদিক রাকিব উদ্দিন প্রশ্নে মোস্তাফিজুর তাঁর দিকে তেড়ে যান ও মারধর করেন। এ সময় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও চ্যানেল আইয়ের ব্যুরোপ্রধান চৌধুরী ফরিদসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিককে ধাক্কা দেন তিনি ও তাঁর কর্মীরা। সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগে মোস্তাফিজুরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি আসেননি। পরবর্তীতে মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়।