দেশে প্রথম নৌকা প্রার্থিতা বাতিল-এমপি মোস্তাফিজে পতন

বিলেতের আয়না ডেক্স :- মোহাম্মদ মাসুদ

দেশে প্রথম নৌকা প্রার্থিতা বাতিল-এমপি মোস্তাফিজে পতন

চট্টগ্রামঃ ভোটের শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী আচরণ বিধিলঙ্ঘনে দেশে প্রথম নৌকার প্রার্থিতা বাতিল হল এমপি মোস্তাফিজুরের।ক্ষমতা দাপট উগ্র আচরণ অপক্ষমতা নানা নেতিবাচক কারণে আলোচিত সমালোচিত ছিলেন এলাকা চট্টগ্রাম সহ মানুষের মুখে মুখে। সাংবাদিক প্রশাসন সাধারণ কেউই রক্ষা পায়নি তার অপক্ষমতার হাত থেকে। প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় আবারো সমাআলোচিত হলেন এলাকা চট্টগ্রামসহ দেশজুড়ে।

বাঁশখালীর-১৬ আসন এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর নানা আলোচনা সমালোচনা গুজব গুঞ্জন ছিল দীর্ঘদিন ধরে। ভুক্তভোগীরা এমপি মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ আপত্তি ও নানা হয়রানি ভোগান্তির শিকার ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই। এসবের নেপথ্য ছিল রাজনৈতিক ছত্রছায়া ক্ষমতার অপব্যবহার। অন্যায় অপরাধ করেও ছিল ধরা-ছোঁয়ার নাগালের বাহিরে।অবশেষে শেষ রক্ষা হলো না। যার কিছু তথ্য প্রমাণ ভিডিও চিত্র ফাঁস হয়। প্রকাশ হয় গণমাধ্যম প্রিন্ট পত্রিকা ও সোশ্যাল মিডিয়ায়। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এলাকাবাসী চট্টগ্রামসহ দেশ জুড়ে।

এমপির প্রার্থিতা বাতিল পতনে এলাকাবাসী,প্রতিপক্ষ ও জনতার উল্লাসে রেকর্ড। সারা বাঁশখালী জুড়ে আনন্দের জোয়ার। একদিকে ক্ষমতার দাপট।অন্যদিকে নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান এমপির প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোট যুদ্ধে প্রতিদ্বন্দিতা করা ছিল চ্যালেঞ্জিং।

কাজে-কর্মে ছিল দৃঢ় মনবল সাহস। মাঠে ময়দানে প্রচারণা ও ভোটযুদ্ধে ব্যাপক ভোটে জয়ী হলেন মুজিবুর রহমান (সিআইপি)।সাধারণ জনতার অকৃত্রিম ভালোবাসা ও জনপ্রিয়তায় সিক্ত হলেন তিনি। এলাকা ও দেশের মানুষের সেবা ও কর্মসংস্থান। অর্থনৈতিক উন্নয়ন,সেবামূলক কার্যক্রম ও নানা কর্মকান্ড ও কর্মগুণে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বাঁশখালীর ইতিহাসে ও সাধারণ মানুষের মাঝে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ১০নং চাম্বল ইউনিয়ন, দক্ষিণ চাম্বল,পূর্ব চাম্বল,পশ্চিম চাম্বল ৯টি কেন্দ্রের ফলাফল। ৭টিতে ঈগল বিজয়ী ২টিতে আংশিক ভোটে নৌকা বিজয়ী। প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় ফলাফল তাই তার ভোটের পরিসংখ্যান ঘোষণা প্রকাশ হয়নি।

আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে।আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিলে আবারো আলোচিত হলেন নতুন করে।যা এলাকাসহ দেশবাসীর কাছে ছড়িয়ে পড়ে দলীয় নেতা কর্মীর মাঝে।

ভোটের দিন তাঁর প্রার্থিতা করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোট গ্রহণের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান সন্ধ্যায় গমমাধ্যমে বলেন,মোস্তাফিজুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে মানে তিনি আর প্রার্থী নন। এখন তাঁর ব্যালটগুলো গণনা করা হবে না। সেগুলো আলাদা করে নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আর এই আসনে বাকি প্রার্থীদের মধ্যে যিনি সর্বোচ্চ ভোট পাবেন, তিনিই বিজয়ী হবেন।

আরও পড়ুন:  জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৩০ বিলিয়ন ডলার - প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা

মোস্তাফিজুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, ওই আসনে যদি একাধিক প্রার্থী থাকেন, তাহলে অবশ্যই সেখানে ভোট চলবে।

ইসি সচিব আরও বলেন, ওই প্রার্থী এর আগেও একাধিকবার আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। আজ তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হুমকি দিয়েছেন। এ কারণে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুর রহমান ও আবদুল্লাহ কবির প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে আরও আটজন প্রার্থী এখানে আছেন। আচরণবিধি লঙ্ঘনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।

ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে ইসির সচিব জাহাংগীর আলম বিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানান। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হুমকি দিয়েছিলেন বলে জানান ইসি সচিব৷ তবে ওই আসনে ভোট চলবে বলে জানান তিনি।

প্রসংঙ্গ: চট্টগ্রাম-১৬ হল বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের
২৯৩নং আসনে সাবেক ও বর্তমান এমপি মুজিবুর রহমান।
২২ মে ২০২৩ সালে জনসমক্ষে পিস্তল হাতে আওয়ামী লীগের মিছিল করার পরে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এর নামে সমালোচনা তৈরি হয়। প্রদর্শিত আগ্নেয়াস্ত্রটি বৈধ বলা হলেও পরবর্তিতে পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁর কাছে এই ঘটনার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। প্রমান থাকার পরেও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন লাইসেন্সটি বাতিল করেনি।

৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে ১০ জন কর্মী নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ইনডিপেনডেন্ট টিভির সাংবাদিক রাকিব উদ্দিন প্রশ্ন করলে মোস্তাফিজুর তাঁর দিকে তেড়ে যান ও মারধর করেন। এ সময় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও চ্যানেল আইয়ের ব্যুরোপ্রধান চৌধুরী ফরিদসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিককে ধাক্কা দেন তিনি ও তাঁর কর্মীরা। সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগে মোস্তাফিজুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি আসেননি।

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn
Scroll to Top