বিলেতের আয়না ডেক্স :- নেপালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটক বন্ধ করে দিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটক বন্ধ করে দিয়েছে নেপাল। দেশটির সরকার জানিয়েছে, সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষা করার জন্যই এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে তারা। আজ বুধবার (১৫ নভেম্বর) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
দেশটির মন্ত্রী রেখা শর্মা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মন্ত্রীসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তারপরই ইন্টারনেট প্রোভাইডারদের বলা হয়েছে দ্রুত অ্যাপটি ব্লক করে দেওয়ার জন্য।
গত সোমবার (১৩ নভেম্বর) এর মধ্যেই প্রায় গোটা নেপালে টিকটক ব্লক করে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় দেশটির সরকার। সরকারের মুখপাত্র রেখা জানিয়েছেন, ‘টিকটকের মাধ্যমে সমাজে অশ্লীল ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে পড়ছিল। সে কারণেই এই চরম পদক্ষেপ।’ এ পদক্ষেপ নিয়ে অবশ্য সরকারের ভেতরে ও বাইরে চরম সমালোচনা শুরু হয়েছে।
সরকার বলছে, যদিও মত প্রকাশের স্বাধীনতা একটি মৌলিক অধিকার তবে সমাজের একটি বড় অংশ ঘৃণাত্মক বক্তব্যের প্রবণতাকে উৎসাহিত করার জন্য টিকটকের সমালোচনা করেছে। গত চার বছরে ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপে সাইবার ক্রাইমের ১ হাজার ৬৪৭টি ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে।
অন্যদিকে, নেপালি কংগ্রেসের নেতা গগন থাপা জানিয়েছেন, ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। এভাবে সমাজকে রক্ষা করা যাবে না। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গ্যাওয়ালি বলেছেন, ‘কোনো অ্যাপ বন্ধ করে দেওয়া কখনোই কোনো সমাধান হতে পারে না।’
নেপালের দৈনিক অনুসারে, নেপাল পুলিশের সাইবার ব্যুরো, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও টিকটকের প্রতিনিধিরা গত সপ্তাহের শুরুতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি শেষ হওয়ার পরে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকার ‘সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ২০২৩-এর অপারেশন সংক্রান্ত নির্দেশিকা’ চালু করার কয়েক দিনের মধ্যে সর্বশেষ সিদ্ধান্তটি এসেছে। নতুন নিয়ম অনুসারে, নেপালে কোনো সোশাল মিডিয়া কার্যক্রম চালু রাখতে চাইলে এখানে তাদের অফিস স্থাপন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার এক ঘোষণায় দেশটি ফেসবুক, এক্স (পূর্বে টুইটার), টিকটক এবং ইউটিউবের মতো সামাজিক মাধ্যমকে তাদের এখানে যোগাযোগ অফিস খোলার বাধ্যতামূলক নিয়ম করেছে।
প্রতিষ্ঠানগুলোকে তিন মাসের মধ্যে নেপালে একটি অফিস স্থাপন করতে হবে বলেও কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অফিসে একজন ফোকাল পার্সন নিয়োগ করতে হবে যে তাদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখব।
এর আগে ২০২ সালের জুন মাসে নিরাপত্তা জনিত উদ্বেগের কারণে টিকটক সহ বেশ কিছু চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে ভারত। নিষেধাজ্ঞার আগে, অ্যাপটির ভারতে প্রায় ১৫ কোটি মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী ছিল।
এছাড়াও, নিরাপত্তা জনিত কারণে টিকটকের ওপর অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, আফগানিস্তান, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড এবং নরওয়ের মতো দেশও যথাক্রমে আংশিক বা সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।