বিলেতের আয়না ডেক্স :- ১০৩ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আজ শনিবার (১ জুলাই) দেশের সবচেয়ে প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
জিন্নাহর দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে বঙ্গভঙ্গ হয়। এই বঙ্গভঙ্গের ফলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয় মুসলিমরা, এবং পূর্ববাংলার জনসাধারণ। এরপর নানা আন্দোলন প্রতিকূলতা শেষে ১৯১১ সালে রদ করা হয় এই বঙ্গভঙ্গ। মুসলমানদের মাঝে ইংরেজদের প্রতি অসন্তোষ দেখা দেয় তীব্রভাবে। তৎকালীন গভর্নর পূর্ববাংলার মুসলমানদের একটি বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
পূর্ববাংলার মুসলমানদের মাঝে একটি সচেতন মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী শ্রেণি গড়ে তোলাই মূলত এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল। বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার পর পূর্ববাংলার সচেতন রাজনীনিকরা বারবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানাতে থাকেন। ১৯১৭ সালের মার্চ মাসে সাম্রাজ্যিক বিধান পরিষদে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী সরকারের কাছে অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল পেশের আহ্বান জানান। ১৯২০ সালের ২৩ মার্চ গভর্নর জেনারেল এ বিলে সম্মতি দেন। এ আইনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ভিত্তি। এ আইনের বাস্তবায়নের ফলাফল হিসেবে ১৯২১ সালের ১ জুলাই ৮৪৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। তার মধ্যে নারী ছিলেন মাত্র একজন।
সে সময় ঢাকার সবচেয়ে অভিজাত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত রমনা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমির ওপর পূর্ববঙ্গ এবং আসাম প্রদেশের পরিত্যক্ত ভবনাদি এবং ঢাকা কলেজের (বর্তমান কার্জন হল) ভবনসমূহের সমন্বয়ে মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার এই দিনটি প্রতিবছর ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।
তিনটি অনুষদ ও ১২টি বিভাগ নিয়ে একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়। ঢাকা কলেজ ও জগন্নাথ কলেজের (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) ডিগ্রি ক্লাসে অধ্যয়নরত ছাত্রদের নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। শুধু ছাত্র নয়, শিক্ষক এবং লাইব্রেরির বই ও অন্যান্য উপকরণ দিয়েও এই দুটি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করে। এই সহযোগিতা দানের কৃতজ্ঞতা হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি হলের নামকরণ করা হয়–ঢাকা হল (বর্তমানে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল) ও জগন্নাথ হল।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১৩টি অনুষদ, ৮৩টি বিভাগ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ৫৬টি গবেষণা ব্যুরো ও কেন্দ্র, ২০টি আবাসিক হল ও ৩টি ছাত্রাবাস এবং ৭টি স্নাতক পর্যায়ের অধিভুক্ত সরকারি কলেজ, মেডিক্যাল, নার্সিং, ইঞ্জিনিয়ারিংসহ মোট ১০৫টি অধিভুক্ত কলেজ রয়েছে।