বিলেতের আয়না ডেক্স :- বরিস জনসন স্বেচ্ছায় পদ ত্যাগ না করলে বরখাস্ত হতেন।
করোনা মহামারি চলাকালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বরিস জনসন। সে সময় করোনা মোকাবিলায় চলছিল লকডাউন। কিন্তু লকডাউনের বিধিনিষেধ ভেঙে বরিস জনসন ডাউনিং স্ট্রিটে পার্টি করেছিলেন। আর এই পার্টি নিয়ে তিনি ইচ্ছা করেই পার্লামেন্টকে বিভ্রান্ত করেছিলেন বলে জানিয়েছে সংসদীয় তদন্ত কমিটি।
সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে আজ বৃহস্পতিবার এ খবর জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বছরব্যাপী তদন্তের পর কমিটি জানিয়েছে, বরিস জনসন যদি গত সপ্তাহে পদত্যাগ না করতেন, তাহলে সংসদকে পুনরায় অবমাননার দায়ে ৯০ দিনের জন্য এমপি পদ থেকে তাকে বরখাস্ত করা হতো।
সংসদীয় কমিটি বলছে, ‘আমরা উপসংহারে পৌঁছেছি যে ইচ্ছা করেই পার্লামেন্টকে বিভ্রান্ত করার মাধ্যমে গুরুতর অবমাননা করেছেন বরিস জনসন। এটি আরও গুরুতর, কারণ সে সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলেন। কোনো প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করে পার্লামেন্টকে বিভ্রান্ত করেছেন—এমন কোনো নজির নেই।’
এর আগে গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের এমপি পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বরিস জনসন। তার পদত্যাগের ঘোষণার আগে প্রিভিলেজেস কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি হাতে পান জনসন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ওই প্রতিবেদনটি অসত্য এবং পক্ষপাতদুষ্ট।
এক বিবৃতিতে জনসন বলেছিলেন, ‘কমিটি তাদের প্রতিবেদনে এমন একটি প্রমাণও হাজির করতে পারেনি যাতে প্রমাণ হয় আমি জেনেশুনে বা বেপরোয়াভাবে লকডাউন বিধি ভঙ্গ করেছি।’
পদত্যাগের সিদ্ধান্তের বিষয়টি পরিষ্কার করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘পার্লামেন্ট থেকে সরে যাওয়া খুবই দুঃখজনক; অন্তত এই মুহূর্তে। তবে আমি আতঙ্কিত, আমাকে অগণতান্ত্রিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জোর করে বহিষ্কার করা হতে পারে।’
এই ‘পার্টিগেট কেলেঙ্কারি’ নিয়ে কয়েক মাসের তদন্তে বেরিয়ে আসে, বরিস জনসন ২০২০ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে করোনা মহামারি চলাকালে ডাউনিং স্ট্রিটে মদের পার্টি করেছিলেন। ওই সময়ে যুক্তরাজ্যের বাকি বাসিন্দাদের ঘরের ভেতরে থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল।
এ নিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভ এবং জনসনের বিরুদ্ধে বার বার মিথ্যাচারের অভিযোগ উঠতে থাকায় তার সরকারের অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাকসহ আরও বেশ কয়েকজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। প্রবল চাপের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন জনসনও। বর্তমানে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।