বিলেতের আয়না ডেক্স :- মোহাম্মদ মাসুদ বিশেষ প্রতিনিধি
সামান্য কিস্তির জেরে নৃশংস হত্যাকারী আটক-র্যাব
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় সামান্য কিস্তির টাকা নিয়ে বাকবিতন্ডায় প্রকাশ্যে এনজিওকর্মী চম্পা চাকমা’র শ্বাস নালীতে নৃশংসভাবে ছুরিকাঘাত করে হত্যাকারীকে র্যাব-৭,চট্টগ্রাম ও র্যাব-৯, সিলেট এর যৌথ অভিযানে সিলেট হতে আটক।
৩ এপ্রিল রাত ১০টার অভিযানে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার একমাত্র আসামী মোঃ এনামুল হক প্রকাশ এনাম (২৭)’কে
পিতা-মোঃ নুরুজ্জামান,সাং-উত্তর পারুয়া, থানা-রাঙ্গুনিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম‘কে আটক করতে সক্ষম হয়।
র্যাব সূত্রে জানা যায়,নিহত ভিকটিম বেসরকারি মানবিক উন্নয়ন সংস্থা ‘পদক্ষেপ’ এর রাঙ্গুনিয়া ব্রাঞ্চের সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আসামী এনামুল ২০ এপ্রিল-২২ইং এনজিও হতে তার মায়ের নামে ২,(দুই লক্ষ) টাকা এবং তার বোনের নামে ১,(এক লক্ষ) টাকা লোন নেয়। মায়ের লোনের ৪০ কিস্তি যথাসময়ে পরিশোধ করলেও তার বোনের ৬টি কিস্তির মাসে ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ভিকটিম এনামুলকে বারংবার তাগিদের এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। ৫ মার্চ রাতে ভিকটিমএবং তার সহকর্মীরা অফিস হতে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথিমধ্যে রাঙ্গুনিয়া থানাধীন ধামরাইহাট এলাকায় তাদের সাথে এনামুল এর দেখা হলে তাদের মধ্যে লোনের কিস্তির টাকা পরিশোধ সংক্রান্তে কথা কাটাকাটি হয়। লোনের কিস্তির টাকার জন্য বারংবার তাগিদ দেওয়ায় এনামুল ভিকটিমের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। এক পর্যায়ে এনামুল তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে ভিকটিম চম্পা চাকমার গলায় শ্বাসনালীতে আঘাত করে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়।
ভিকটিম চম্পা চাকমার অফিসের সহকর্মীরা এবং আশেপাশের লোকজন ভিকটিমকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভগ্নিপতি বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনাটি রাঙ্গুনিয়াসহ সারাদেশে আলোড়ন ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। উক্ত নিরীহ নারী এনজিওকর্মীকে প্রকাশ্যে দিবালোকে ছুরিকাঘাত করে নৃশংস হত্যাকান্ডে রাঙ্গুনিয়ার সাধারণ মানুষের পাশাপাশি তিন পার্বত্য জেলার পাহাড়ী আধিবাসী জনগোষ্ঠী হত্যা মামলার প্রধান আসামাীকে গ্রেফতারের জন্য অনেকগুলো মানববন্ধন করে।র্যাব নৃশংস হত্যাকান্ডের এজাহারনামীয় আসামী এনামুলকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়া তদন্তের এক পর্যায়ে গোপন সংবাদে সিলেট জেলার জৈন্তাপুর থানার আসামপুর এলাকায় আত্মগোপন থাকা অবস্থায় র্যাব আটক করে।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামী স্বীকার করে,সে উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত এবং এজাহারনামীয় আসামী।৩ লাখ টাকা ঋনের ৩০ হাজার বাকি টাকার জন্য ৮ জন তার বোনের বাসায় যাবে। ভগ্নিপতি বিদেশে থাকে, তাই তার মান সম্মান যাবে এই ভেবে,পরিকল্পিতভাবে সে হাতে চাকু নিয়ে সন্ধায় প্রথমে চম্পাকে চাকু দেখিয়ে হুমকির একপর্যায়ে রাগান্বিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গলায় ছুরিকাঘাত করে। হত্যার পর পাহাড়ি বনে একরাত,রাঙামাটি,চট্টগ্রামের পতেঙ্গা, চকবাজার এলাকা,ঢাকার পোস্তাগালা এবং সর্বশেষ সিলেটের জৈন্তাপুরে দৈনিক ২০০ টাকা বেতনে হোটেলে কাজ নেয় যেখান হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।