বিলেতের আয়না :- শহিদুল ইসলাম, প্রতিনিধি
ভারত বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগিতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রণয় ভার্মা
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে সহায়তায় অগ্রাধিকার দেওয়া ভারতের নীতি। আর প্রতিবেশি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ভারতের অগ্রাধিকারের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম। ভারত বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগিতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস স্মরণে ‘মিট দ্যা সোসাইটি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজক সম্প্রীতি বাংলাদেশ।
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘পারস্পারিক সহযোগিতায় উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মানে ভারত ও বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে কাজ করছে। এর ফলশ্রুতিতে দুই দেশের অগ্রগতি ক্রমশ বিকাশমান। ভারত-বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে দুই দেশের নেতাদের রয়েছে দৃঢ় অঙ্গীকার।’
বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে বিশ্বস্ত অংশীদার বলে মন্তব্য করে প্রণয়ন ভার্মা বলেন, ‘সম্প্রীতি ও ভাতৃত্বের দীর্ঘ পথ চলায় বাংলাদেশ ও ভারত আজ বিশ্বে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। বিশ্বজুড়ে নন্দিত হয়েছে বাংলাদেশের উন্নতি ও অর্জন।’
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘মহামারী, সন্ত্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ভারত ও বাংলাদেশ বিশ্ব মঞ্চে একত্রে কাজ করেছে । জাতীয় উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা দুইদেশের অর্থনীতি, সমাজ ও জগণের মধ্যে সুদৃঢ় যোগসূত্র স্থাপন করতে চাই।’
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস শোকের দিন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি, সার্বভৌমত্ব অর্জনের পর থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ৫২ বছর পূর্বে তাদের অকুতোভয় আত্মত্যাগ চির অমর হয়ে থাকবে।’
সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, শহীদ জায়া শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, বীর প্রতীক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, শিক্ষাবিদ ও কথা সাহিত্যিক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার।
সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনায় ৫২ বছরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা না হয়োর এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের জন্য ভাতা প্রদান না বরার বিষয় উঠে আসে।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ভেতর শতকরা ৮০ ভাগই ছিলেন ধর্মীয় সংখ্যা লগু। এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে লে.ক. সাজ্জাদ আলী জহির বলেন অপারেশন সার্স লাইটের শুরু থেকেই পাকিস্তান সেনা বাহিনীর নির্দেশনা অনুযায়ী এই কাজটি করা হয়েছে।
ধর্মের নামে মিথ্যা ফতোয়া দিয়ে পাকিস্তানী সৈনিকদের ধর্ষনে উদ্ধুদ্ধ করা হয়ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। শহীদ জায়া শ্যামলী নাসিরন চৌধুরী বলেন, দেশকে অতিরিক্ত ভালবাসার কারনে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুধু যুদ্ধের ইতিহাস মাত্র নয়, তারও চেয়ে বিশাল কিছু। মহাকাব্যিক মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস আজো রচিত হয়নি। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আধুনিক ও বিজ্ঞান মনস্ক হওয়ার কথা বলেছেন ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি বলেন ধর্মে প্রতিহিংসা পাপ বলা হলেও পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং স্থানীয় রাজাকার, শান্তিকমিটিকে কোনদিন ক্ষমা করা উচিৎ হবে না।
মহান একাত্তরের মানবতা বিরোদী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করায় আলোচকবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং অসাম্প্রদায়িক জাতি গঠনে নতুন প্রজন্মকে সাথে নিয়ে দৃঢ় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্ববান জানান অনুষ্ঠানের আলোচকবৃন্দ।
প্রধান অতিথি ভারতীয় রাষ্টদূত অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সম্প্রীতি বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। মিট দ্যা সোসাইটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন পেশায় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।