বিলেতের আয়না ডেক্স :- বর্নিল আয়োজনে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান।
বর্নিল আয়োজনে প্রদান করা হয়েছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিজয়ীদের হাতে ট্রফি ও মেডেল তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিজয়ীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে বলেছেন, ‘একটি দেশের সমাজকে চলচ্চিত্র সচেতন করতে পারে, আনন্দ দিতে পারে, সংস্কার করতে পারে, ইতিহাসকে ধারণ করতে পারে, দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে। আজীবন সম্মাননা গ্রহণ করছেন রোজিনা
এবারের আসরে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে যৌথভাবে দুটি ছবি। এগুলো হলো ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ ও ‘পরাণ’। তবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদ্বয় শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কারটি পাননি। এই পুরস্কার অর্জন করেছেন ‘শিমু’ নির্মাতা রুবাইয়াত হোসেন। আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়েছে অভিনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুল আলম খান খসরু ও অভিনেত্রী রওশন আরা রোজিনাকে।
এই আয়োজনে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী। ‘হাওয়া’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন। অন্যদিকে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার উঠেছে যৌথভাবে জয়া আহসান (বিউটি সার্কাস) ও রিকিতা নন্দিনী শিমুর (শিমু) হাতে।
অন্যান্য বিভাগের মধ্যে আরও পেয়েছেন-
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: ‘ঘরে ফেরা’
শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: ‘বঙ্গবন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর (যৌথ) পুরস্কার গ্রহণ করছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা: নাসির উদ্দিন খান (পরাণ)
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী: আফসানা মিমি (পাপ পুণ্য)
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্ব চরিত্রে আফসানা মিমিশ্রেষ্ঠ কৌতুক চরিত্রে: দিপু ইমাম (অপারেশন সুন্দরবন)
শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী: বৃষ্টি আক্তার (রোহিঙ্গা) ও মুনতাহা এমিলিয়া (বীরত্ব)
শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার: ফারজিনা আক্তার (কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া)
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক: রিপন খান (পায়ের ছাপ)
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্ব চরিত্রে নাসির উদ্দিন খানশ্রেষ্ঠ গায়ক: বাপ্পা মজুমদার (অপারেশন সুন্দরবন) ও চন্দন সিনহা (হৃদিতা)
শ্রেষ্ঠ গায়িকা: আতিয়া আনিসা (পায়ের ছাপ)
শ্রেষ্ঠ গীতিকার: রবিউল ইসলাম জীবন (পরাণ)
শ্রেষ্ঠ সুরকার: শওকত আলী ইমন (পায়ের ছাপ)
শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার: ফরিদুর রেজা সাগর (দামাল) ও খোরশেদ আলম (গলুই) শ্রেষ্ঠ গীতিকারের পুরস্কার নিচ্ছেন রবিউল ইসলাম জীবন
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: মুহাম্মদ আব্দুল কাইউম (কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া)
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: এস এ হক অলিক (গলুই)
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক: সুজন মাহমুদ (শিমু)
শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক: হিমাদ্রি বড়ুয়া (রোহিঙ্গা)
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: আসাদুজ্জামান (রোহিঙ্গা)
শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ (হাওয়া)
শ্রেষ্ঠ গায়ক (যৌথভাবে) চন্দন সিনহা
শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা: তানসিনা শাওন (শিমু)
শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান: খোকন মোল্লা (অপারেশন সুন্দরবন)
পুরস্কার প্রদান শেষে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক পর্ব। যেটা সঞ্চালনা করেছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা। পর্বটি শুরু হয় পূজা চেরি ও আদর আজাদের নৃত্য পরিবেশনা দিয়ে। তারা ‘ওহে শ্যাম’ গানে নাচেন। এরপর জায়েদ খান ও আঁচল নৃত্য পরিবেশন করেন ‘ছেড়ো না ছেড়ো না হাত’ ও ‘আরে ও প্রাণের রাজা’ গানের সঙ্গে।
কণ্ঠশিল্পী বালাম ও কোনাল দ্বৈতভাবে শুনিয়েছেন ‘ও প্রিয়তমা’ গানটি। এরপর মঞ্চে ওঠেন অপু বিশ্বাস ও তমা মির্জা। তারা ‘গা ছুঁয়ে বলো’, ‘চলো নিরালায়’ ও ‘ডানা মেলে প্রজাপতি’ গানগুলোতে নৃত্য পরিবেশন করেছেন। সংগীতশিল্পী লিজা ও সাব্বির পরিবেশন করেছেন কালজয়ী গান ‘তুমি যে আমার কবিতা’।
সঞ্চালনায় ফেরদৌস ও পূর্ণিমাচলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে একটি নৃত্য পরিবেশনার আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক, নায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি ও অভিনেত্রী সোহানা সাবা। তারা নেচেছেন ‘যে আমার মন কেড়েছে’, ‘আমার নাকেরই ফুল বলে রে’ ও ‘আমি রূপনগরের রাজকন্যা’ গানগুলোর তালে। কণ্ঠশিল্পী ইমরান ও কনা যৌথভাবে গেয়েছেন ‘দিল দিল দিল’ গানটি; আর ঐশীর কণ্ঠে শোনা গেছে ‘মায়া রে’ ও ‘রঙিলা বেবি’ গান দুটি।
লম্বা একটি পারফর্মেন্স নিয়ে হাজির হন নুসরাত ফারিয়া। ‘তোর আশিকী’, ‘ইয়ারা মেহেরবান’, ‘কলিজা আর গান’ ইত্যাদি গানে নেচেছেন তিনি। অতঃপর মঞ্চে আসেন ফোকসম্রাজ্ঞী মমতাজ ও হিপহপ শিল্পী শাফায়েত। তারা ‘লোকাল বাস’ গানে অনুষ্ঠান মাতিয়ে তোলেন। একটি নাটিকা নিয়ে উপস্থিত হন অভিনেতা মীর সাব্বির ও অভিনেত্রী তারিন জাহান। সবশেষে একটি দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন সাদিয়া ইসলাম মৌ।