টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন বাংলাদেশের রাজনীতিতে অবিসংবাদিত নাম শেখ হাসিনা।

বিলেতেৱ আয়না ডেক্স :-  টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
বাংলাদেশের রাজনীতিতে অবিসংবাদিত নাম শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে অবিসংবাদিত এক নাম। তার নেতৃত্বে ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত পাট উৎপাদনকারী দেশ থেকে এশিয়া-প্যাসিফিকের দ্রুততম প্রসারণশীল অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আসছে জানুয়ারির ব্যালট বাক্সের লড়াইয়ে জেতার ব্যাপারেও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) ‘প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা অ্যান্ড দ্য ফেট অব ডেমোক্রেসি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক চার্লি ক্যাম্পবেলের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে টাইম ম্যাগাজিন।
প্রতিবেদনে বলা হয় করা হয়, বর্তমানে তিনিই বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন নারী সরকারপ্রধান। ইসলামী মৌলবাদী শক্তি ও সামরিক হস্তক্ষেপকারী উভয়পক্ষকেই পরাস্ত করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তিনি। ইতোমধ্যে তিনি মার্গারেট থ্যাচার বা ইন্দিরা গান্ধীর চেয়ে বেশিবার নির্বাচনে জয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সরকারি বাসভবন গণভবনে। ছবি: সংগৃহীত
অর্থনৈতিক অগ্রগতি, জিডিপির হার, মাথাপিছু আয়, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, সমুদ্রসীমার জয়, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বিদ্যুৎ, মডেল মসজিদ কাম ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, ১০ মেগা প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শেখ হাসিনার শাসনামলে ব্যাপক অথনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি হয় ।
ছবি: রয়টার্স
বিগত বছরগুলোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১৯ বার গুপ্তহত্যার চেষ্টা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে টাইম ম্যাগাজিন। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সমর্থকরা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে; এসব ঘটনায় গ্রেপ্তার শতাধিক। পুলিশের যানবাহন এবং বাসেও আগুন দেয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় প্রাণ গেছে কয়েকজনের। বিএনপি ২০১৪ এবং ২০১৮ উভয় নির্বাচনই বয়কট করার কথা জানিয়েছে। তাদের দাবি, শেখ হাসিনা যেন নির্বাচন পরিচালনার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান নেতা ও বাংলাদেশ সরকারের প্রথম রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে। স্কুলজীবনেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। ১৯৬২-তে স্কুলের ছাত্রী হয়েও আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ১৯৮১ সালে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখন দিশেহারা, সেই ক্রান্তিলগ্নে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের অনুরোধে শেখ হাসিনা বিদেশ থেকে ফিরে এসে দলটির সভাপতির গুরুদায়িত্ব নেন। ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষ তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরেন। সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর দলের ২২তম ত্রৈবার্ষিক জাতীয় কাউন্সিলে দশম বারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা।
একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৮ আসনে জয়ী হলে শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটি তার টানা তৃতীয় মেয়াদ।
শেখ হাসিনাকে অন্তত ২০ বার হত্যার চেষ্টা হয়েছে। প্রতিটিতেই কোনোরকমে প্রাণে বেঁচে গেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এর মধ্যে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানের কাছে, ১৯৮৯ সালের ১১ আগস্ট ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবনে, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরদী ও নাটোর রেলস্টেশনে, ১৯৯৫ সালের ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর রাসেল স্কয়ারে, ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে, ২০০০ সালে এক জনসভাস্থল ও হ্যালিপ্যাডে, ২০০১ সালের ২৯ মে খুলনায়, একই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটে, ২০০২ সালের ৪ মার্চ নওগাঁয়, ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল বরিশালে এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে হামলা চালিয়ে হত্যাচেষ্টা করা হয়।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হন ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। ওই বছরের ১৬ জুলাই তাকে নিজ বাসভবন ‘সুধা সদন’ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরও পড়ুন:  সিলেট কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জনাব বদরুল ইসলাম শোয়েব কে সংবর্ধনা দিয়েছে ফুলসাইন্দ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ইউ কে

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn
Scroll to Top