অধ্যাপক তাহের হত্যা দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর। মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- অধ্যাপক তাহের হত্যা দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর। মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলার দুই আসামি ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এবং জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। রাত ১০ টা ১ মিনিটে দণ্ড কার্যকর করা হয়।  রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে ৮ জন জল্লাদ এই দণ্ড কার্যকরের দায়িত্ব পালন করেন।
ফাঁসি কার্যকর নিয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর পরই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান গেটে।
সূত্রমতে, এক মঞ্চে এক সঙ্গে একই সময় দুই আসামীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের বাম পাশে ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। ১০টা ১ মিনিটে তাদের দঁড়িতে ঝুলিয়ে দেয়া হয়।
কারাগারের সূত্রমতে, রাত ৯টার দিকে ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি দুই আসামিকে জানানো হয়। এরপর তাদের গোসল করিয়ে খাবারের বিষয়ে শেষ ইচ্ছা আছে কিনা জানতে চাওয়া হয়। পরে কারা মসজিদের ইমাম তাদের তওবা পড়ান। এরপর ১০টার আগেই তাদের ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়।
ফাঁসি কার্যকরের সময় কারাগারের ডিআইজি প্রিজন, সিনিয়র জেল সুপার ও জেলার ছাড়াও জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন, মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৫ জুলাই দুই আসামির পরিবারের সদস্যরা তাদের সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ করেন। জাহাঙ্গীরের পরিবারের ৩৫ সদস্য তার সঙ্গে দেখা করেন। আর মহিউদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে তার পরিবারের তিন সদস্য। এরপর তাদের পরিবারের আর কেউ দেখা করতে পারেনি।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ। একদিন পর ৩ ফেব্রুয়ারি বাসাটির পেছনের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় অধ্যাপক এস তাহের আহমেদের গলিত মরদেহ। ওইদিন রাতে তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহীর মতিহার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অধ্যাপক তাহেরের সহকর্মী সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামি ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলমসহ আটজনকে গ্রেফতার করে।
২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেন। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, অধ্যাপক ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম, তার ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালাম। তবে বিচারে খালাস পান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও জাহাঙ্গীরের বাবা আজিমুদ্দিন মুন্সি।
পরবর্তীতে সাজাপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিল বিভাগ মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের রায় বহাল রাখলেও নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করেন।
সর্বশেষ মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রায় ছয় মাস আগে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন তারা। সে আবেদনও নাকচ করেন রাষ্ট্রপতি। গত ৫ জুলাই সেই চিঠি রাজশাহী কারাগারে পৌঁছায়। এরপর থেকে তাদের ফাঁসি কার্যকর করার প্রস্তুতি শুরু হয়।

আরও পড়ুন:  সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো মোগল আমলের ‘দেওয়ানের পুল’ অক্ষতভাবে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের নেতারা ও প্রবাসীরা।

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn
Scroll to Top