বিলেতের আয়না ডেক্স :- মার্কিন গণমাধ্যম “ব্লুমবার্গ “বাংলাদেশের মেট্রোরেল উপলক্ষে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
মেট্রোরেল সরকারের অনেক ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশে প্রথমবারের মতো যাত্রা শুরু করেছে মেট্রোরেল। রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনের লক্ষ্যে বুধবার এ মেট্রোরেল উদ্বোধন করেছেন তিনি। ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলাচলকারী সাধারণ মানুষ এই মেট্রোরেলের সেবা পাবেন।
বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রভাবশালী গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ। এতে ঢাকায় মেট্রোরেলের প্রয়োজনীয়তাসহ বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, মেট্রোরেল শেখ হাসিনা সরকারের ভাবমূর্তি বাড়াবে।
‘বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শহর পেলো প্রথম মেট্রোরেল’ শিরোনামে ব্লুমবার্গ লিখেছে, ‘বাংলাদেশের রাজধানীর এখন আছে মেট্রোরেলের প্রথম লাইন। জাপানের অর্থায়নে, বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করার লক্ষ্যে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।’
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোর একটি অংশ বুধবার উদ্বোধন করেন, যা লাইন-৬ নামে পরিচিত। এই লাইনটি ঢাকার উত্তর অংশের সঙ্গে মধ্যাংশের সরকারি অফিস ও এবং হাসপাতালগুলোর সংযোগ তৈরি করেছে। পরবর্তীতে এটি শহরের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ দিকের বাণিজ্যিক বিভাগ মতিঝিলে যাবে।’
‘এই প্রকল্পটি ঢাকায় বসবাসরত মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন আনবে। সঙ্গে হাসিনার সরকারের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ভাবমূর্তি বৃদ্ধি করবে। বাংলাদেশে ২০২৪ সালে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। বর্তমানে হাসিনা ও তার দল রিজার্ভ কমে যাওয়া, মুদ্রাস্ফীতি এবং জ্বালানি সংকটের কমে যাবে।
ঢাকাবাসীর বহুল আকাঙ্ক্ষিত মেট্রোরেলের উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এটি বাংলাদেশের উন্নয়নের নতুন মাইলফলক।’
বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করে ব্লমবার্গ লিখেছে, ‘৩০৫ বর্গ কিলোমিটারের শহর ঢাকায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষের বসবাস। ১০ বছর আগে ঢাকায় যানবাহনের গতি ছিল ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার। সেখান থেকে তা কমে হয়েছে ৭ কিলোমিটার। কমতে কমতে এটি ৪ কিলোমিটারে নেমে যেতে পারে। যা হাঁটার চেয়েও ধীরগতি।’
ঢাকার মেট্রোরেল নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্টিন রমার দেওয়া একটি বক্তব্যের কথা উল্লেখ করেছে ব্লুমবার্গ।
মার্টিন রমা মেট্রোরেল নিয়ে বলেছিলেন, ‘ঢাকার মতো শহরের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক উন্নয়ন। আপনি যদি ভারতের বিভিন্ন শহরের দিকে তাকান দেখবেন মানুষের কাজে যাওয়ার যোগাযোগ পথে অনেক পরিবর্তন এসেছে। মেট্রোরেল যোগাযোগের নিরাপদ একটি বাহন। বিশেষ করে নারীদের জন্য। দক্ষিণ এশিয়ায় যা গতানুগতিক নয়।’
তবে রমা বলেন, ‘মেট্রোরেলের কারণে ঢাকার যানজট এ মুহূর্তেই চলে যাবে এমন চিন্তা করাটা বোকামি হবে। কারণ কোনও যোগাযোগ স্থাপনা তৈরির পর রাস্তায় যানবাহন ও মানুষের যে চাপ কমে সেটি নতুন বাহনে আবারও ফিরে আসে।’
এরপর বাংলাদেশে যানজটের ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরে ব্লুমবার্গ লিখেছে, যানজটের কারণে ঢাকায় প্রতিদিন নষ্ট হয় ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা। ফলে প্রতিদিন কয়েক বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়। এছাড়া বিশ্বের বসবাসযোগ্য নয় এমন শহরের তালিকায় ঢাকা যে সপ্তম শহর সেটিও উল্লেখ করেছে এই সংবাদমাধ্যম।
ব্লুমবার্গের প্রকাশিত প্রতিবেদনটির শেষ দিকে জাপান সরকারের অর্থায়ন ও প্রকল্পের খরচ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মাত্র ছয় মাসের মধ্যে পদ্মাসেতু ও মেট্রোর মতো দুটি বড় বড় অবকাঠামো উদ্বোধন করেছেন সেটিও তুলে ধরেছে। সূত্র ঃব্লুমবার্গ