রেইনবো নেশনের নামে রাজাকার, জঙ্গি, জামায়াত, যুদ্ধাপরাধীদের ঐক্যের দলিল — ১৪ দলীয় জোট।

বিলেতের আয়না ডেক্স :- রেইনবো নেশনের নামে রাজাকার, জঙ্গি, জামায়াত, যুদ্ধাপরাধীদের ঐক্যের দলিল — ১৪ দলীয় জোট।
বিএনপি ঘোষিত ২৭ দফার ‘রেইনবো নেশন’ ও ‘ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন কমিশনের লক্ষ্য একই বলে দাবি করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। দালাল আইন বাতিল করে জিয়াউর রহমানের মতো যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতি ও সমাজে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিল। তাদের রেইনবো নেশনের অর্থই হচ্ছে পরাজিত শক্তিকে ও খুনি অপরাধীদের আরেক দফা রাষ্ট্র ও সমাজের স্বীকৃতিদান বলে মনে করে ক্ষমতাসীন জোট।
২১ ডিসেম্বর (বুধবার) বিকেলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু জোটের পক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। তার নিউ ইস্কাটনের বাসায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
১৪ দল কখনই একাত্তর ও পঁচাত্তরের খুনিদের সঙ্গে ‘রিকনসিলিয়েশনের নামে ‘ রেইনবো নেশ ‘ নামের এই সুচতুর পদক্ষেপ গ্রহণ করে না বলে দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘এই দুটি প্রশ্ন বহু আগেই মিটমাট হয়ে গেছে। আবার নতুন করে করার কোন প্রয়োজন নাই।’
বিএনপির শাসনামলেরই অভিজ্ঞতা দেশবাসীর আছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্র ও জনগণের বিরুদ্ধে বিএনপির এই রাজনীতি জনগণ অতীতে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এবারও করবে। তাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলনে শরিক হয়েছে তারাও আমাদের অজানা নয়। খুবই ক্ষুদ্র স্বার্থে এক হয়েছেন। দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ এর থেকে দূরে থাকবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
বিএনপি বর্তমান সরকারের মৌলিক সংশোধনের কথা বলে তারা অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখলকে নিষ্কণ্টক করতে চায়। জোটগতভাবে মাঠে কর্মসূচি আমরা আমাদের রাজনৈতিক ধারা নিয়ে মাঠে থাকব। এই ধারার বিপরীত অবস্থানে বিরোধিতা করব। তারা এর আগে ১০ দফা, ১৪ দফাসহ বিভিন্ন ধরনের দফা দিয়েছিল, এগুলো নতুন কিছু না। তাদের এ আন্দোলন নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নেই। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চেতনায় বিশ্বাসী বা প্রগতিশীল হলে জামায়াতের সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করত না। যারা যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয় তারা প্রগতির ধারার মধ্যে আছে বলে মনে করি না।’
রাষ্ট্র সংস্কার ‘রেইনবো নেশনে’র নামে রাজাকার, জঙ্গি, জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীদের ঐক্যের কালো দলিল বলে মনে করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, ‘কালো দলিল যারা সমর্থন করছে তারা আর যাই হোক বাম বা প্রগতিশীল ঘরানার লোক হতে পারে না। তারা বিচ্যুত। ২৭ দফা ও ১০ দফা কার্যত বাহাত্তরের সংবিধানকে বানচাল করার সুকৌশল প্রস্তাব। যারা এটা সমর্থন করে তারা গণতান্ত্রিকও না, প্রগতিশীলও না।’
জামায়াত, জঙ্গি, যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে যতোদিন রাজনৈতিক পার্টনারশিপ থাকবে তত দিন পর্যন্ত ২৭ কেন, ২৭০ দফা দিলেও আমল যোগ্য নয় বলে দাবি করেন ইনু। এখানে রাষ্ট্র মেরামতের নামে কার্যত বাংলাদেশে রাজাকারদের আমদানি করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। সেই আন্দোলনে যদি কোন রাজনৈতিক নেতা, তিনি মুক্তিযোদ্ধা হোন কিংবা কোন বামপন্থী হোন। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির কুলাঙ্গার ঘটে। তার সঙ্গে লেনদেন হতে পারে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, ১৪ দল মহানগর সমন্বয়ক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া৷ বীর বিক্রম আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃনাল কান্তি দাস, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারী, জাতীয় পার্টি জেপির প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহম্মেদ মুক্তা, গন আজাদী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এস কে সিকদার, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।

আরও পড়ুন:  জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৩০ বিলিয়ন ডলার - প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn
Scroll to Top