বিএনপির ২৭ দফা রাজনৈতিক সংস্কারের চমকবাজীর আড়ালে যুদ্ধাপরাধী, খুনী, সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসীদের হালাল ও তাদের সাথে রাজনৈতিক অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠার কালো দলিল-জাসদ

বিলেতের আয়না ডেক্স :- বিএনপির ২৭ দফা রাজনৈতিক সংস্কারের চমকবাজীর আড়ালে যুদ্ধাপরাধী, খুনী, সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসীদের হালাল ও তাদের সাথে রাজনৈতিক অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠার কালো দলিল-জাসদ

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার আজ ২০ ডিসেম্বর ‘২২ এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিএনপির ২৭ দফা রাজনৈতিক সংস্কারের চমকবাজীর আড়ালে যুদ্ধাপরাধী, খুনী, সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদীদের হালাল ও তাদের সাথে রাজনৈতিক অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠার কালো দলিল।

জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, বিএনপির ১০ দফার পর ২৭ দফায় আবার প্রমাণ হলো যে জামাতকে সাথে নিয়ে ক্ষমতা পুনর্দখলই করাই বিএনপির মূল উদ্দেশ্য।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, ১৫দশ সংশোধনীর মধ্য দিয়েই সামরিক শাসক জিয়া কর্তৃক সংবিধান থেকে নির্বাসিত স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং রাষ্ট্রীয় মূল চার নীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ পুনঃস্থাপিত হয়েছে। বিএনপির ২৭ দফায় সংবিধান সংস্কারের কথার আড়ালে এই ১৫দশ সংশোধনী বাতিল করে মহান মুক্তিযুদ্ধ, অতীতের ঐতিহাসিক গণআন্দোলনসমূহ, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে মীমাংসিত বিষয়কে অমীমাংসিত করার হুমকি দিয়েছে।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেছেন, বিএনপি ২৭ দফায় একইমুখে ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ ও ‘রেইনবো ন্যাশন’ এর কথা বলা চরম দ্বৈততা ও দ্বিচারিতার পরিচায়ক। সামরিক শাসক জিয়া কুখ্যাত দ্বি-জাতিতত্ত্বভিত্তিক বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ চাপিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ধর্মের নামে জাতিকে বিভক্ত করার অপপ্রয়াস পেয়েছিল। বিএনপি ‘ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন’ কথার আড়ালে ১৯৭১ সালে জাতির উপর সংঘটিত ইতিহাসের বর্বরতম যুদ্ধাপরাধ, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড, ৩ নভেম্বর চার জাতীয় নেতা হত্যাকান্ড, কর্নেল তাহের বীরউত্তমসহ শত শত মুক্তিযোদ্ধা অফিসার-সৈনিক হত্যাকান্ড, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাকারীদের অপরাধ হালাল করা এবং তাদের সাথে রাজনৈতিক অংশীদারত্ব গড়ে তোলার বিএনপির রাজনৈতিক অভিলাষই ফুটে উঠেছে।

আরও পড়ুন:  আগামীকাল প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে।

জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও অতীতের ঐতিহাসিক গণআন্দোলন মীমাংসিত বিষয়সমূহ, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসসহ জাতীয় ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি, সংবিধানের চার মূলনীতি অস্বীকার করা, সংবিধান-রাষ্ট্র-সমাজে সাম্প্রদায়িকতাসহ পাকিস্তানপন্থা চাপিয়ে দেয়া, যুদ্ধাপরাধী-খুনি-অপিরাধীদের হালাল করার অপপ্রয়াসই বাংলাদেশের রাজনীতিতে মহাবিভক্তি তৈরি করেছে। বিএনপি এসব বিষয়ে একটি কথাও বলেনি। বিএনপি ২৭ দফায় ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার কথা বললেও রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসাবে ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়ে নিরব থেকেছে।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, ২৩ বছর বেশি ক্ষমতায় থাকলেও হত্যা, ক্যু, সামরিক শাসন ও অবৈধ ক্ষমতা দখল, সাম্প্রদায়িকতা, রাজাকার-আলবদর-যুদ্ধাপরাধীদের হালাল করা ছাড়া সংবিধানের গণতান্ত্রিক সংস্কারের কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। এমনকি বিরোধী দলে থাকা অবস্থাতেই সংবিধানে গণতান্ত্রিক সংস্কারের কোনো প্রস্তাবও দেয়নি। ২৭ দফাতে সংবিধানের ৭০ ধারার আংশিক পরিবর্তন, উচ্চকক্ষ গঠন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের কথা ভাসাভাসাভাবে বললেও রাষ্ট্র ও শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তণের কোনই সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিতে পারেনি। বিএনপি ২৭ দফায় কেবলমাত্র দেড় দশক অর্থ্যাৎ ২০০৭ সাল পরবর্তীকালের দূর্নীতি, লুট, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিচার আচারের কথা বলে অতীতের সকল অন্যায় অপরাধকে আড়াল করতে চেয়েছে।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, বিএনপি ২৭ দফায় লাইনে লাইনে দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে দিয়ে অস্বাভাবিক অসাংবিধানিক সরকার এনে ঘোলা জলে যুদ্ধাপরাধী জামাত, সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ক্ষমতা পুনর্দখলের অভিলাষের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn
Scroll to Top