বিলেতের আয়না ডেক্স :- নিজস্ব প্রতিবেদক
৯৩ ব্যাচ চট্টগ্রাম বন্ধুদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান উৎসব ২০২২
বন্ধু তোরা কেমন আছিস এই স্লোগানে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ৯৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীর জন্য ৯৩ ব্যাচ চট্টগ্রাম বন্ধুরা আয়োজন করল চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান উৎসব ২০২২।
১৭ ডিসেম্বর বেলা ১১ টা থেকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী শিশু পার্কের লেক ভিউ রেষ্টুরেন্টে ৯৩ ব্যাচ চট্টগ্রাম বন্ধুদের মেজবান উৎসবে মিলত হতে থাকে সকল বন্ধুরা । দীর্ঘদিন পর বন্ধুদের পেয়ে উচ্ছ্বাসে চোখ মুখ যেন চকচক করছিল বন্ধুদের। অনেকেই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে।
সকালে হালকা নাস্তা সাথে কপিতে চুমুক দেওয়ার পর পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
এসএসসি ১৯৯৩ ব্যাচের চট্টগ্রামের বন্ধু মুন্না, হাসান, রেজাউল, নাছির, তৈয়ব, কাকন, জিল্লু, কুদ্দুস, জসিম, পিয়াল, ফারুখের আয়োজনে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ৯৩ ব্যাচের বন্ধুদের সবার উপস্থিতি জানান দিচ্ছিল আজ যেন বাঁধ ভাঙ্গা জোয়াড়ে উপচে পড়বে পুরো মিলনায়তন। হলোতাই ২৯ বছরের সেই পুরোনো বন্ধুদের সাথে ফের দেখাতে উচ্ছ্বাসটাও ছিল বাঁধভাঙা। দেখা মাত্রই আলিঙ্গন।
মুঠোফোনের সেলফিতে বন্ধুদের ফ্রেমবন্দী রাখতে ভুললেন না কেউ-ই। দীর্ঘদিন যোগাযোগ না থাকা বন্ধুরা একে অপরকে পেয়ে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। খোঁজ নেন পরিবার-পরিজনের। অনেকের চেহারা চেনা চেনা লাগলেও পরিচয় জেনেই নিশ্চিত হই তিনিই সেই ব্যাচের বন্ধু। এভাবে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী শিশু পার্কের লেক ভিউ রেষ্টুরেন্ট যেন এক মিলনমেলায় পরিণত হয়।
অনুষ্ঠানের মাঝামাঝি সময়ে চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য এম. এ. লতিফ এমপি’র উপস্থিতি বন্ধুদের উচ্ছাসের মাত্রা পায় পরিপূর্ণতায়। এমপি মহোদয়ের মর্মস্পর্শী ক্ষণিকের বক্তব্য সকল বন্ধুদের হৃদয়ে দোলা দেয়।
এরিসাথে শাহীন ট্রেডার্স এর স্বত্তাধিকারী রফিকুল ইসলাম ও বিন সালমান গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান মো. ফখরুদ্দিন স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পুরো আয়োজনের পালে হাওয়া লাগে।
পুরো অনুষ্টান জুড়ে চলে আড্ডা, খুনসুটি, গল্প। বেলা গড়িয়ে দুপুর হতে খাবার টেবিলে সাজানো চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানী গরুর মাংশ, চনার ডাল ও নলার ঝোলের পসরা বন্ধুদের মন ভরিয়ে দেয়। মেজবানীর খাবারে অনেকেই অভিষিক্ত হয়ে আয়োজকদের ধন্যবাদ দেন। মেজবানী আয়োজনেও ছিল না কোন কৃপণতা।
মেজবানীর পরপর মিলন মেলার বন্ধুরা ঝাঁপিয়ে তরে তরে বাহারি ঢঙ্গে সাজানো মিষ্টান্ন ও নানা পদের মসলা সম্বেলিত মহেশ খালীর পানের দিকে। অনেক বন্ধু ঠোঁটও রাঙ্গিয়েছে মহেশ খালী পানে ।
খাওয়ার পর্ব চুকিয়ে নতুন ধমে শুরু হয় আড্ডা, খুনসুটি চলে নাচ, গান, পুরষ্কার বিতরনী, মনোজ্ঞ সাংস্কুতিক অনুষ্ঠান। সব শেষে ছিল র্যাফেল ড্র।
র্যাফেল ড্রতে দিনের উৎসব শেষ হলেও এই শেষ যেন আরেক শুরুর বার্তা দিয়ে যায়। দিনভর আড্ডায় অনেক হারানো বন্ধুর খোঁজ মিলেছে। মনের কথা বলেছেন প্রিয় বন্ধুকে। নিয়েছেন ফোন নম্বর। আর ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও যুক্ত হয়েছেন পরস্পর। অনেকে নতুন এই সংযোগ যুক্ত হতে খুলেছেন ফেসবুক আর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। একদিনের মিলনমেলা শেষ হলেও এই যোগাযোগ রয়ে যাবে সারাজীবন। এবারের উৎসব শুধু এক দিনের গণ্ডিতে আবদ্ধ নয়। এ যেন নতুন যাত্রার সূচনার শুভক্ষণ।