বিলেতের আয়না ডেক্স :- সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় – আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শক্তিশালী গনতন্ত্র চাই, গনতন্ত্র এক চাকার সাইকেল নয় ।সরকারের গঠনমূলক সমালোচনার পাশাপাশি উন্নয়ন, অর্জন এবং বিশ্ব সংস্থাগুলোর প্রশংসাও যেন গণমাধ্যমে গুরুত্ব দিয়ে উঠে আসে সে আহ্বান জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা চাই পূর্ণিমার আলোয় যেটা ঝলমল করছে সেটাকে আপনারা আলো হিসেবেই দেখবেন। অমাবস্যার অন্ধকারকে আপনি যদি আলো ভাবেন সেটাতো আলো নয়। আমরা এ কথাটাই বলছি।
বুধবার রাতে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী হলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যেটুকু আমাদের প্রাপ্য সেটুকু সম্প্রচার চাই। আমরা বেশি চাই না। আমরা এটা বলি না যে বিরোধী দলের কর্মকাণ্ড সম্প্রচার করবেন না। আমরা শক্তিশালী বিরোধী দল চাই। কারণ গণতন্ত্র তো একচাকার সাইকেল না।
বৈশ্বিক সংকটে মানুষকে ভালো রাখতে শেখ হাসিনার সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্ব সংকটে বাংলাদেশের যে বাস্তবতা, তা মেনে চলছেন প্রধানমন্ত্রী। আমাদের আগে মানুষকে বাঁচাতে হবে। মানুষ কষ্টে আছে। গরীব মানুষ, অল্পবিত্ত, স্বল্প আয়ের মানুষ সত্যি কষ্টে আছে। এই বিক্ষুদ্ধ মানুষগুলো ধৈর্য্য ধরে আছে। তারা যে কোনো দলের জনসমাগম, ঢল, স্রোত; এসবের সঙ্গে মিশে গেছে তা নয়। ব্রিটেনে কস্ট অব লিভিং এতো বেড়ে গেছে যে ৪০ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ব্রিটেনের জনগণ অ্যাকশন চায়, তারা সরকারের পতন চায়নি। যুক্তরাষ্ট্রে একই অবস্থা। সেখানে বাইডেনের পদত্যাগ তো কেউ দাবি করে না। একটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে আমরা তার মূল্য দিচ্ছি। আমাদের অবস্থান যুদ্ধের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে। আমরা এর ভুক্তভোগী।
বিএনপির দলেই যেখানে গণতন্ত্র নেই, সেখানে দলটি দেশে কীভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে সে প্রশ্ন রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, আমাদের নিয়মিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক, প্রতি মাসে সম্পাদকমণ্ডলীর সভা হয়। ফখরুল সাহেবের কি মনে আছে তাদের কবে কাউন্সিল হয়েছে? এর মধ্যে আমাদের দুটো হয়ে গেছে। তাকে একটু জিজ্ঞেসা করুন, সম্মেলনটা কবে হয়েছে? কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভা কবে হয়েছে।
বিএনপির কোনো আন্দোলনে বাধা দেয়া হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি আন্দোলন করুক। শেখ হাসিনা বলে দিয়েছেন, আমরা কাউন্টার করব না। এখন পর্যন্ত কোনোটার কাউন্টার করি নি। আওয়ামী লীগ বিভিন্ন সম্মেলন করছে। আমরা কাউন্টার প্রোগ্রাম করছি না। আমরা জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে আমাদের উপজেলা পর্যন্ত কাউন্সিল করছি। আমাদের ভুল-ত্রুটি ধরতে পারেন, তবে এদেশে আমরাই একমাত্র দল যারা গণতন্ত্রের চর্চা করি। আমাদের ওয়ার্ড থেকে জেলায় নিয়মিত সম্মেলন হচ্ছে।
এ সময় সরকারে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বিএনপি সরকারের শাসনামলে জঙ্গিবাদের উত্থানের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
এ সময় ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, কৌশলগত কারণে অনেক ধরনের ঐক্য আঁতাত এদেশে হয়। আমাদের বিরুদ্ধে একটা জোট হচ্ছে। আমাদেরও এখানে একটা জোট করতে হবে। এখন আপনি যদি বলেন একেবারে ডিভাইসি হয়ে যাও, পোলারাইজড হয়ে যাও; তাহলে তো চলতে পারবো না। তাহলে ৯৬ তে আমরা জয়ী হতাম না।
সভায় স্বাগত বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, গণমাধ্যম সমাজকে সঠিক চিন্তা করতে সহায়তা করে, গণমাধ্যম সমাজকে সঠিক খাতে প্রবাহিত করতে পারে। আবার গণমাধ্যম যদি চেষ্টা করে, সমাজে ভুল বার্তাও দিতে পারে। পৃথিবীর কোনো সরকার দাবি করতে পারবে না শতভাগ নির্ভুল কাজ করেছে অথবা করবে। আমাদেরও ভুল ত্রুটি আছে। সেই ভুল ত্রুটিগুলোকে যদি অনেক বড় করে দেখানো হয়, অর্জনগুলোকে যদি ছোট করে দেখানো হয়; তাহলে সমাজে সঠিক চিত্র প্রস্ফুটিত হয় না। আমরা গণমাধ্যমের সহায়তা চাই। কারণ গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ব।
মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সম্পাদক, নির্বাহী সম্পাদক, সাংবাদিক নেতা ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।