দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করছেন ধনীরা – সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

বিলেতের আয়না ডেক্স :- দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করছেন ধনীরা – সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

আ ফ ম মাহবুবুল হকের স্মরণসভায় ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বিশিষ্ট লেখক, ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, দেশ টিকে আছে মেহনতি মানুষের কারণে। অতীতে ব্রিটিশ ও পাকিস্তানিরা এ দেশের ধনসম্পদ লুট করেছে। আর এখন দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করছেন ধনীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে মাহবুবুল হকের স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাসদের আহ্বায়ক কমরেড আ ফ ম মাহবুবুল হকের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে ওই স্মরণসভার আয়োজন করেছিল আ ফ ম মাহবুবুল হক স্মৃতি সংসদ।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, দেশ টিকে আছে মেহনতি মানুষের কারণে। যেসব শ্রমিক বিদেশের মাটিতে কাজ করেন, যাঁরা গার্মেন্টস শ্রমিক এবং দিনমজুরেরাই এই দেশকে টিকিয়ে রেখেছেন। আর ধনীরা কানাডাসহ উন্নত অনেক দেশে সম্পদ পাচার করে দিচ্ছেন।বেগম পাড়া তৈরী করেছে।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে অনেক দল, কিন্তু ধারা দুটি। একটি বুর্জোয়া, অন্যটি সমাজতান্ত্রিক। বুর্জোয়ার ধারার রাজনীতির ভুক্তভোগী আমরা। দেশ স্বাধীন হলেও ব্রিটিশ বা পাকিস্তান থেকে ভিন্ন কিছু হয়নি। স্বাধীন হয়েছি ৫০ বছর, কিন্তু উপনিবেশ মানসিকতা থেকে এখনো মুক্তি মেলেনি। এখন আমরা ধনীদের উপনিবেশ।
লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে উল্লেখ করে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘সমাজতান্ত্রিকদের কিছু করার আগেই পরাজিত হয়ে যাওয়ার মনোভাব আছে। মাহবুবুলের (কমরেড মাহবুবুল হক) মনে সেটি ছিল না। তাঁর সময়ে তাঁর সামনে সমাজতান্ত্রিকদের দৃষ্টান্ত খুব বেশি ছিল না। তবে তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, তিনি জয়ী হবেন। বর্তমানে বামপন্থীরা জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারে না৷ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে। মানুষকে পাশে আনতে পারে না।’
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কমরেড আ ফ ম মাহবুবুল হকের সময়ে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনে বেশি মানুষ ছিল না। তখন তিনি একাই আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। অনেক নির্যাতন আর বাধার পরেও মাথা নত করেনি। তবে এত বছরে বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং বাম রাজনীতি যেভাবে যতটুকু অগ্রসর হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। তাঁর কোন দিকে যেতে হবে, সেই পথ স্পষ্ট ছিল। কখনো বিভ্রান্ত হয়নি, বিচ্যুতি হননি।

আরও পড়ুন:  প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ চোখের চিকিৎসাসহ নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা জন্য জার্মানী ও বৃটেনে গেলেন।

কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি শাহ আলম বলেন, এখন অনেক বামের সৃষ্টি হয়েছে। বামপন্থীরা ভাগ হতে হতে প্রান্তিক জায়গায় চলে গেছে। এগুলো আমাদের ভুল। আমরা অনেক ভুল করেছি, তাই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দেশে অপশাসনের কর্তৃত্ব চলছে। নব্য উদার অর্থনীতির চলছে। দেশের পাঁচ ভাগ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা আর বাকি ৯৫ ভাগের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন দুই রকম।

মাহবুবুল হকের স্মৃতিচারণা করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, তরুণদের, সাধারণ মানুষের সব আবেগ ছিল তাঁকে ঘিরে। ওই আবেগ ছিল বুদ্বুদের মতো। তাঁর পাশে থাকলে কেউ আর আমাকে দেখত না। আজকের বাংলাদেশে যদি তিনি থাকতেন, তাহলে হয়তো অন্য কিছু করতে পারতেন।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, মাহবুবুল হক সব সময়ই লড়াইয়ের অগ্রে ছিলেন। কখনো পিছে ছিলেন না।
আলোচনায় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান । বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুস সাত্তার প্রমুখ আলোচনা করেন।

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn
Scroll to Top