অনাবাদি জমি খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর।

বিলেতের আয়না ডেক্স :-অনাবাদি জমি খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর।
দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনাবাদি জমি খুঁজে বের করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সচিব যেন ডিসিদের সহায়তা নিয়ে এসব অনাবাদি জমি খুঁজে বের করে আবাদযোগ্য করে গড়ে তোলেন সেই নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এসব নির্দেশনা তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, উৎপাদন বাড়াতে হবে। এক ইঞ্চি জমি ফেলে রাখা যাবে না। জমিতে নানা ধরনের চাষাবাদ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী কেবিনেট সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন ডিসিরা যেন অনাবাদি জমি খুঁজে বের করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়েশি-বিলাসী প্রকল্প নেওয়া যাবে না। তবে ছোট গ্রামীণ প্রকল্প বা কল্যাণমুখী প্রকল্পে আপস করা যাবে না। বড় বড় প্রকল্প নেওয়া যাবে না। বড় প্রকল্প গ্রহণে ফিসিজিবিলিটি স্টাডি গভীরভাবে দেখতে হবে। যে কৌশলে কমিশন এক বছর যাবৎ কাজ করছে এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। দুনিয়াব্যাপী মন্দা চলছে, অপচয় কমানোর পাশাপাশি মিতব্যয়ী হতে হবে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
একনেকে চার হাজার কোটি টাকার সাত প্রকল্প অনুমোদন : ৩ হাজার ৯৮১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয় সংবলিত সাতটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ৩৯২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, বৈদেশিক অর্থায়ন ৩২২ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৬৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী এবং একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সভায় অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সন্দ্বীপ, কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপ ও টেকনাফ (সাবরাং ও জালিয়ার দ্বীপ) অংশের জেটিসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় অঞ্চল-২ ও অঞ্চল-৪ এর ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক অবকাঠামোসহ অঞ্চল-২ ও ৪ এর সার্ভিস প্যাসেজসমূহের উন্নয়ন’ প্রকল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালের ‘বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার বৈদ্যুতিক-যান্ত্রিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ জন্যান্য উন্নয়ন কাজ’ প্রকল্প।
সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প পাস হয়েছে। সেগুলো হলো ‘বারৈয়ারহাট হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প এবং ‘নবীনগর-আশুগঞ্জ সড়ক উন্নয়ন (জেড-২০৩১) (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প। একই সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন’ প্রকল্প এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।
এছাড়াও ব্যয় ঠিক রেখে মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একটি ‘খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি এবং ‘বরিশাল মেট্রোপলিটন ও খুলনা জেলা পুলিশ লাইন নির্মাণ (আন্তঃখাত সমন্বয়কৃত)’ প্রকল্প; স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্প।
পরিকল্পনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভায় অংশ নেন। সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজির মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েল সিনিয়র সচিব ও সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:  ১৮ দিন সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছেন।

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn
Scroll to Top