বিলেতের আয়না ডেক্স :- ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যেসব অভিবাসী বৃটেনে গিয়ে আশ্রয় প্রার্থনা করেন, তা থামানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন বৃটেনের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যান।
এক্ষেত্রে নতুন করে একটি নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন তিনি। ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে বৃটেনে প্রবেশের পরই এসব অভিবাসী আশ্রয় প্রার্থনা করেন। এরই মধ্যে ছোট ছোট বোটে করে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ সেখানে প্রবেশ করেছেন। তবে যেসব অভিবাসী বৃটেনের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবেন তাদেরকে প্রবেশের অনুমতি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেবেন তিনি। যারা বেআইনিভাবে বৃটেনে প্রবেশ করেন এর মাধ্যমে তাদের আইন লঙ্ঘনের ইতি ঘটানোর প্রত্যয় ঘোষণা করেন তিনি। মঙ্গলবার কনজার্ভেটিভ পার্টির কর্মীদের কনফারেন্সে বক্তব্যে এসব প্রতিশ্রুতি দেন সুয়েলা ব্রেভারম্যান। যারা বৃটেনে বেআইনিভাবে প্রবেশ করবে তাদেরকে বিচারের আওতায় নেয়ার কথা বলেন তিনি। লন্ডনের টাইমস পত্রিকার মতে, বেআইনি অভিবাসন বিষয়ে একটি বিল প্রস্তাব করার কথা রয়েছে সুয়েলা ব্রেভারম্যানের। এতে বলা হয়েছে, এই বিলে বেআইনিভাবে বৃটেনে কেউ প্রবেশ করতে চাইলে সেক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হবে।
বিশেষ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে বৃটেনে যান এবং আশ্রয় প্রার্থনা করেন তাদেরকে থামাতে চান তিনি।
সোমবার সরকার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এ বছর এরই মধ্যে ছোট ছোট বোটে করে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছে কমপক্ষে ৩৩ হাজার অভিবাসী। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ডাটায় দেখা যাচ্ছে, ২০২২ সালে বিপজ্জনকভাবে ২১ মাইল চওড়া ডোভার প্রণালী পাড়ি দিয়েছে কমপক্ষে ৩৩ হাজার ১ জন। এর মধ্যে শুধু সেপ্টেম্বরে গিয়েছে মোট ৭৯৬১ জন অভিবাসী। সোমবার আরও ৪০০ মানুষ ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করেছে। ফলে এসব সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
বর্ডার ফোর্সের কমপক্ষে দুটি যান ডোভার, কেন্টে মঙ্গলবার সকালের শুরুতে কয়েক ডজন অভিবাসীকে ঘেরাও করেছে। ওই অভিবাসীদের মধ্যে আছে টিনেজাররা। কড়া ঠাণ্ডায় তাদের গায়ে শুধু কম্বল জড়ানো। তারা সাবেক একটি জেটফয়েল টার্মিনালের ডকসাইটে লুকিয়ে ছিল, যাতে কেউ তাদের দেখতে না পায়।
অন্যদিকে সরকার আশ্রয়প্রার্থীদের রোয়ান্ডা পাঠিয়ে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে তাদেরকে দেয়া হচ্ছে ওয়ান-ওয়ে ট্রিপ। অর্থাৎ তাদের ফেরার কোনো সুযোগ রাখা হচ্ছে না। কিন্তু সরকারি সেই সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে মিসেস সুয়েলা ব্রেভারম্যান কি করেন তা দেখার। তিনি হয়তো এটা নিশ্চিত করবেন যে, বৃটেনের বেআইনি অভিবাসন বিষয়ক নীতিকে আধুনিক দাসত্বের আইন দ্বারা, মানবাধিকারের আইন দ্বারা অথবা ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস দ্বারা পথচ্যুত করা যাবে না। বার্মিংহামের কনফারেন্সে সুয়েলা ব্রেভারম্যান বলেন, এটা ঠিক যে, যাদেরকে আমাদের প্রকৃতপক্ষেই প্রয়োজন, তাদের বিষয়ে আমাদেরকে বন্ধুত্বের হাত প্রসারিত করতে হবে। বৃটেন সব সময়ই তা করে এসেছে। এটাই করেছিলেন আমার পিতা। তিনি ১৯৬০ এর দশকে একজন যুবক হিসেবে কেনিয়া থেকে বৃটেনে এসেছিলেন। কিন্তু এখন আমরা সিরিয়া, হংকং, আফগানিস্তান এবং ইউক্রেন থেকে হাজার হাজার মানুষকে স্বাগত জানাচ্ছি।