বিলেতের আয়না ডেক্স :- বকেয়া পাওনার দাবিতে কলকাতার রাস্তায় পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতার অবস্থান।
১০০ দিনের কজের রুপি, সড়ক যোজনা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, গ্রাম উন্নয়ন, জিএসটি, বিপর্যয় মোকাবিলাসহ বিভিন্ন প্রকল্পবাবদ কেন্দ্রের কাছ থেকে বকেয়া অর্থের দাবিতে ফের একবার ধরনায় (অবস্থান) বসলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
শুক্রবার দুপুরে কলকাতার রেড রোডের ধারে দেশটির সংবিধান প্রণেতা ড. বি আর আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসেন তিনি। আগামী ৪৮ ঘণ্টা ধরে চলবে তার এই ধরনা।
এদিন দুপুর দেড়টা নাগাদ ধরনা মঞ্চে পৌঁছে যান মমতা।
প্রথমে আম্বেদকরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন, এরপর ধরনা মঞ্চে এসে বসেন। মমতার পরনে ছিল সাদা-কালো শাড়ি, কালো রঙের শাল। পেছনে ছিল বাংলা হিন্দি এবং ইংরেজিতে লেখা বিভিন্ন পোস্টার, প্ল্যাকার্ড।
মমতা ছাড়াও এই ধরনা মঞ্চে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়, নগর উন্নয়ন ফিরহাদ হাকিম, যুব কল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, নারী ও শিশু কল্যাণ উন্নয়নমন্ত্রী শশী পাঁজা, ফায়ার সার্ভিসমন্ত্রী সুজিত বসু, অভিনেতা ও তৃণমূলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বকশিসহ দলের বিধায়ক, ব্লক সভাপতি, জেলা সভাধিপতিরা ছিলেন।
ধরনা মঞ্চে মমতার সাথে যারা ছিলেন তাদের প্রায় প্রত্যেকের পরনেও ছিল কালো পোশাক।
গতকাল বৃহস্পতিবারই জেলা সফরে গিয়ে মমতা ঘোষণা দেন, ‘১০০ দিনের কাজে যারা বকেয়া অর্থ পায়নি, যারা ঘর পায়নি তাদের জন্য শুক্রবার থেকে আমি নিজে ৪৮ ঘণ্টা ধারনায় বসব। তারপর আমাদের দলের বিভিন্ন শাখা এই কর্মসূচিটা চালিয়ে নিয়ে যাবে। আপনারা প্রতিটি জেলায়, বুথে, ব্লকে এটা করবেন।
আজ ধরনা মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে ১০০ দিনের কাজবাবদ বকেয়া অর্থ দেননি। ফলে ১০০ দিনের কাজ এখন বন্ধ। পশ্চিমবঙ্গ একমাত্র রাজ্য যাদের আপনারা টাকা দেননি। বাংলা কি দোষ করেছে? ২১ লাখ শ্রমিক কাজ করেছে, তাদের টাকা গত দু’বছর ধরে কেন দেওয়া হয়নি? এটা সংবিধানের বাধ্যবাধকতা। এর জন্য জেলে যাওয়া উচিত।
গ্রামীণ রাস্তা বন্ধ, রাজ্য সরকারের অর্থ দিয়ে সেই রাস্তা করা হচ্ছে। বাংলার আবাসন বন্ধ, সমস্ত কাগজপত্র দেওয়া সত্বেও ১১ লাখ পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়নি। ’
মমতার অভিযোগ ‘নতুন কিছু নয়, দীর্ঘদিন ধরে এই বাংলার ওপর বঞ্চনা আর লাঞ্ছনা চলছে। বাংলাকে দিল্লি বড্ড বেশি হিংসা করে। বাংলার সব রুপি বন্ধ করে দিচ্ছে। বাজেটেও বাংলার জন্য কিছু রাখা হয়নি। ’
ধরনা মঞ্চের পেছনে দুটি অস্থায়ী তাবু করা হয়েছে। তার একটিতে মমতা সাংগঠনিক কাজ করবেন, অন্যটিতে হবে প্রশাসনিক কাজ। এদিন মমতা নিজেও ঘোষণা দেন, ‘আমি কয়েকদিন জেলা সফরে ছিলাম। অনেক ফাইল জমে রয়েছে। তাই আমি মাঝে মাঝে পেছনে গিয়ে ফাইলে সই করে আসব। সেই সাথে দলের কিছু সাংগঠনিক কাজও রয়েছে। ’
কেন্দ্রীয় বঞ্চনের দাবিতে এবং ন্যায্য পাওনা অর্থের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেসকে। এর আগে গত বছরের মার্চ মাসেও বি আর আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসেছিলেন দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি।
এদিকে রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্ন সূত্রে খবর, এই দিন দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী যখন ধরনায় বসেন ঠিক তখনই কেন্দ্রের জলজীবন মিশন প্রকল্পের দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ ৯৫১ কোটি ৫৭ লাখ ২৫ হাজার রুপি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এদিনই কেন্দ্রের জলশক্তি মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয় নবান্নকে।
মমতার ধরনা নিয়ে তাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি সিপিআইএম। দলের সাবেক সাংসদ সুজন চক্রবর্তীর প্রশ্ন, ‘কেন রাস্তায় বসে সরাসরি সংঘাতের পথে যেতে হচ্ছে মমতাকে? এইভাবে জেদাজেদি করে কি বকেয়া অর্থ আদায় করা সম্ভব? সরকারি স্তরে খরচ হওয়া রুপির হিসাব বুঝিয়ে দিতে ক্ষতি কি?’
সুজনের অভিমত, ‘বকেয়া অর্থ আদায়ের জন্য প্রশাসনিক নিয়ম না মেনে রাজনৈতিক লড়াই করলে আখেরে রাজ্য।
বকেয়া পাওনার দাবিতে কলকাতার রাস্তায় পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতার অবস্থান।
Share:
Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn
পপুলার
আওয়ামী লীগ জনগণকে দিতে আসে, নিতে নয়।
এপ্রিল ১১, ২০২৪
ঈদের দিন হামাস নেতার ছেলে ও নাতি নিহত ।
এপ্রিল ১১, ২০২৪